ঈশ্বর সর্বত্র বিদ্যমান, তাঁর স্বভাব এবং স্বভাবগত বৈশিষ্ট্য

ads20
    আমরা জানি ঈশ্বর তাঁর আপন প্রতাপে, মহাপরাক্রমে ও বিস্তারিত বাহু দ্বারা আকাশমন্ডল ও পৃথিবী সৃষ্টি করিয়াছেন। তাঁর অসাধ্য কিছুই নাই। তিনি সর্বদাই আমাদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন,আছেন, থাকবেন। তার উপস্থিতি অনুভব করি বা না করি তিনি সর্বত্র বিদ্যমান । তাঁর বৈশিষ্ট্য তিনি সর্বশক্তিমান,সর্বত্র-বিদ্যমান,সর্বজ্ঞতা। ঈশ্বরের চারটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে ।
    ১। ঈশ্বর সর্ব শক্তিমান : পুরাতন নিয়মে দেখতে পাই অব্রাহমের স্ত্রী,সারা তার জীবনে অনেক ভ্রমন করেছেন। তিনি তার স্বামীর জন্য ও তার জন্য সদাপ্রভুকে অনেক আশ্চর্য কাজ করতে দেখেছেন । কনে হিসাবে তিনি সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় জয়ী হতে পারতেন,কিন্তু তখন এই বয়স্কা মহিলা বয়সের ভারে নূয়ে পড়েছেন,তার চামড়া কুঁচকে গিয়েছে। তিনি যখন শুনলেন আগন্তক তার স্বামীকে বলেছেন তিনি শীঘ্রই অন্ত:সত্তা হবেন তখন তিনি হাসলেন। অসম্ভব বললেন। হাঁসবার জন্য কি আমরা সারাকে দোষ দেব ? কিন্তু সেই স্বর্গীয় আগন্তক প্রশ্ন করেছিলেন, কোন কর্ম কি সদাপ্রভুর অসাধ্য ?(আদি ১৮:১-১৫ পদ)। এখানে সদাপ্রভু অব্রাহাম ও সারাকে কোন ঐশ্বরিক বৈশিষ্ট্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন? তাঁর সর্বশক্তিমত্তার বিষয় অর্থাৎ এই যে, তিনি সর্বশক্তিমান বা সর্ব ক্ষমতার অধিকারী। তিনি যে কোন কিছু করতে পারেন। পবিত্র শাস্ত্রে ঈশ্বরের চরম ক্ষমতার কথা প্রকাশ করেছেন যা নি¤েœ প্রদান করা হলো-
    ক) সৃষ্টি কাজ---আদিপুস্তক ১:১।
    খ) তাঁর শক্তিশালী বাক্যের দ্বারা সবকিছু ধারণ----ইব্রীয় ১:৩ পদ।
    গ) লোকদের উদ্ধার সাধন---লুক লিখিত সুসমাচার ১:৩৫,৩৭ পদ।
    ঘ) আশ্চর্য কাজ--- লুক ৯:৪৩ পদ।
    চ) পাপীদের পরিত্রান---১করিন্থীয় ২:৫, ২য় করিন্থীয় ৪:৭ পদ।
    ছ) তাঁর রাজ্যের জন্য তাঁর উদ্দেশ্য পূর্ণ করণ----১ পিতর ১:৫ পদ।
    ঈশ্বরের স্বভাবের সাথে অত্যন্ত সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি সত্য হলো তিনি ইচ্ছা করলে তাঁর ক্ষমতার কাজকে সীমাবদ্ধ করতে পারেন। উদাহরণ স্বরুপ ঈশ্বর প্রত্যেক ব্যক্তিকে তাঁর ও শয়তানের মধ্যে কোন একজনকে অনুসরন করবার স্বাধীনতা দেন। ঈশ্বর নিজ ইচ্ছার বিরুদ্ধে উদ্ধারের জন্য জোর খাটান না। ঈশ্বর নিজেকে সীমাবদ্ধ করার দ্বারা প্রত্যেক ব্যক্তিকে নিজ নিজ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে দেন।
    ২। ঈশ্বর সর্বত্র বিদ্যমান :
    একটা ছোট ছেলে একবার বলেছিলো যে, সে কোন একটা মন্দ কাজ করতে চায়, কিন্তু যাতে স্বর্গ খেকে তাকে দেখতে না পান সেজন্য কোন ছাদের নীচে গিয়ে কাজটা করা ভাল। এই শিশুটি কোন ঐশ্বরিক বৈশিষ্ট্যের বিষয় বুঝতে পারেনি। এই সত্যটি সে বুঝতে পারেনি যে ঈশ্বর সর্বত্র বিদ্যমান, তিনি সর্বময়, সব জায়গাতে আছেন। গীতসংহিতা ১৩৯:৭-১০ পদে আছে আমি তোমার আত্মা হইতে কোথায় যাইব? তোমার সাক্ষাত হইতে কোথায় পালাইব? যদি স্বর্গে উঠি, সেখানে তুমি, যদি পাতালে শয্যা পাতি,দেখ, সেখানে তুমি। যদি অরুণের পক্ষ অবলম্বন করি, যদি সমুদ্রের পরপ্রান্তে বাস করি, সেখানেও তোমার হস্ত আমাকে চালাইবে, তোমার দক্ষিণ হস্ত আমাকে ধরিবে।
    তার মানে এই নয় যে, তিনি সকলের সাথে তাঁর এই সম্পর্ক বিদ্যমান। যারা তাঁকে ভালবাসে ও তাঁর সেবা করে তাদের কাছে তিনি নিজেকে প্রকাশ করবেন। তাদের আর্শীবাদ করবেন ও উৎসাহ দান করবেন কিন্তু যারা তাঁর বিরোধীতা করে তিনি তাদের তিরস্কার করবেন ও শাস্তি দিবেন । ঈশ্বর সর্বদাই আমাদের মাঝে আছেন । তাছাড়া আমাদের আরও মনে রাখতে হবে যে, আমাদের সঙ্গে ঈশ্বরের উপস্থিতির পরিমান হিসাবে আমরা আমাদের অনুভুতিকে ব্যবহার করতে পারি না। আমরা যেমন অনুভব করি না কেন ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে আছেন। মনে করুন রাতের অন্ধকারে একটা ছোট মেয়ে কাঁদছে আর তার মা তাকে আশ্বস্ত করে বলছেন যে তিনি তার সঙ্গে আছেন। মেয়েটি ভাবতে পারে যে, তার মাকে চোখে দেখবার দ্বারাই সে নিশ্চিত হতে পারে যে মা সেখানে আছেন। কিন্তু অন্ধকারের জন্য সে তার মাকে দেখতে পায় বা নাই পায়, তাতে তার মায়ের উপস্থিতির কোন পরিবর্তন হবে না। আমাদের বেলায়ও সেইরুপ। আমরা ঈশ্বরের উপস্থিতি অনুভব করতে পারি বা নাই পারি,বাইবেল আমাদের বলে যে, তিনি সর্বত্র বিদ্যমান। এইটুকু জানাই আমাদের পক্ষে সর্বদা প্রশংসার ও সাহসের মনোভাব বজায় রাখবার জন্য পর্যাপ্ত।

    ৩। ঈশ্বরের সর্বজ্ঞতা:
    ঈশ্বর সর্বত্র বিদ্যমান ও তিনি সব কিছুই জানেন। মানুষ বিভিন্ন তথ্যাবলী জানবার জন্য কঠোর পরিশ্রম করে থাকে । জ্ঞানার্জনের জন্য অধ্যয়ন করবার দ্বারা আমরা বিভিন্ন তথ্য আহরণ করি, কিন্তু অনেক সময় আমরা যত বেশী জ্ঞানার্জন করি ততই বেশী করে বুঝতে পারি আমরা কত কম জানি । কিন্তু ঈশ্বরের বেলায় এই রূপ সমস্যা নেই। তিনি সবকিছুই জানেন। এই মহা বিশ্বের শাসন কর্তা অসীম জ্ঞানের অধিকারী । এই বিষয়টি বুঝে ওঠা আমাদের পক্ষে অসম্ভব হলেও ঈশ্বরের সিদ্ধতায় বিশ্বাসের জন্য তা আমাদের জন্য একান্ত আবশ্যক । যুক্তি সংগতভাবে যা আমরা প্রকৃত এবং যা কিছু সম্ভব তিনি অবশ্যই তার সবই জানবেন। অন্যথায়  তিনি আগে যেসব বিষয় জানতেন না সেগুলোর বিষয়ে অনবরত অবগত হবেন এবং তাকে তঁাঁর পরিকল্পনা ও উদ্দেশ্যকে তদনুযায়ী খাপ খাইয়ে নিতে হবে। তিনি যেহেতু আগে থেকেই সব জানেন ও দেখতে পান, সেইহেতু তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করতে, অর্থাৎ ভবিষ্যতে কি ঘটবে তা বলতে পারেন। ঈশ্বর সব কিছুই জানেন,কঠিন দু:খ কষ্টের মধ্যে এই সত্যটি আমাদের বিশ্বাসকে শক্তিশালী করে তুলবে, যেহেতু আমাদের সমস্যা গুলি সম্বন্ধে তিনি আমাদের চেয়েও বেশী জানেন। তিনি সমস্যাগুলির কারণ এবং আমরা যে সমস্ত সমাধান গ্রহণ করতে পারি সেগুলির ফল কি হবে তাও তিনি জানেন । আমাদের সমস্যাগুলির সঠিক সমাধান নির্বাচনের ব্যাপারে তাঁর পরিচালনা বা পথ-নির্দেশ চাওয়ার দ্বারা এই সত্যটি থেকে আমরা মহা নিশ্চয়তা লাভ করতে পারি।

    ৪। ঈশ্বরের প্রজ্ঞা :
    বহু জ্ঞানী বিজ্ঞানী সাধারন জ্ঞানের অধিকারী । কিন্তু এই জগতের সমুদয় জ্ঞান সমাজের সমস্যাবলী সমাধান করেনি যাতে সকলে শান্তি ও সমৃদ্ধির মধ্যে বাস করতে পারে । তাদের জ্ঞানকে তাদের সমস্যাবলীর ক্ষেত্রে ব্যবহার করবার মত প্রয়োজনীয় প্রজ্ঞা লোকদের নেই। প্রজ্ঞা এবং জ্ঞান এক জিনিষ নয়। তা সম্ভাব্য সর্বোচ্চ উদ্দেশ্যটি খূঁজে বের করবার জন্য জ্ঞানের মধ্যদিয়ে অনুসন্ধান করে, তারপর তা অর্জনের জন্য সবচেয়ে ভাল পথটি ব্যবহার করে। ঈশ্বর যেহেতু সর্বজ্ঞ, তাই সব কিছুই তিনি সুন্দর ভাবে করেন। তিনি তাঁর পরিপূর্ণ প্রজ্ঞায় আমাদের তাঁর বাক্য অর্থাৎ বাইবেল দিয়েছেন যেন তা থেকে আমরা আমাদের সমস্ত কাজে পথ নির্দেশ লাভ করতে পারি। তাঁর বাক্যের নির্দেশাবলী অনুসারে জীবন যাপন করলে আমরা তাঁর প্রজ্ঞা থেকে উপকৃত হব ও তার আর্শীবাদ লাভ করব। অনেক সময় আমাদের জীবনে কোন কোন বিশেষ ঘটনা ঘটতে দেওয়ার মধ্যে আমরা ঈশ্বরের প্রজ্ঞা দেখতে ব্যর্থ হই। প্রথমেই আমাদের মনে রাখতে হবে যে, ঈশ্বর আমাদের নিজেদের পছন্দমত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে দেন, আর আমাদের মনোনয়নগুলি যদি তাঁর ইচ্ছানুরুপ  না হয়, তা হলে আমরা নিজেদের উপরে সমস্যার বোঝা ডেকে আনতে পারি। আমাদের আরও মনে রাখতে হবে যে, আমরা এক পাপপূর্ণ জগতে বাস করি, আর নন খ্রীষ্টিয়ানদের মত খ্রীষ্টিয়ানদেরও অনেক সময় এই পাপ-দুষ্ট জগতে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিম্বা অন্য লোকদের অসৎ কর্মের শিকার হতে হয়। সব কিছু এই পথে ঘটেছে কেন, তার যথাযথ ব্যাখ্যা দেবার জন্য  ঈশ্বর আমাদের কাছে আসতে বাধ্য নন। তিনি এমন সব কারণে বিভিন্ন ঘটনা ঘটাতে পারেন যেগুলির বিষয়ে আমরা একেবারেই অজ্ঞ ।কিন্তু ১ম যোহন ৪:৮পদ যেমন বলে,পরিপূর্ণ ভালবাসা সমস্ত ভয়কে দুর করে দেয়,” ঈশ্বর তার অসীম প্রজ্ঞায় সব কিছুই আমাদের মঙ্গলের এবং তাঁর গৌরবের জন্য সম্পন্ন করবেন ।,এটা জেনে আমরা সব রকম পরিস্থিতিতে ঈশ্বরের উপরে পূর্ণরুপে নির্ভর করতে পারি-রোমীয় ৮:৮ পদ । গীতসংহিতা ১০৪:২৪-৩০ পদে এবং যিরমিয় ১০: ১২ পদে আমাদের স¥রন করিয়ে দেয় যে, আমরা তাঁর সৃষ্টির মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের প্রজ্ঞা দেখতে পাই।

    ঈশ্বরের নৈতিক বৈশিষ্ট্য ও তাঁর কার্যাবলী : ঈশ্বর সব জানেন বলে তাঁর পক্ষে কোন বুদ্ধিগত ভুল করা অসম্ভব ।  আর তিনি পবিত্র বলে তাঁর পক্ষে কোন নৈতিক ভুল করাও অসম্ভব । পবিত্রতা ঈশ্বরের এমন একটি বৈশিষ্ট্য যা তাঁর সব কিছুর সিদ্ধতা বা নিখুতত্ব প্রকাশ করে। তা হচ্ছে তাঁর সমস্ত কিছুর সিদ্ধতা বা নিখুতত্ব প্রকাশ  করে। তা হচ্ছে তাঁর সমস্ত কাজের ভিত্তি। ফলে তিনি যা কিছু করেন সবই ঠিক এবং ভাল ।  পবিত্রতা এই শব্দটির মধ্যে পৃথক বা আলাদা হওয়ার ধারণা রয়েছে । সিদ্ধ ও ঐশ্বরিক সত্তা বিশিষ্ট ঈশ্বর,পাপী মানুষ এবং মন্দতা থেকে পৃথক এবং অনেক উচুতে । তিনি যদিও সম্পূর্ণ পবিত্র এবং তাঁর সৃষ্টি থেকে পৃথক,তথাপি তিনি লোকদের সাথে এমন এক সম্পর্ক রক্ষা করেন যার মাধ্যমে তিনি তাদের একান্ত কাছে অবস্থান করেন। ঈশ্বরে প্রতিটি মনোভাব এবং কাজে আমরা তাঁর পবিত্রতা দেখতে পাই । যা ভাল তার প্রতি ভালবাসা এবং যা মন্দ তার প্রতি ঘৃনা তাঁর এই পবিত্রতার অর্šÍভুক্ত । অতএব ঈশ্বর ধার্মিক জীবন ও সততায় আনন্দ করেন, কিন্তু পাপ ও মন্দতা থেকে নিজেকে পৃথক রাখেন। মানুষের পাপপূর্ণতার কারণেই ঈশ্বরের পক্ষে লোকদের কাছ থেকে নিজেদের পৃথক রাখা প্রয়োজন। পুরাতন নিয়মে বহুবার এই সত্যটির প্রতি ইংগিত করা হয়েছে। ঈশ্বর মোশিকে সীনয় পর্বতের চারদিকে বেড়া দিতে বলেছিলেন (যাত্রা ১৯:১২-১৩, ২১-২৫ পদ) তিনি ই¯্রায়েল জাতির লোকদের বুঝাতে চেয়েছেন যে পাপী লোকদের অবশ্যই পবিত্র ঈশ্বরের কাছ থেকে পৃথক করা হবে।  পুরাতন নিয়মের আরও অনেক শাস্ত্রাংশে ঈশ্বরের পবিত্রতার  বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। যিশাইয় ৬: ৫-৭, ৫৯:২, ইয়োব ৪০:৩-৫, যাত্রা পুস্তক ২৬: ৩৩ পদ। ধার্মিকতা ও ন্যায়পরায়নতা ঈশ্বরের পবিত্রতারই একটি প্রত্যক্ষ ফল । এগুলি ঈশ্বরের পবিত্রতারই অংশ, লোকদের সাথে তাঁর আচার ব্যবহারের মধ্যে যা দেখা যায়। ধার্মিকতার দ্বারা ঈশ্বরের পবিত্রতা প্রকাশিত হয়,অর্থাৎ তিনি জগতে এক নৈতিক শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন। অন্য দিকে তিনি ন্যায়পরায়নতা দ্বারা তাঁর পবিত্রতা প্রকাশিত হয়। তিনি ন্যায্য পথে তাঁর আইন প্রয়োগ করেন । যারা তাঁর আইন কানুন  পালন করে তিনি তাদের পুরস্কার দেন, আর যারা সেগুলো অমান্য করে তাদের শাস্তি দেন। ঈশ্বর তাঁর লোকদের মধ্যে পবিত্রতা ভালবাসেন, আর এর দ্বারা তাঁর ধার্মিকতা প্রকাশিত হয় । তিনি যে পবিত্র ঈশ্বর তা-ই শুধু নয়, তিনি চান তাঁর লোকেরার পবিত্র হবে।
    ঈশ্বরের ভালবাসা : 
    ঈশ্বর আমাদের কত ভালবাসেন ব্যবহারিক ভাবে তিনি আমাদের তা দেখান । অনেকে মঙ্গলভাব(ভাল স্বভাব),করুনা,ধৈর্য এবং বিশ্বস্ততাকে ঈশ্বরের ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্য বলে গণ্য করে থাকেন,কিন্তু আমি এগুলোকে তাঁর ভালবাসারই একটি অংশ বলে মনে করে থাকি। পুরাতন নিয়মে দায়ুদ,যিশাইয় এবং যিরমিয় ঈশ্বরকে একজন পিতা হিসেবে তুলে ধরেছেন । ঈশ্বরের মধ্যে তারা একজন উত্তম পিতার গুনাবলী লক্ষ্য করেছেন। দায়ুদ অনেক জায়গায় বলেন যে, ঈশ্বর তাঁর সন্তানদের প্রতি দয়ালু । যিশাইয় ঈশ্বরকে এজন্য করুনাময় পিতা রুপে মনে করেছেন-যিশাইয় ৬৩:১৬,৬৪:৮পদ। যিরমিয় ঈশ্বরকে এমন একজন পিতা রুপে দেখেছেন,যিনি তাঁর অবাধ্য সন্তানদের শাস্তি দেয়ার পরে তাদের বাড়ীতে ফিরিয়ে নিয়ে যান-যিরমিয় ৩১:৭-৯ পদ । নতুন নিয়মে আমরা ঈশ্বরের ভালবাসার সর্বশ্রেষ্ঠ উদাহরণ পাই। আমাদের পাপের বেতন  পরিশোধের জন্য যীশু খ্রীষ্টকে পৃথিবীতে পাঠান। পাপের বেতন যে কত ভয়াবহ তা তিনি প্রকাশ করেন। ঈশ্বর আমাদের এত অধিক ভালবাসেন বলে আমরা জানি যে, আমরা যদি তাঁকে ভালবাসি তবে তিনি আমাদের জীবনে এমন কিছুই ঘটতে দেবেন না যাকে আমাদের চরম মঙ্গলের জন্য ব্যবহার করা যায় না। যে কোন পরিস্থিতিতে আমরা তার ভালবাসা সম্পর্কে নিশ্চিত থাকতে পারি। তাঁর ভালবাসা আমাদেরকে ভয় এবং যন্ত্রণা থেকে উদ্ধার করে- ১ম যোহন ৪:১৮, ২ তীমথিয় ১:৭ পদ। ঈশ্বরের ভালবাসা সম্পর্কে বাইবেলে অসংখ্যবার আমরা দেখতে পাই যার কোন হিসেব নাই।


    উপসংহার :
    ঈশ্বর সাধারনত:স্বাভাবিক প্রাকৃতিক নিয়ম অথবা আমাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেন না। প্রত্যেকেই এমন এক জগতে বাস করি যেখানে প্রত্যেক ব্যক্তিকে বিভিন্ন দূর্ঘটনা ও পরিশেষে মৃত্যুর সম্মুখীন হতে হয়। আমাদের লক্ষ্য জীবন সম্পর্কে আমাদের ধারণা পূর্ণ করা নয়, কিন্তু ঈশ্বরের গৌরব জনক পথে জীবন যাপন করা । আমাদের প্রতি ঈশ্বরের ভালবাসা কখনও পরিবর্তিত হয় না, আর তিনি সব কিছুতে আমাদের মঙ্গল করেন। ঈশ্বরের এই স্বাভাবিক নিয়মে আপনার ও আমাদের প্রত্যেকের জীবনে তাঁর ভালবাসার আর্শীবাদ বর্ষিত হউক । আমেন।

    আইভান সমদ্দার

    পরিচিতদেরকে জানাতে শেয়ার করুন

    আপনার জন্য আরো কিছু পোস্ট

    RELATED ARTICLES

      ADS