নতুন পরাশক্তি করোনার [কভিড-১৯] তান্ডব

ads20
    পৃথিবী আজ বড়ই নিস্তব্দ । শোকের ছায়া নেমে এসেছে ,মৃত্যুর মিছিল কিছুতেই থামতেছেনা । ইতালিয়ান এক ড.বলেছেন তিনি এর আগে একসাথে এত মানুষের মৃত্যু দেখেন নি। মানুষ নিজকে  লুকানো চেষ্টা করতেছে কিন্তু মৃত্যু যেন তাদের পিছু ছাড়তেছেনা ,যদি তাই না হত তাহলে প্রবাসীরা কেন ইউরোপের মতো দেশগুলো রেখে বাংলায় ভিড়তেছে? যুদ্ধের ঘোষণা ছাড়াই পুরো পৃথিবী আজ অবরুদ্ধ,নিউ-ইয়র্কের এর টাইম স্কয়ার শূন্য।কানাডার প্রধানমন্ত্রী অপরাধ ছাড়াই স্ত্রী সহ গৃহবন্দী, লন্ডন ব্রীজে হাঁটছে না মানুষ, কাবার চারপাশে ঘুরছে না মুসলমান, ভ্যাটিক্যানে মানুষবিহীন কবুতর, ভেনিসের জলে ভাসছে না নব দম্পতি আর পর্যটক, সমগ্র পৃথিবী - যুদ্ধ ছাড়াই অবরুদ্ধ, শূন্য গগনে উড়ছে না প্লেন আর সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকছে না আন্তঃদেশীয় ট্রাক আর ট্রেন। দাপটটা দেখছেন তো! What a great power of nature!! কোন সার্কুলার নেই, নোটিস নেই, সব কিছুই স্থবির। ইচ্ছা হলো রাজত্ব দখল করে নিলো। সমগ্র দুনিয়া ব্যাপী বিকট ঝাঁকুনি। প্রকৃতি বুঝিয়ে দিল, রাশিয়া-আমেরিকা, চীন-ভারত, ব্রিটেন-ফ্রান্স, পাকিস্তান-উত্তর কোরিয়া ৮ পারমাণবিক মোড়লের পারমাণবিক বোমা আর আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপনাস্ত্রও ব্যর্থ তার কৌশলের কাছে।প্রকৃতি আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে দিলো, আমরা কতো অসহায় তার কাছে, আমার জন্য তুমি, তোমার জন্যে আমি নই। যেটা তুমি পাও, অনুগ্রহ আর অনুদান আমার। প্রকৃতি মনে হয় সত্যিই আমাদের উপর মহা-নারাজ বলে'ই বুঝিয়ে দিলো নতুন করে। সেটা'ই হয়তো সৃষ্টিকর্তার অভিযোগ আর আফসোস। হায়রে মানব। তারপরও কতো অহংকার, কত দাপট, কত শক্তির অহামিকা।। এখনও সময় আছে।।
    সৃষ্টিকর্তা সামনে মাথা নোয়াবার।। হয়তো শেষবারের মতো।। এই স্থবিরতা কেয়ামত পর্যন্ত গড়াবে না, কে বলতে পারে।প্রকৃতির কাছে আজ সবাই অসহায় ,এই তো কয়েকদিন আগেও গুটিকয়েক ব্যাক্তির হাতের তলায় পৃথিবীটা ছিল ,কোথায় গেল তাদের হুংকার ,প্রায় ৩য় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার উপক্রম হয়েছিল ,তাদের হাতের তৈরি পারমাণবিক বোমা-মিশাইল ভয়ে সবাই ছিল নিস্তব্দ ।
    সেই সব হুংকার -গর্জন কারী নেতাদের আজ কথা নেই ,কোথায় যেন তারা হারিয়ে গেছে !! লোকালয় থেকে নিজেদের আড়াঁল করেছে !!কিন্তু কেন??? আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রি বলেছে !! এটা তেমন কিছু না, সাধারণ জ্বর-সর্দির মত! ! তাহলে প্রশ্ন থেকে যায় যেখানে মানুষ বিশ্বকে জয় করতেছে ,মহাবিশ্বের অজানা তথ্য উম্মোচন করতেছে আর সেখানে সামান্য করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিস্কার করতে পারতেছে না! ! কেন চিকিৎসা বিজ্ঞানী আজ নিরুপয় !!!আজ বড্ড বাইবেলের সেই ব্যাবিলনের ভাষা বিভেদের ঘটনাটা মনে পড়ে যায় ,ব্যাবিলন জাতি সে সময় যতটা শক্তিশালি ছিল তেমনি ছিল বুদ্ধি মান ,তারা চেয়েছিল তারা ঈশ্বরের সমান হবে । কিন্তু ঈশ্বর ভাষা বিভেদ সৃষ্টি করে দিলে পরে তাদের বুদ্ধি মূর্খ্যতায় পরিণত হয়, ঠিক তেমনি আজ যখন মানুষ সৃষ্টিকর্তাকে চুচ্ছ করে নিজেদের মধ্যে হানাহানি করে নিজেদের শক্তি প্রদশর্নে ব্যস্ত ঠিক তখনই তাদের বুদ্ধি-শক্তি মূর্খ্যতায় পরিণত করতে হয়তবা এই ভাইরাসের মহামারি রুপ ধারণ , আমি অবাক হয়ে যাই যখন দেখি , বিশ্বায়নের  যুগে সবকিছু দ্বিগুণ গতিতে চলছে । বিজ্ঞানের কল্যাণ সাধনে, পৃথিবী হাতের মুঠোয় চলে এসেছে । চোখ ধাঁদানো যা কিছু দেখি, সব বিজ্ঞানের কল্যাণের ফল । বিজ্ঞানের কল্যাণ শুধু প্রথিবীতে সীমাবদ্ধ নয় । বরং এক গ্রহ থেকে অন্য গ্রহে ছড়িয়ে পড়েছে ।মঙ্গল গ্রহে  পানির সন্ধান মিলেছে , পৃথিবী  থেকে অন্য  গ্রহে মানুষ বসবাসের চিন্থা-ভাবনা করছে । কোটি কোটি কিলোমিটার দুরে গ্লাক্সিতে কি ঘঠছে  সাটেলাইটের মাধ্যমে জানা সম্ভব হচ্ছে ।মুহুত্বের মধ্যে পৃথিবীর এক কোনায় কি ঘটছে তা অন্য কোনায় ছড়িয়ে পড়ছে । প্রাকৃতিক দৃর্য়োগের আগাম সংকেত পেয়ে যান মালের ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে।
    যেখানে সব কিছু বিজ্ঞানের ফলে উন্নতর থেকে উন্তরের  দিকে ধাবিত হচ্ছে , সেখানে  মানুষের বিবেকের অবক্ষয় হচ্ছে,ভালোবাসা ,মানবতা মহাম্বত দিনদিন অবনতি হয়ে, হ্রস পাচ্ছে, মানুষ হিংস্র হয়ে উঠছে । পশুদের হিংস্রতা এখন মানব সভ্যতায় চলে এসেছে । কিভাবে  হিরোশিমায় [লিটল বয়] বোম্মা দিয়ে মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্র হাজার হাজার নিরিহ মানুষকে মেরেছে নিবির্চারে ।দুইটি বিশ্বযুদ্ধে সংগঠিত হয়েছে । তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধেরে ঘন্টা বাজঁছে, যে হারে পারমাণবিক অস্ত্র মজুদ আছে ,যুদ্ধ বাজলে এক-তৃতীয়াংশ মানুষ মারা পড়বে ।মানুষ নিজের জন্য মরণ ফাঁদ তৈরি করে রাখেছে ।
    মানুষ পশুর চেয়ে হিংস্র হয়ে উঠছে ।পশুরাও কখনই নিজেরে মধ্যে এরকম প্রান হানি হত্যাকান্ড চালায় না।একজন উদ্বিয়মান লেখক হিসাবে বিবেকের তাড়নায় আজকের এই লেখাটা   আমার সামনে ছবি ন্যায় ভেসেঁ উঠে  সিরিয়া, ইরান, গাজা, ইয়েমেনের,রাখাইন এর বাস্তুচ্যুৃত্ব ,সেই সব লোকদের প্রতিচ্ছবি । নিজের ঘর বাড়ি ছেড়ে শরণার্থী জীবন যাপন করছে ! এক ফোটাঁ পানির জন্য হাহাকার , মৈালিক অধিকার থেকে বঞ্চিত । মনে হয় , মাবুদ যেন ওদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে ! বড়ই জানতে ইচ্ছা করে আসলে ,এই মানুষগুলোর অপরাধ কি?? নাকি অন্য কার শক্তি-ক্ষমতা প্রমাণের জন্য এরা বলি?!বিশ্ব বিবেকের কাছে প্রশ্ন ! তাই হয়তবা নতুন করে এই ভাইরাসের জম্ম । মানুষ মুখ বুজেঁ সব কিছু মেনে নিলেও তো, সৃষ্টিকর্তা বলতে একজন আছে!!! তাই তো হয়তবা মহামারি করোনার অাবির্ভাব । করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দিনদিন মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলছে।  মার্কিন গবেষণা সংস্থা জনস হপকিন্স জানিয়েছে, বিশ্বজুড়ে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২০ হাজার ৪৯৯ জনে দাঁড়িয়েছে। একই সঙ্গে আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লাখ ৫৪ হাজার ৩৯৮ জন।চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার।
    ইতোমধ্যে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত  রোগী শনাক্ত হয়েছে মৃত্যু হয়েছে ৫ জন আর সংক্রমণ ৪৪ জন। এমতাবস্তায়, মার্কিন সংক্রমক রোগ বিশেষজ্ঞ মাইকেল অস্টারহোম বলেন,‘এটা তো কেবল শুরু।.. আঘাত, ব্যাথা, দুর্ভোগ, সংক্রমণ ও মৃতের সংখ্যার কথা
    বিবেচনা করলে বোঝা যায় যে, এটা কেবল আসলেই শুরু। এই অবস্থা সামনের মাসগুলোতেও অব্যাহত থাকবে। আর মানুষও আক্রান্ত হতেই থাকবে।’ তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, সবচেয়ে মা’রাত্মক সিজনাল ফ্লুর তুলনায় করোনাভাইরাস আরো ১০ থেকে ১৫ গুণ বেশি ভয়ঙ্কর হতে পারে।
    করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার যেভাবে মানুষ সুরক্ষিত থাকার পরামর্শ দিচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে না যে- এসব পরাম’র্শ মেনে চললে করোনাভাইরাসে
    আক্রান্ত হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
    যে ভাবে ছড়িয়ে পড়ছে বংলাদেশে  ভাইরাসটি?
    বাংলাদেশে ইতিমধ্যে লকডাউন করা হয়েছে ,প্রথমের দিকে সবাই ভেবেছিল হয়তবা বাংলাদেশে ভাইরাসটির আসার সম্ভবনা কম, কিন্তু রেমিট্যান্স যোদ্ধা নামে খ্যাত প্রবাসীরা ভাইরাসটি এ দেশে এভাবে ছড়িয়ে দিব ?! ভাবতে  খুব কষ্ট লাগে তাদের এই উদ্ভত আচরণ দেখে,প্রতিদিন গড়ে   সাত হাজার যাত্রী আসেছিল শেষ কয়েক দিনে । যেসব ফ্লাইট আসছে এগুলোর প্রায় সবগুলোই করোনা আক্রান্ত দেশ থেকে, বিমানবন্দরে টার্মিনাল দিয়ে বেরিয়েই কিছু কিছু প্রবাসী অপেক্ষমান স্বজনদের সাথে কোলাকুলি করছে। বাসায় তারা হোম কোয়েরেন্টাইন কি করবেন, বিমানবন্দরে নেমেইতো তারা জড়াজড়ি-গড়াগড়ি খাচ্ছেন! শুধু সরকারের দোষ না খুঁজে নিজেদেরও সচেতন হওয়ার দরকার ছিল । প্রবাসীরা হোম কোয়ারেন্টাইনে না গিয়ে ইচ্ছে করেই ভাইরাসটি ছড়িয়ে দিলো আমাদের দেশে! ওরা উন্নত দেশে থেকেও সচেতন নাগরিক হতে পারলো না,যদিও বা সংশিষ্ট মহলের পদক্ষেপ নিতে কিছুটা ঘাটতি ছিল ততটা সচেতন ছিল না, দেখা যাক তার মাশুল কতটা দিতে হয়!!!
    নিজকে ,নিজের পরিবার ও নিজের দেশকে বাচাঁতে আমাদের যা করণিয়.
    ১. জ্বর, কাশি, সর্দি হলে তাৎক্ষণিক আপনাকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।
    ২. খুব বেশি প্রয়োজন না হলে বাইরে যাওয়া চলবেনা [যদিও লকডাউন] এলাকার বাহিরে যাওয়া যাবে না, জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে ।
    ৩.বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক ।
    ৪.বাইরে থেকে এসে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে ভালভাবে হাত ধুতে হবে
    ৫.অযথা চোখে মুখে হাত দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে, কেননা ভাইরাসটি নাক মুখ দিয়ে প্রবেশ করার সম্ভবনা থাকে ।
    ৬.মানসিক ভাবে শক্ত থাকতে হবে ।
    ৭. নিয়মিত খাওয়া-দাওয়া এবং ব্যায়াম করতে হবে ।  
    লেখক: নাহিদ বাবু

    পরিচিতদেরকে জানাতে শেয়ার করুন

    আপনার জন্য আরো কিছু পোস্ট

    RELATED ARTICLES

      ADS