দ্বিতীয় বাণী : আমি তোমাকে সত্যি বলছি, তুমি আজই আমার সঙ্গে পরম দেশে উপস্থিত হবে। The Second word: Truly I tell you, today you will be with me in paradise.

ads20

    দ্বিতীয় বাণী - “আমি তোমাকে সত্যি বলছি, তুমি আজই আমার সঙ্গে পরম দেশে উপস্থিত হবে।”

    লূক ২৩ : ৩৯-৪৩

    ক্রুশবিদ্ধ যীশুর মুখ থেকে প্রথমে ক্ষমার বাণী উচ্চারিত হওয়ার পর এখন তীর মুখ থেকে আমরা শুনি অনুতপ্ত পাপীর প্রতি আশ্বাসবাণী। প্রতু যীশু পাপকে ঘৃণা করেন, পাপীকে নয়। পাপীদের প্রতি তিনি সর্বদাই মমতাময় ও সহানুভূতিশীল । সমাজ
    যাদের ঘৃণা করে, অবহেলা করে সেই পক্ষাঘাতী, কুষ্ঠরোগী, করগ্রাহী, পথের অন্ধ ভিখারী - সবাই তীর বন্ধু। করথাহী সক্কেয়কে তিনি আহ্বান করেছেন, পাপিষ্ঠা শমরীয়া নারীর কাছে তিনি পরিত্রাণের কথা বলেছেন। দীনহীন পাপীকে তিনি শুনিয়েছেন পরম আশ্বাসবাণী - “হে পরিশ্রান্ত ভারাক্রান্ত লোক সকল আমার কাছে এসো, আমি তোমাদের বিশ্রাম দেব।” আমি পাপীদের জন্য জগতে এসেছি, ধার্মিকদের জন্য নয়। তাই জীবনের শেষ মুহুর্তে অর্থাৎ মৃত্যুর সময়েও দুজন জঘন্য পাপী তার সঙ্গী।


    প্রভুযীশুর সাথে যে দু'জন দস্যুকে ক্রুশে দেওয়া হয়েছিল, তারা দু'জনই প্রভুর কাছে প্রার্থনা করেছিল। প্রথমে দেখি প্রথম দস্যুর প্রার্থনা, যে প্রার্থনার কোন উত্তর যীশু দেন নি। সেই দস্যু প্রভুকে নিন্দা করে বরেছিল, “তুমি নাকি সেই খ্রীষ্ট? আপনাকে ও আমাদিগকে রক্ষা কর” (লুক ২৩ : ৩৯)। এই লোকটির প্রার্থনা সম্পর্কে আমরা কি বলতে পারি? তার প্রার্থনা কি আদৌ সত্যিকারের প্রার্থনা ছিল? তার সম্পর্কে কয়েকটি বিষয় লক্ষ্য করতে পারি । যেমন-

    প্রথমতঃ সেও এ সব লোকদের সাথে যোগ দিল, যারা যীশুকে অপমান ও অত্যাচার করছিল। “অধ্যক্ষেরাও তাহাকে উপহাস করিয়া বলিতে লাগিল, এঁ ব্যক্তি অন্য লোককে রক্ষা করিত, যদি ও ঈশ্বরের সেই শ্বীষ্ট ও তাহার মনোনীত হয়, আপনাকে রক্ষা করুক; আর সেনাগণও তীহাকে বিদ্রুপ করিল, নিকটে গিয়া তাহার কাছে অন্লরস লইয়া বলিতে লাগিল, তুমি যদি যিহুদীদের রাজা হও, তবে আপনাকে রক্ষা কর” (লেক ২৩ ৪ ৩৫-৩৭)। আজ আমাদের অবস্থান কোথায়? আমরাও কি এ সব যাদের পাশে কেউ নেই, তাদের পক্ষ নেই?

    দ্বিতীয়তঃ প্রথম দস্যুটিও প্রার্থনা করতে জানলেও তার প্রার্থনা ছিল, “নিজেকে রক্ষা কর এবং আমাদেরও রক্ষা কর”। পৃথিবীতে ঈশ্বরের উপর বিশ্বাসী মানুষের সংখ্যাই বেশী, এমন কি সন্ত্রাসী, চোর ও ডাকাতও ঈশ্বরে বিশ্বাস করে এবং প্রার্থনাও করে। কিন্তু দেখা গেল যীশু এই দস্যুর প্রার্থনা শুনলেন না। তারও বাচার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। কারণ যীশুর প্রতি তার বিশ্বাস ও ভক্তি নেই, বরং তাচ্ছিল্যই প্রকাশ পেয়েছে বেশী। আজ এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ । বর্তমানে মানুষ অনেক আধ্যাত্মিকতার কথা বলে, ধর্ম প্রচার করে। কিন্তু চরম সত্য হলো যে, প্রচারের কেন্দ্রবিন্দু বীশু না হয়ে হয় ব্যক্তি কেন্দ্রিক, বা নিজেদের কর্মকাণ্ডকেই বড় করে দেখে, সেখানে ধর্ম থেকে অধর্মই হয় বেশী । কারা যীশুকে ক্রুশে দিয়েছিল? শুধু রোমীয় রাজনৈতিক নেতারা নয়, কিন্তু সেই সময়ে যারা যিহুদী ধর্মের প্রধান, তারাই মরিয়া হয়ে চিৎকার করে বলেছিল, “ওকে ক্রুশে দাও, ওকে ক্রুশে দাও” ।
    লক্ষণীয় বিষয়, ফরিশী ও সদ্দুকী এরাই ছিল সেই সময়ে সমাজের দৃষ্টিতে ভাল, সৎ ও ধার্মিক মানুষ । আর আশ্চর্ষের বিষয়, এই তথাকথিত ধার্মিক মানুষদের দ্বারাই যীশু ক্রুশারোপিত হলেন। বর্তমানেও এই তথাকথিত ধার্মিক মানুষেরা প্রার্থনা করে, বড় বড় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে, যেন সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়। কিন্তু বাস্তবে তা অন্যরূপ, ধর্মের নামে অধর্ম, আর শান্তিতে অশান্তির বীজ রোপিত হয়।

    তৃতীয়তঃ এই দস্যুর পরকালের কোন চিন্তা ছিল না, সে শুধু তার বর্তমান নিয়েই ব্যস্ত এবং তাৎক্ষণিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে চেয়েছিল । আমরা হয়ত বলব, এটাই তো ঠিক। কিন্তু এটিই ছিল যীশুর কর্মজীবনের সারাটা সময়ের সমস্যা। তিনি যা বলতে চান, বুঝাতে চান, লোকে তা শুনতে চায় না বা বুঝতেও চায় না। বরং তারা চাইত ষীশু মশীহ হিসেবে তাদের রোমান সাম্রাজ্যের পরাধীনতা থেকে রক্ষা করবেন, তাদের সুস্থ করবেন, অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করবেন ইত্যাদি । প্রভু যীশু করুণাবিষ্ট হয়ে অনেক আশ্চর্য কাজ করেছেন। কিন্তু সব সময় নয়, কারণ তার এর থেকেও আরও গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছিল, যেমন সাধু পৌল লিখেছেন  “এই কথা বিশ্বসনীয় ও সর্বোতভাবে গ্রহণের যোগ্য যে, খ্রীষ্ট যীশু পাপীদের পরিত্রাণ করিবার জন্য জগতে আসিয়াছেন; তাহাদের মধ্যে আমি অগ্রগণ্য”...১ তীমথিয় ১ 8 ১৫)।

    সুতরাং স্বাস্থ্য, সম্পদ ও রাজনৈতিক স্বাধীনতা যদিও গুরুত্বপূর্ণ তবুও প্রভুর কাছে এগুলি ছিল ক্ষণিকের । কারণ প্রতু যীশুর এই জগতে আসার মূল কারণ ছিল, যেন পাপীরা পাপ থেকে ফিরে অনন্ত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পায়। তিনি এসেছিলেন ক্রুশে মুত্যুবরণ করে সমগ্র পাপী মানুষদের মুক্তি দিতে ও এশরাজ্যের প্রজা করতে। প্রথম দস্যুটি পাপের ক্ষমা চায়নি, বরং সে তার সকল দোষক্রটি নিয়েই তাৎক্ষণিক মুক্তি চেয়েছিল, আর তাই তার প্রার্থনা গ্রাহ্য হয়নি। অপরপক্ষে দ্বিতীয় দস্যুটি রক্ষা পেল।

    এবার তার বিষয়ে একটু ভেবে দেখি -


    “কিন্ত অন্য জন উত্তর দিয়া তাহাকে অনুযোগ করিয়া কহিল, তুমি কি ঈশ্বরকেও ভয় কর না? তুমি ত একই দণ্ড পাইতেছ। আর আমরা ন্যায়সঙ্গত দণ্ড পাইতেছি; কারণ আমরা যাহা যাহা করিয়াছি, তাহারই সমুচিত ফল পাইতেছি; কিন্তু ইনি অপকার্য কিছুই করেন নাই। পরে সে কহিল, যীশু আপনি যখন আপন রাজ্যে আসিবেন, তখন আমাকে স্মরণ করিবেন। তিনি তাহাকে কহিলেন, আমি তোমাকে সত্য কহিতেছি, অদ্যই তুমি পরমদেশে আমার সঙ্গে উপস্থিত হইবে” (লক ২৩ :৪০-৪৩)।
    ভালোবাসার প্রতিদানে যীশু পেয়েছেন বিদ্রুপ ও লাঞ্ছনা। প্রাচীনবর্গ, মহাযাজক, যাজকগণ, অধ্যাপকগণ, রোমীয় সেনাগণ, পথচারীগণ -সবাই তীর ধশ্বরিক ক্ষমা নিয়ে বিদ্রুপ করেছে মেথি ২৩ : ২৭-৩১, ৩৮-৪৪)। কেউ বলছে “ও ভূতদের নেতা, সেই শক্তিতেই ভূত ছাড়ায়। এমন কি তাঁকে চরম অপমান করার জন্য তার দুপাশে দুজন দস্যুকে ক্রুশে দিয়ে জগৎকে বোঝাতে চেয়েছে, যীশু পাপীদের নেতা ।” তবে এত বিদ্রোপকারী মধ্যে একমাত্র ব্যতিক্রম এ দস্যুটি ।

    দস্যুটি বহু জঘন্য পাপ করেছিল । আত্মপক্ষ সমর্থন করার মতো তার কিছুই বলার ছিল না। সে জানত তার পাপ ক্ষমার অযোগ্য, মৃত্যুই তার যোগ্য শাস্তি। কিন্তু সে ছিল প্রকৃত অনুতপ্ত। কোনো অজুহাত সে দেখায়নি, সে যীশুর অনুগ্ধহ চেয়েছিল। তার প্রার্থনা ছিল ক্ষুদ্র, কিন্ত আন্তরিক।

    লৃক ১৫ : ১১ -৩২ পদে দেখতে পাই হারানো ছেলের কাহিনী । হারানো ছেলেটি যে মুহূর্তে নিজের ভুল বুঝতে পারল ও অনুতপ্ত হলো, সেই মুহূর্তে সে ফিরে আসার পরিকল্পনা করল ও পিতার কাছে এল এবং পিতার ক্ষমা সে লাভ করল। আজকে এই ক্রুশের উপর আমরা দেখতে পাই সেই উদাহরণেরই বাস্তব প্রয়োগ । যে দস্যুটি ব্যঙ্গ করেছিল, তাকে বকুনি দিয়ে সেই মুহূর্তে অপর দস্যুটি বলে উঠল, “আমরা উচিত শাস্তি পাচ্ছি, আমাদের যা পাওনা আমরা তাই পাচ্ছি। কিন্তু ইনি তো কোন দোষই করেননি ।” তার পরে সে যীশুকে বিনয়ের সাথে বলল, “আপনি যখন আপন রাজ্যে ফিরে যাবেন, তখন দয়া করে আমার কথা মনে রাখবেন।” আর যীশু সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দিলেন “আমি তোমাকে সত্যি বলছি তুমি আজকেই আমার সঙ্গে পরমদেশে উপস্থিত হবে ।”
    প্রথম দোষী ব্যক্তির আবেদন ছিল এ জগতে দৈহিক মুক্তির । কিন্ত দ্বিতীয় দোষী ব্যক্তি জাগতিক দৈহিক মুক্তির কথা ভাবেনি, বরং সে ভেবেছে অনন্তরাজ্যের কথা । আর সে বিশ্বাস করল যে, সেই অনন্ত রাজ্যে নিয়ে যেতে পারে শুধু মাত্র একজন, যিনি রয়েছেন তার খুব কাছেই। যীশুর কাছে তার অন্তিম প্রার্থনা  “তাকে যেন সেই রাজ্যে যাওয়ার পূর্বে একটিবার স্মরণ করা হয়।”

    আমাকে আশীর্বাদ কর, আমাকে এই ক্ষমতা দাও, ইত্যাদি । আমরা শুধু এই জগতের প্রয়োজনের কথাই ভাবি ও বলি। কিন্তু আমাদের প্রার্থনার বিষয়বস্তু হওয়া উচিত যীশুর সঙ্গে তার রাজতে থাকার ইচ্ছা। “কিন্ত তোমরা প্রথমে তাঁহার রাজ্য ও তাহার ধার্মিকতার বিষয়ে চেষ্টা কর, তাহা হইলে এঁ সকল দ্রব্যও তোমাদিগকে দেওয়া হইবে” (মথি ৬ : ৩৩)।

    প্রভূ বীশু অনুতপ্ত দস্যুটিকে বললেন, “আজই তুমি আমার সঙ্গে সেই পরম দেশে উপস্থিত হবে ।” যীশুর আশীর্বাদ হলো তৎক্ষণাৎ। “দেখছি, কি করা যায়, ভেবে দেখব, আগামী কাল এসো _ এসব নয়, কিন্তু এক্ষুণি।” যারা বিশ্বাসপূর্বক অন্তর
    দিয়ে প্রার্থনা করতে জানে, তারা উত্তর পায়। যেমনটি পেল .একজন দোষী ব্যক্তি। এই দস্যুটির লক্ষণীয় কয়েকটি বিষয় হলো :
    সে জনতার সাথে সুর না মিলিয়ে বরং তাদের বিরুদ্ধে গেল। সে যীশুকে চিনতে পারল। তার ও অন্য দস্যুর প্রার্থনা সম্পূর্ণ আলাদা । যীশু তীর কর্মজীবনে মানুষের সব প্রার্থনা শোনেন নি, যেমন যাকোব ও যোহন যে প্রার্থনা করেছিল তা তিনি দিতে পারেন না বলে জানিয়ে দিলেন। এই দু'ভাই আবার যীশুকে বলেছিল, যেন যীশু আগুন দিয়ে শমরীয়দের জালিয়ে দেন, কিন্তু সে প্রার্থনারও উত্তর যীশু দেন নি। কারণ এগুলির মধ্যে ছিল স্বার্থপরতা, লোভ অথবা অন্যের ক্ষতি করার চেষ্টা। কিন্তু যীশু তাদের প্রার্থনা শুনেছেন, যারা তার উপর সম্পূর্ণ বিশ্বাস সহকারে তাদের সত্যিকারের প্রয়োজনের কথা প্রভুকে জানিয়েছিল। আর দ্বিতীয় দস্যুটি এই রকমই প্রার্থনা করেছিল। তার পাপের ক্ষমা হলো । তার এমন কিছু ছিল না, যা দিয়ে ঈশ্বরকে সন্তষ্ট করতে পারত। সে তার সহায়-সম্পত্তি সব হারিয়েছে। তার শরীরে একবিন্দু শক্তিও নেই। অসহায় অবস্থায় মৃত্যুর প্রহর গুনছে। এমন অবস্থায় সে নিজেকে সম্পূর্ণ উজাড় করে দিয়ে শ্রীষ্টের কাছে ভক্তিপূর্ণভাবে শুধু এটুকুই বলল, “আমাকে একটু স্মরণ করবেন” ।

    আজ এই দস্যু আমাদের এই শিক্ষা দিচ্ছে, “বন্ধুরা তোমাদেরও সুযোগ আছে”। আমরা হয়ত কেউ এ দস্যুর মতো নই, কিন্তু আমাদের মধ্যে থাকতে পারে লোভ, স্বার্থপরতা, হিংসা ইত্যাদি। সুতরাং আমাদের প্রার্থনা হওয়া উচিত, “প্রভু আমার প্রতি, এই পাপীর প্রতি দয়া কর”।

    এই দস্যু পরমদেশে যাওয়ার অধিকার পেল, কিন্তু এই ব্যক্তির বাপ্তিস্ম হয়েছে কিনা তা জানা যায় না এবং সে প্রভুরভোজও হয়ত কখনো গ্রহণ করেনি। এখানে লক্ষণীয় বিষয় হলো ঃ বাহ্যিক সংস্কার বা সাক্রামেন্ট ভাল ও দরকার, কিন্তু এইসব আমাদের পরিত্রাণ এনে দিতে পারে না। এই দস্যুটি তার জলন্ত উদাহরণ । সে এটি প্রমাণ করল যে, সবথেকে বেশী গুরুত্বপূর্ণ হলো, একমাত্র প্রভুর প্রতি আন্তরিক বিশ্বাস ও কৃত পাপের জন্য অনুশোচনা । সুতরাং আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আমরা কেউ যেন মনে না করি যে, আমি যেহেতু বান্তিস্ম নিয়েছি, নিয়মিত প্রভুরভোজ গ্রহণ করি, মগ্ডলীতে বড় দায়িতু পালন করছি, সুতরাং ঈশ্বরের দৃষ্টিতে আমার সব ঠিক আছে। তবে শেষ বিচারের দিনে আমাকে এই প্রশ্ন করা হবে না যে, আমি বাপ্তিস্ম নিয়েছি কিনা বা নিয়মিত প্রভুরভোজ গ্রহণ করেছি কিনা, বরং প্রশ্ন করা হবে, আমি সম্পূর্ণরূপে প্রভুর প্রতি বিশ্বাস রেখেছি কিনা এবং দ্বিতীয় দস্যুর মতো নিজের পাপের দিকে তাকিয়ে তার জন্য অনুশোচনা করেছি কিনা ।

    পরিশেষে দেখি প্রভূ যীশুর ক্ষমতা 8 “তিনি তাহাকে কহিলেন, আমি তোমাকে সত্য কহিতেছি, অদ্যই তুমি পরমদেশে আমার সঙ্গে উপস্থিত হইবে” (লুক ২৩ :৪৩)।

    খ্রীষ্টের  ক্রুশ ঈশ্বরের মহান-প্রেমের অভিব্যক্তি। সেই প্রেম অব্যক্ত ভাষায় এতক্ষণ দস্যুটির হৃদয়ে কথা বলছিল । ক্রুশ এই সত্যই প্রকাশ করে যে, আমরা যে অবস্থায় আছি, ঈশ্বর সেই অবস্থাতেই আমাদের ভালোবাসেন । অনুতাপ করে, মন পরিবর্তন করে কখন আমরা সাধু হবো, সে পর্যন্ত তিনি অপেক্ষা করেন না। যীশুর ক্রুশ একদিকে ঈশ্বরের প্রেম প্রকাশ করে এবং অন্যদিকে কেবল এঁ দস্যুদের পাপ নয়, কিন্তু আমার -আপনার সবার পাপকে প্রতিফলিত করে । আমাদের বর্তমান পাপ- জীবনে ঈশ্বর সন্তষ্ট নন, তাই অনুতত্ত হয়ে তার কাছে আত্মসমর্পণ করলে পুরস্কৃত করতে তিনি এক মুহূর্ত দেরী করবেন না। সত্যিকার অর্থে খ্রীষ্টের প্রেমের উপলব্ধি পাপীকে অনুতাপ করতে প্রেরণা দেয় ।

    প্রভু যীশুর মহৎ ক্ষমতা, তিনি যে অলৌকিক কাজ করেছেন- সেগুলি নয়, বরং তার মহৎ অলৌকিক কাজ হলো “বিশ্বাসীদের জন্য স্বর্গরাজ্যের দুয়ার খুলে দেওয়া ।” যার উপস্থিত হবে । আমার আপনার প্রতি কি প্রভুর এই নিশ্চয়তা আছে? আমাদের জীবন খুবই সংক্ষিপ্ত। আজ আমি বেঁচে আছি, আগামীকাল তিনি মৃত। মৃত্যু আমাদের জন্য ভয়ংকর । কিন্তু প্রভু যার সাথে থাকেন, তার কাছে মৃত্যু ভয়ের নয়, বরং মৃত্যুর পরেও তিনি তার সাথে থাকবেন। “প্রভুতে প্রত্যাশা” -যা হলো খ্রীষ্টধর্মের সব থেকে সুন্দর বিষয়।






    পরিচিতদেরকে জানাতে শেয়ার করুন

    আপনার জন্য আরো কিছু পোস্ট

    RELATED ARTICLES

      ADS