25 ডিসেম্বর,‘‘শুভ বড়দিন’’

ads20
     নব আনন্দে বিমল ছন্দে বন্দী তোমারে আদরে,
    হে নব অতিথি মঙ্গল গীতি মরমে মধুর ঝষ্কারে।।
    রাজ-অধিরাজ গোয়ালে শয়ন, কোথা আজি তব রত্ন সিংহাসন
    এস এ হৃদয়ে পূজিব যতনে ভক্তি কুসুম সম্ভারে।।

    যাঁকে আমরা পরম মানব বলে স্বীকার করি আজ সেই প্রভু যীশু খ্রীষ্টের শুভ জন্মদিন। ইংরেজীতে Merry Christmas , Happy Christmas, Blessed Christmas, আমরা বাংলা ভাষাভাষী যারা, তারা বলি ‘শুভ বড়দিন’। জানা যায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ভোলানাথ সরকার Christmas এর প্রথম বাংলাকরণ করেন, ‘খ্রীষ্ট অষ্টমি’ পরে কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত Christmas কে ‘‘বড়দিন ‘’ হিসেবে নামকরণ করেন এবং সেই থেকে আমাদের কাছে Christmas ‘‘শুভ বড়দিন ‘’ হিসেবে সুপরিচিত।

    খ্রীষ্টের জন্ম এখন আর আর ঐতিতাসিক পটভূমিতে লিপিবদ্ধ নয়, যীশুর জন্ম আধ্যাত্মিক। ঈশ্বরের পুত্র যখন আমাদের জীবনে বাস্তব হয়ে ওঠেন, প্রতি মুহুর্তে যখন আমরা তাঁর সঙ্গে থাকতে সচেষ্ট হই, তাঁর ভালবাসা অকাতরে অন্যকে বিলিয়ে দেই, প্রকৃতপক্ষে তখনই খ্রীষ্ট আমাদের হৃদয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তাইতো কবিগুরু লিখেছেন,‘‘ আজ তাঁর জন্মদিন এ কথা বলব কি পঞ্জিকার তিথি মিলিয়ে? অন্তরে যে দিন ধরা পড়ে না সে দিনের উপলদ্ধি কি কালগণনায়? যেদিন সত্যের নামে ত্যাগ করেছি, যেদিন অকৃত্রিম প্রেমে মানুষককে ভাই বলতে পেরেছি, সেইদিনই পিতারপুত্র আমাদের জীবনে জন্মগ্রহণ করেছেন, সেইদিনই বড়োদিন-তা যে তারিখেই আসুক’’।

    প্রথম বড়দিন, সেদিন কত বড় বা ছোট ছিল জানি না, কি বার ছিল তাও জানি না। আর আজ বড়দিন মহানন্দের হলেও সেদিনও কিন্তু যোষেফ ও মরিয়মের জন্য যে সুখের ছিল না, তা নিশ্চয় বুঝতে পারি। নাম লেখাবার জন্য নাসরৎ থেকে বেৎলেহেম 70 মাইল পথে পায়ে হেটে , কখনও বা গাধার পিঠে চড়ে তারা গন্তব্যে পৌছালেন এবং ভাবলেন, এই বুঝি কষ্টের অবসান হল। কিন্তু না , কষ্ট যে মাত্র শুরু তা তারা জানলেন যখন মরিয়মের প্রসব বেদনা শুরু হল। এই যন্ত্রণা বেশি বৃদ্ধি পেল, যখন কেউ তাদের একটু জায়গা দিল না। কত জায়গাতেই না তারা ঘুরেছেন। পান্থশালার মালিক এতই ব্যস্ত ছিল যে, দুটি ক্লান্ত শ্রান্ত পথিকের দুঃখের কাহিনী শোনার মত ধৈর্য্য তার ছিল না। তারপর তাদের গরীব দেখে তেমন চেষ্টাও করেনি। অবশেষে অসহায় অবস্থায়, দীনবেশে গোয়ালঘরে জন্ম নিলেন ঈশ্বর-তনয়, মানব পুত্র, প্রভু যীশু খ্রীষ্ট,‘‘ইম্মানূয়েল’, আমাদের সহিত ঈশ্বর।

    অদুশ্য ঈশ্বর দৃশ্যমান হয়ে মানবের মাঝে জন্মগ্রহণ করেছেন, আমাদের সঙ্গে বাস করেছেন, আমাদের সুখ-দুঃখের সঙ্গী হয়েছেন। বড়দিন আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে ঈশ্বর আমাদের নিত্যসঙ্গী। আমাদের সুখ-দুঃখে , আনন্দ-বেদনায়, উত্থান-পতনে, সংকটে উল্লাসে-তিনি আমাদের সাথে আছে কারণ তিনি িইম্মানূয়েল। তিনি আমাদের সঙ্গে থেকে, আমাদের অন্তরে থেকে সকল অসত্য থেকে সত্যের পথে, অমঙ্গল থেকে মঙ্গলের পথে, অন্ধকার থেকে আলোর পথে এবং মৃত্যু থেকে জীবনের পথে পরিচালিত করেন।

    পরিচিতদেরকে জানাতে শেয়ার করুন

    আপনার জন্য আরো কিছু পোস্ট

    RELATED ARTICLES

      ADS