ইস্টার সানডে কি?

ads20

     যিশু খ্রীষ্ট ক্রুশবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার তিন দিন পর পুনরায় পৃথিবীতে আগমন করেন। যিশু খ্রীষ্টরে পুনরাগমনের দিনটিকে আমরা ইস্টার সানডে হিসেবে পালন করি। সমগ্র বিশ্বে এদিনটিকে পালন করা হচ্ছে। বাংলাদেশে ইস্টার সানডে উপলক্ষে বিভিন্ন রকম অনুষ্ঠানের আয়োজন করেখ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা। ইস্টার সানডে হলো ৪০ দিনের উপবাসের শেষ দিন। গুড ফ্রাইডে পালনের পরই আসে ইস্টার সানডে। এ সময়টিতে উপবাস ও ভালো কাজ করা ধর্মের অঙ্গ বলে মনে করে উপবাস মাসের শেষ সপ্তাহকে পবিত্র সপ্তাহ হিসেবে বিশেষভাবে পালন করা হয়, কারণ এই দিনে সবকিছুর উপর বিজয়ী য়ে যীশু খ্রীষ্ট পুনরত্থীত হয়েছে।


    কাকে ঘিরে এই দিনটি?

    রোববার পবিত্র ইস্টার সানডে। এই দিনে যিশুখ্রিষ্ট মৃত্যু থেকে পুনরুত্থান করেছিলেন। গুড ফ্রাইডেতে বিপৎগামী ইহুদিরা যিশুখ্রিষ্টকে ক্রুশবিদ্ধ করে হত্যা করেছিল। মৃত্যুর তৃতীয় দিবস অর্থাৎ রোববার তিনি জেগে উঠেছিলেন। যিশুখ্রিষ্টের এই পুনরুত্থানের সংবাদ খ্রিষ্টবিশ্বাসীদের জন্য খুবই আনন্দের এবং তাৎপর্যপূর্ণ। এই দিনটিকে সকল খ্রিষ্টনেরা ইস্টার সানডে হিসেবে পালন করে থাকে। এই দিনটি সকল পাপীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ,কারণ যীশুর এুশীয়

    মৃত্যু ফলে, তাদের স্বর্গে যেতে আর কোন বাধা রইল না ।

    দিনটি তাৎর্পয়:

    সাধু পৌল বলেন ,”হে আমার প্রিয় ভ্রাতৃগণ সুস্ধির হও, নিশ্চল হও, প্রভুর কার্য সবর্দা উপচিয়ে পড়ে, কেননা তোমরা জান যে, প্রভুতে তোমাদের পরিশ্রম নিষ্ফল নয়” (১ করি ১৫;৫৮)

    ফাদার নরেন জে. বৈদ্য মতে, আমাদের জীবনের চলমান গতিধারায় বার বার চলে আসে নানা পর্ব, নানা আচার অনুষ্ঠান। এ সব আচার অনুষ্ঠানের কোনটি ভাষাগত, কোনটি জাতীয়। তেমনিভাবে ধর্মীয় অনেক অনুষ্ঠান বা পর্বও আছে যেমন খ্রীষ্টানদের ইস্টার পর্ব। যীশু খ্রীষ্টের পুনরূত্থানের সর্বোত্তম প্রমানটি হচেছ তাঁর বিশ্বাসী মন্ডলীর খ্রীষ্টিয় সমাজের অস্তিত্ব। যীশুর পুনরুত্থান ব্যতিরেখে খ্রীষ্টবিশ্বাসীর বিশ্বাস ও জীবন নিরর্থক ও প্রশ্নবোধক।

    “খ্রীষ্ট যদি পুনরুত্থিত না হয়ে থাকেন তাহলে, মিথ্যই

    তোমাদের বিশ্বাস:

    তোমরা আজও তোমাদের সেই পাপী অবস্থাতেই পড়ে আছ!”। যীশুর পুনরুত্থান সকল পাপ ও মন্দতার ওপর সুনিশ্চিত বিজয়। যীশু খ্রীষ্টের পুনরুত্থান উৎসবের ঐকান্তিক কামনা হোক মৃতুঞ্জয়ী খ্রীষ্টের সাথে “কবর থেকে উঠে” পুনরূত্থিত জীবন শুরূ করা। পুনরূত্থিত খ্রীষ্টের জোতিতে উদ্ভাসিত হয়ে নতুন মানুষে রূপান্তরিত হওয়া।

    কি বার্তা দিয়ে যায় পুনরুত্থান উৎসব?

    Everyone not called to be a public, every Christian can do something good for other and that what Christian witness is ,

    ‘খ্রীষ্ট আমাদের নিস্তার পর্বের মেষশাবক যিনি, তিনি কি বলিরূপে উৎসর্গকৃত হননি? সুতরাং এসো আমর এই উৎসব উদ্যাপন করি পুরানো খামির দিয়ে নয়, দৃষ্টতা ও অধর্মের খামি নিয়ে নয়, বরং আন্তরিকতা ও সত্যনিষ্ঠার খামির বিহীন রুটি নিয়ে’ (১ করি ৫: ৭-৮)।

    খ্রীষ্টিয় জীবন তো নেতিয়ে পড়া, ঝিমিয়ে পড়া জীবন নয় বরং অন্ধকারের পথ পরিহার কের আলোর পথে এগিয় চলা।‘ মৃতদের মধ্য থেকে খ্রীষ্ট যেমন পিতার মহিমাশক্তিতে পুনরুত্থিত হয়েছেন, তেমনি আমরাও যেন এক নব জীবনেরর পথে চলতে পারি ” (বাইবেল, রোয় ৫: ৩-৭)। এই বাণীর বাস্তবায়নই প্রতিদিন আমাদের ব্যক্তি জীবনে পুনরুত্থান ঘটায়। যেখানে অন্যায় – অন্যায্যতা ও পাপময়তা ঘটছে, সেখানেই যীশু ক্রুশবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করছেন।

    মৃত্যুর বাস্তবতা খুবই প্রকটভাবে অনূভূত হচ্ছে। দেশের মধ্যে চলমান প্রতিহিংসা, ধ্বংসযজ্ঞ, জীবন বিনাশ অত্যন্ত নির্মমভাবে মৃত্যুর সত্যতা ব্যক্ত করছে। খ্রীষ্টিয় জীবন তো নেতিয়ে পড়া, ঝিমিয়ে পড়া জীবন নয় বরং অন্ধকারের পথ পরিহার করে আলোর পথে এগিয় চলা। পুনরুত্থান আমাদের ক্ষমাশীল ব্যক্তি ও আলোকিত মানুষ হওয়ার প্রেরণা দান করে। কেননা প্রভু যিশু সব কিছুর উপর বিজয়ী হয়েছে ,তাই আমরা ও বিজয়ী, পুনরুত্থানের বারতা তো স্বাধীন ও মুক্ত হওয়ার আহবান। আমরা তো দুনীতির জয়গান গাইতে পারবো না। কথা ও আচরণের ছুরি দিয়ে ভাই বোনদের আহত করবো না।

    আলোর পথেই চলবো। আমাদের জীবনে খ্রিষ্টের পুনরুত্থান কি আবেদন সৃষ্টি করে? এটাই আমাদের অনুধ্যানের বিষয়। পুনরুত্থানের চেতনা আমাদের প্রত্যাহিক জীবনের কর্মপ্রেরণা হয়ে উঠুক। পুনরুত্থান উৎসব পালনের মধ্য দিয়ে সকলের হৃদয়-মনে এই প্রতিজ্ঞা বদ্ধপরিপর হোক – সমাজের কলুষতা দূরীভূত করে. দুর্নীতির সকল শৃঙ্খল ভেঙ্গে ঘটাবো শুভ শক্তির উদ্ভভ। কুরুচিপূর্ণ সাংস্কৃতিক আগ্রাসন বন্ধ হোক। পুনরুত্থান আমাদের ক্ষমাশীল ব্যক্তি ও আলোকিত মানুষ হওয়ার প্রেরণা করুক। এটাই হোক এইদিনের তাৎর্পয়।


    পরিচিতদেরকে জানাতে শেয়ার করুন

    আপনার জন্য আরো কিছু পোস্ট

    RELATED ARTICLES

      ADS