ভূমিকা:- মানুষ নির্মাণ করবার পূর্বে ঈশ্বর পৃথিবী সৃষ্টি করলেন। পৃথিবী সৃষ্টি করেই ঈশ্বর ক্ষান্ত হন নি, বরং এই পৃতিবীকে সম্পূর্ণ রুপে বসবাসের উপযুগি করে সৃষ্টি করলেন যেন মানুষ খুব সুন্দর করেই এই পৃথিবীতে বসবাস করতে পারে। মানুষের জন্য ঈশ্বর এত চিন্তা করলেন যে মানুষের জীবনে যেন কোন কিছুর অভাব না থাকে; ঠিক সেই ভাবেই ঈশ্বর মানুষের বসবাসের উপযুগী হিসাবেই পৃথিবী সৃষ্টি করলেন। ঈশ্বরের সমস্ত সৃষ্টির শেষে বলা হয়েছে, ‘ সে সকল উত্তম। ’ সৃষ্টির একেবারে শেষের দিকে বলা হয়েছে, “ আর দেখ, সে সকলই অতি উত্তম ”- আদি ১;৩১ পদ। ঠিক তার পরেই ঈশ্বর নিজ হাতে নিজ প্রমিমূর্তিতে মানুষ নির্মাণ করলেন। এবং মানুষ নির্মাণ করেই তিনি সন্তোষ্ট ছিলেন না। তাই তিনি মানুষের জন্য অর্থাৎ আদমের জন্য উপযুক্ত সহকারিনী নির্মাণ করলেন যেন মানুষ সুখে-শান্তিতে বাস করতে পারে এবং পৃথিবী পরিপূর্ণ করতে পারে। ঈশ্বরের এই অপূর্ব নির্মাণ শৈলি যাতে ভেঙ্গে না যায় সেই জন্য ঈশ্বর বলেছিলেন; “ সুতরাং তাহারা আর দুই নয়, কিন্তু একাঙ্গ। অতএব ঈশ্বর যাহার যোগ করিয়া দিয়াছেন, মানুষ তাহার বিয়োগ না করুক- মথি ১৯;৬ পদ। ” বিবাহ বিচ্ছেদ এবং পূন:বিবাহ বিষয়টি আজ বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় একটা বিতর্কেও বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। এবং অনেককে এ বিষয় নিয়ে তর্ক করতে দেখা যায়। অনেককে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে দেখা যায়, আবার পূন:রায় বিবাহ করতে দেখা যায়। মন্ডলীর পাষ্টর এবং নেতারা এ বিষয় শিক্ষা দিতে এক প্রকার ভয় পাচ্ছেন। বিবাহ সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে বাপ্তিস্মদাতা যোহনকে প্রথমে জেলে যেতে হয়েছিল এবং পরবর্তীতে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছিল- মথি ১৪;১-১২, মার্ক ৬;৭-২৯, লূক ৯;৯ পদ।
যারা বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটিয়ে আবারও বিবাহ করেছেন, ওনাদের বিরুদ্ধে আমি কোন শাস্তি বা বিচার দাবি করছি না বরং তার চেয়ে এখানে ঈশ্বরের সত্য বাক্য প্রকাশের দাবি করছি। আমাদের অবশ্যই অবিবাহিত এবং বিবাহিতদের শিক্ষা দেওয়া উচিৎ যে ঈশ্বরের কোন বিধানে বা পবিত্র বাইবেলে বিবাহ বিচ্ছেদ নাই। অর্থাৎ পবিত্র বাইবেল কখনও বিবাহ বিচ্ছেদকে সমর্থন করে না। আমাদের সমাজের দম্পত্তিগণ যদি পবিত্র বাইবেলকে অনুস্মরণ করেন, তাহলে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাবেন না।
স্বামী এবং স্ত্রীকে তালাক দেওয়া বা পরিত্যাগ করার বিষয় পবিত্র বাইবেলের শিক্ষা:-
ঈশ্বরের নিজের কথা # আমি স্ত্রীত্যাগ ঘৃণা করি- মালাখি ২;১৬ পদ। স্ত্রী যদি ব্যভিচারও করেন, কিন্তু প্রভু আমাদের ক্ষমা করতে শিখিয়েছেন, যেন আমরা তাঁর প্রেমে থাকতে পারি। আমরা একটু ভাবি/চিন্তুা করি: যাকে একবারের দেখায় ভাল লেগেছিল, যাকে পাওয়ার জন্য দিনরাত অস্থির হয়ে থাকতাম, যার হাতের স্পর্শ পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতাম। যার হাতের রান্না খাওয়ার জন্য চুপে চুপে গিয়ে খেয়ে আসতাম, যাকে দিনে একবার না দেখলে ঘুম হইত না। যাকে পাওয়ার জন্য চুপি চুপি চিঠি দিতাম এমনকি উপহার কিনে পাঠিয়ে দিতাম। অবশেষে অনেক চেষ্টার পর যখন বিবাহের সমস্ত সিদ্ধান্ত পাকা হয়ে গেল। বিবাহের দিন তারিখ ঠিক হয়ে গেল; মন্ডলীর সাক্ষাতে এবং ঈশ্বরের সাক্ষাতে বিবাহ দিলেন। সেই দিন পাদ্রি বাবু এক অন্যকে প্রতিজ্ঞাপত্র পাঠ করালেন; বললেন, আজ হতে আমি তোমার সহায় সম্পদে, আপদে-বিপদে, রোগ-পীড়ায়, স্বাস্থে সব সময় তোমার সঙ্গে থাকিব। ঠিক এর পরেই পাদ্রিবাবু বিবাহের প্রমাণ স্বরুপ (স্বামী-স্ত্রী হিসাবে) একে অন্যকে আঙটি পড়িয়ে দেন। এর পরেও কিভাবে আমি পারি আমার স্ত্রীকে পরিত্যাগ করতে ?
বিবাহ বিচ্ছেদ কোন সমাধান নয়: আমরা একে অপরকে ক্ষমা করব কারণ প্রভু আমাদের সমস্ত পাপের জন্য অনন্ত বিনাশ থেকে রক্ষা করেছেন। তাই আমরা আমাদের পাপের জন্য ঈশ্বরের কাছে ক্ষমা চাই আর প্রভুর প্রার্থনায় যেমন বলি; “ যেমন আমরাও আপন আপন অপরাধীদিগকে ক্ষা করিয়াছি, তদ্রæপ তুমিও আমাদের অপরাধ সকল ক্ষমা কর ”- মথি ৬;১২ পদ।
বিবাহ নিমন্ত্রণ পত্রে লেখা থাকে: ঈশ্বর যাহার যোগ করিয়াছেন, মনুষ্য তাহার বিয়োগ না করুক- মথি ১৯;৬ পদ। বিবাহ অনুষ্ঠানে পাদ্রিবাবু অবশ্যই উচ্চারণ করেন: ঈশ্বরের প্রতিমূর্তিতেই তাহাকে সৃষ্টি করিলেন, পুরুষ এবং স্ত্রী করিয়া তাহাদিগকে সৃষ্টি করিলেন: ঈশ্বর কহিলেন, তোমরা প্রজাবন্ত ও বহুবংশ হও- আদি ১;২৮ পদ। বর ও কনে পালকের উপস্থিতিতে মন্ডলীর সামনে অনেক প্রতিজ্ঞা করেন, প্রতিশ্রতি দেন যা আমরা বিবাহিতরা এ মুহুর্তে স্মরণ করতে পারি যেখানে আমরা পিতা ঈশ্বরের আশীর্বাদ চাওয়া হয়েছিল। ঈশ্বর যখন দু’জনকে এক করেন অর্থাৎ একাঙ্গ ঘোষনা করেন, তখন তিনি মৃত্যু পর্যন্ত এই পরিবারের বন্ধন অটুট রাখেন।
পৃথিবীতে সমস্ত মানুষের জন্য বিশেষতঃ বিশ্বাসীদের জন্য ঈশ্বরের আইন যা কিনা পবিত্র বাইবেলে লেখা আছে আর
মন্ডলীতে শাসন ব্যবস্থা যা কিনা ঈশ্বরের বাক্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রের আইন একই ভাবে গুরুত্ব সহ পালনীয়। খ্রীষ্টীয়ান বিবাহ প্রথমতঃ ঈশ্বরের আইন এবং রাষ্ট্রের আইনের সমন্বয়ে হয়ে থাকে। খ্রীষ্টীয় মন্ডলী বিবাহ প্রান করে কিন্তু বিচ্ছেদ ঘটায় না, কারণ সেই অধিকার বা ক্ষমতা প্রভু তাঁর মন্ডলীকে দেন নি। ঈশ্বর কখনই চান না যে এই স্বামী-স্ত্রী পৃথক হউক, তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটুক। আর এই কারণ ঈশ্বর তাঁর নিজের মুখে বলেছেন, আমি স্ত্রী ত্যাগ ঘৃণা করি। স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিরোধ, দ্বন্দ, কলহ হতেই পারে কিন্তু এর সমাধান তালাক/ডিভোর্স নয়। স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে থেকেই সমস্ত বিরোধ, কলহ, দ্বন্দের সমস্যার সমাধান করতে পারে, যেন তাদের জীবন দ্বারা ঈশ্বরের গৌরব হয়। কারোর তালাক দেওয়ার ইচ্ছা হলে তিনি আদালতে যান, আর আদালতের আইনগত প্রক্রিযার মাধ্যমে তাদের তালাক হয়। কিন্তু ঈশ্বরের স্বর্গীয় প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ মন্ডলী এই জগতের নিয়মে চলে না, চলে ঈশ্বরের নিজ নিয়মেই। কারণ এই নিয়শ স্বয়ং ঈশ্বরের নিজের হাতে গড়া। খ্রীষ্টীয়ান পুরুষ ও নারীর বৈবাহিক সম্পর্ক ঈশ্বরের একমাত্র পরিকল্পনা সুসমাচারে প্রতিষ্ঠিত। আমি বিশ্বাস করি খ্রীষ্টীয় মন্ডলী কখনও একজনের দুই স্ত্রী বা দুই স্বামী রাখার অনুমতি দেন না। কারণ স্বামী ও স্ত্রীর ত্যাগপত্রের ব্যবস্থার অনুমোদন সমর্থন করে না। যারা তালাক নিয়ে থাকে, তারা আদালতের মাধ্যমে নিয়ে থাকে।
তাদের তালাক বা বিচ্ছেদের পর আবারও যদি তারা উভয়ই অন্য কাউকে বিবাহ করেন, তাহলে তাদের দুই স্ত্রী বা স্বামী-ই থেকে গেল। আবার আদালতের মাধ্যমে তালাকপ্রাপ্তরা যদি আবার অন্য কোন পুরুষ বা নারীকে বিবাহ করে, তাহলে উভয়ই ব্যভিচারে লিপ্ত হন। কেননা পবিত্র শাস্ত্র এই বিষয়ে পরিস্কার ভাবে বলে দিযেছে- মথি ১৯;৯ পদ। স্বামী ও স্ত্রীর বন্ধন এটি আমৃত্যু অর্থাৎ জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত, এই বন্ধন মৃত্যু ছাড়া ছিন্ন না। স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে কেউ যদি মারা যান তাহলে তিনি এই বন্ধন থেকে মুক্ত হন, তিনি আবারও বিবাহ করতে পারেন নতুবা ব্যভিচার করা হয়। কারণ যতদিন স্বামী জীবিত থাকেন ততদিন সধ্বা স্ত্রী ব্যবস্থা দ্বারা তাহার কাছে আবদ্ধ থাকেন। কিন্তু স্বামী মারা গেলে সে স্বামীর ব্যবস্থা হইতে মুক্ত হন। সুতরাং যদি সে স্বামী জীবিত থাকতে অন্য পুরুষের হয়, তবে ব্যভিচারিণী বলিয়া আখ্যাত হইবে। কিন্তু স্বামী মারা গেলে সে ঐ ব্যবস্থা হইতে স্বাধীন হন; অন্য স্বামীর হইলেও ব্যভিচারিণী হইবেন না- রোমীয় ৭;২-৩ পদ। স্বামী জীবিত থাকিতে যদি কোন স্ত্রী অন্য পুরুষের সঙ্গে সংসার করে তবে তা হবে ঈশ্বরের বিধান অনুযায়ী ব্যভিচার। একই ভাবে স্ত্রী জীবিত থাকতে যদি কোন স্বামী অন্য নারীর সঙ্গে সংসার করেন, তাহলে সেটাও ব্যভিচার।
মনে রাখতে হবে যে, ঈশ্বরের সিদ্ধান্তই চুরান্ত। ‘ যদি চলিয়া যায় তবে সে অবিবাহিতা থাকুক কিন্বা স্বামীর সহিত সন্মিলিতা হউক। আর স্বামীও স্ত্রীকে পরিত্যাগ না করুক- ১ করি ৭;১১ পদ।
প্রভু যীশু স্ত্রী পরিত্যাগ সম্পর্কে কি বলেছেন:
‘ আর ফরীশীরা তাঁহার নিকটে আসিয়া পরীক্ষা ভাবে তাঁহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, যে সে কারণে কি আপন স্ত্রীকে পরিত্যাগ করা যায় ? তিনি উত্তর করিলেন, তোমরা কি পাঠ কর নাই, সৃষ্টিকর্তা আদিতে পুরুষ ও স্ত্রী করিয়া তাহাদিগকে নির্মাণ করিয়াছিলেন আর বলিয়াছিলেন, এই কারণ মনুষ্য আপন পিতা ও মাতাকে ত্যাগ করিয়া আপন স্ত্রীতে আসক্ত হইবে; এবং সেই জন একাঙ্গ হইবে। সুতরাং তাহারা আর দুই নয়, একাঙ্গ। অতএব ঈশ্বর যাহার যোগ করিয়া দিয়াছেন, মনুষ্য তাহার বিয়োগ না করুক ’- মথি ১৯;৬ পদ।
যিহুদীদের ধর্মীয় নেতারা এসে যীশুকে প্রশ্ন করেছিল- স্ত্রীকে তালাক বা পরিত্যাগ করা কি আইন সম্মত কি না ? তাদের প্রশ্নের উত্তরে যীশু ঈশ্বরের আইনের কথা বলেছেন- ঈশ্বর দু’জনকে একাঙ্গ করেছেন। এটা ঈশ্বরের কর্ম, ঈশ্বরের আশীর্বাদ, তাই ঈশ্বর যাহা যোগ করেছেন, মানুষ তা বিয়োগ না করুক।
ঈশ্বর সব সময়ই স্বামী ও স্ত্রীর তালাক বা পরিত্যাগের বিপক্ষে, কিন্তু তাদের দু’জনের একাঙ্গের পক্ষে। ঈশ্বর চান এই বন্ধন জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত অটুট থাকুক। যীশু তাদের আরও বলেন, তোমাদের অন্তঃকরণ কঠিন বলিয়া মোশি তোমাদের আপন আপন স্ত্রীকে পরিত্যাগ করিবার অনুমতি দিয়াছিলেন। কিন্তু আদি হইতে এইরুপ হয় নাইমথি ১৯;৭ পদ।
মোশির ব্যবস্থায় স্ত্রী পরিত্যাগের বিধান: যিহুদী নেতারা ঐ রেফারেন্সটাই তুলে ধরেন। মোশির ঐ ব্যবস্থায় কেন স্ত্রী ত্যাগের বিষয় বলা হয়েছে তার ব্যাখ্যা যীশু দেন, আর তা হল:- যিহুদীদের অন্তর কঠিন, সেজন্য কিন্তু ব্যবস্থার পূর্বে সৃষ্টির শুরু থেকে এই স্ত্রী ত্যাগের অনুমতি ছিল না। সে কথাই যীশু যিহুদী নেতাদের স্মরণ করিয়ে দেন। যীশু আরও বলেন, আর আমি তোমাদিগকে কহিতেছি, ব্যভিচার দোষ ব্যতিরেকে যে কেহ আপন স্ত্রীকে পরিত্যাগ করিয়া অন্যকে বিবাহ করে, সে ব্যভিচার করে। এবং যে ব্যক্তি সেই পরিত্যাক্তা স্ত্রীকে বিবাহ করে, সেও ব্যভিচার করে।
যীশু একটা কারণ উল্লেখ করে যিহুদীদের বলেছেন, যদি কোন স্ত্রী ব্যভিচার করে, তাহলে স্বামী ব্যভিচারী স্ত্রীকে তালাক দিতে আইনগত পদক্ষেপ নিতে পারে। আর এই একটা কারণ ছাড়া ডিভোর্সের কোন সুযোগ নাই। যদি কোন স্ত্রী বা স্বামী ব্যভিচারে রা পড়ে আর উপযুক্ত প্রমাণে প্রমাণীত হয় যে, তিনি ব্যভিচারী. এক্ষেত্রে অবশ্যই কোন প্রকার গুজবে বিশ্বাস করা যাবে না।
যদি একজন স্ত্রী বা স্বামী একে অপরকে ক্ষমা করতে না পারে. অনুতাপ করার যথেষ্ট সুযোগ দেওযার পরেও কোন পরিবর্তন না হয়, তাহলে অন্তর কঠিন পাপে সেচ্ছায় জীবন কাটাতে থাকুক। যদি আর কোন ভাবেই কেউ কারোর সঙ্গে সংসার করতে রাজি না হয়, আর এক্ষেত্রে বড় ধরণের কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্বে এক সেকেন্ড সময় থাকা অবধি যদি মন পরিবর্তন হয়, অবশ্যই তা ঈশ্বরের গৌরবের জন্য তা বন্ধ রাখার জন্য যতœশীল হওযা একান্ত জরুরী। অতএব তোমরা আপন আপন আত্মার বিষয়ে সাবধান হও, এবং কেহ আপন যৌবনকালীন স্ত্রীর প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা না করুক- মালাখি ২;১৫ পদ।
ঈশ্বর এখানে স্বামী ও স্ত্রীর বিবাহের কথা স্মরণ করিয়ে দেন যেন আমরা নিজ আত্মার বিষয়ে সতর্ক হই, কেননা আমরা যা করতে যাচ্ছি, তা খুবই দুঃখজনক এবং ঈশ্বরের দৃষ্টিতে ঘৃণার কাজ। ঈশ্বরের সন্তান হিসাবে এটি করা আমাদের জন্য উপযুক্ত নয়। আর সে জন্য সতর্ক হয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিৎ। ঈশ্বর বলেছেন, যে স্ত্রী এবং স্বামীর ডিভোর্স বা তালাক হওয়াটা বিশ্বাসঘাতকতা আর প্রতারণা; কারণ স্বামী ও স্ত্রী বিবাহের সময় খ্রীষ্টীয় মন্ডলীতে ঈশ্বরের সম্মুখে, বিশ্বাসী এবং পরিজনদের সম্মুখে এই স্বীকারোক্তি দিয়েছিল যে, সুখে ও দুঃখে, সহায় সম্পদে, আপদে-বিপদে, রোগ-পীড়ায় স্বাস্থে একসঙ্গে মৃত্যু পর্যন্ত , জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ঈশ্বরের গৌরবের জন্য বৈবাহিক জীবন যাপন করব। কিন্তু যখন কোন পক্ষ ডিভোর্সের বা তালাকের সিদ্ধান্ত নেয়, তখন এটা অপর পক্ষের এবং ঈশ্বরের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়, যার পরিণতি খুবই ভয়ানক। যার করুন ফলাফল ভোগ করে তাদেরই সংসারের নিস্পাপ শিশু সন্তানেরা। পাঠ করুন: ১ করি ৭;১০-১৬, ৩৯ পদ। একজন প্রভুতে বিশ্বস্তমন্ডলীর পালক কখনও কোন তালাকপ্রাপ্তকে পূণরায় বিবাহ দিবেন না। তিনি প্রভুর আদেশে বিশ্বস্ত থাকবেন কিন্তু আদালতের মাধ্যমে বিচ্ছেদ হয়েছে বলে ঈশ্বরও যে সেই বিচ্ছেদ গ্রাহ্য করবেন, তা পালক মশায় মেনে নেবেন না বলে আমি বিশ্বাস করি। কারণ পালক প্রভুর আদেশে বাধ্য, তিনি জানেন, ঈশ্বর যাহা যোগ
করেছেন, মানুষ তা বিয়োগ করতে পারে না। তাই দুই কিন্বা ততোধিক স্ত্রী থাকা কোন ব্যক্তির কখনও অভিষিক্ত পালক বা প্রচারক হওয়ার যোগ্যতা থাকে না।
পালকের অন্যান্য অনেক যোগ্যতার সাথে এই একটি বিশেষ যোগ্যতা হল, তিনি কেবল এক স্ত্রীর স্বামী হবেন। “ যদি কেহ অধ্যক্ষ পদের আকাঙ্খী হন, তবে তিনি উত্তম কার্য বাঞ্জা করেন। অতএব ইহা আবশ্যক যে, অধ্যক্ষ অনিন্দনীয়, এক স্ত্রীর স্বামী, ---- হউন- ১তীম ৩;১-৩ পদ।
উপসংহার:- স্বামী ও স্ত্রী ঈশ্বরের আশীর্বাদ:-সূর্যের নীচে ঈশ্বর তোমাকে অসার জীবনের যত নি দিয়াছেন, তোমার সেই সমস্ত অসার নি থাকিতে তুমি আপন প্রিয়া স্ত্রীর সহিত সুখে জীবন যাপন কর। কেননা জীবনের মধ্যে, এবং তুমি সুেের্যর নীচে যে পরিশ্রমে পরিশ্রান্ত হইতেছ, তাহার মধ্যে ইহাই তোমার অধিকার- উপদেশক ৯;৯ পদ। বিবাহ বিচ্ছেদ করাটা মারাত্তক পাপ, আবার তারা (স্বামী-স্ত্রী) জীবিত থাকা অবস্থায় অন্য কাউকে বিবাহ করতে পারে না। তবে কেউ যদি বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটিয়ে থাকেন এবং এখনও পর্যন্ত পূণ:বিবাহ করেন নি, তাদের ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বস্ত থেকে আর বিবাহ না করাই ভাল। কিন্তু মনে রাখতে হবে যে, ঈশ্বর স্ত্রীত্যাগ ঘৃণা করেন।
লেখক: Pastor Kishor Talukder
ডিভোর্স সম্পর্কে
ReplyDelete