ষষ্ঠ বাণী ‘‘সমাপ্ত হইল’’

ads20

     ষষ্ঠ বাণী ঃ“সমাপ্ত হইল”

    যোহন ১৯ ঃ৩০

    “সমাপ্ত হইল” এ বাণীটি খ্রীষ্ট আর একবার বলেছিলেন শিষ্যদের জন্য তার বিখ্যাত প্রার্থনায় তিনি তার পিতাকে বলেছিলেন, “তুমি আমাকে যে কার্য করিতে দিয়াছ, তাহা সমাপ্ত করিয়া আমি পৃথিবীতে তোমাকে মহিমান্বিত করিয়াছি (যোহন ১৭ : 8)। স্রীষ্ট আরও ঘোষণা করেছিলেন যে তার মাধ্যমেই পিতা ঈশ্বর সব কাজ সম্পন্ন করেন (যোহন ১৪ঃ ১০)।

    প্রভু যীশু খ্রীষ্ট এই জগতে এসেছিলেন যেন পিতার নির্দেশিত কাজ সুসম্পন্ন করেন। পিতার ইচ্ছা পালনই ছিল তার আসল কাজ। আর এ কাজে প্রভূ বীশু ছিলেন শতভাগ বিশ্বস্ত। ষষ্ঠ বাণী অনুসারে নিম্নে বর্ণিত প্রভু যীশুর কয়েকটি প্রধান কাজ আমরা দেখতে পাই, যা তিনি সমাপ্ত করেছেন ঃ


    কে) সকল দুঃখ-যন্ত্রণার অবসান করলেনঃ
     জগতের পাপরাশি বহনকারী খ্রীষ্টের নিন্দা-নির্যাতন, নারকীয় মৃত্যু-যন্ত্রণার পরিসমান্তি ঘটল। দুঃখভোগের পানপান্র পূর্ণ হয়েছিল কানায় কানায়। পাপের নিন্দা-নিরাশা, অপমান, অশান্তির সকল গরল তিনি নিঃশেষে পান করেছেন, যেন আমাদের তা আর পান করতে না হয়। আমাদের পক্ষে যন্ত্রণা সকল তিনিই কীধে তুলে নিয়েছেন, যেন আমাদের তার ভার বহন করতে না হয়। অশান্তির অগ্নিতে তার অন্তরাত্মা দগ্ধ হয়েছিল যেন আমরা শাস্তি পাই।

    খে) যীশু শ্রষ্টের মাধ্যমে ঈশ্বর প্রকাশিত হলেন ঃ
     প্রভু যীশু মর্তে এসেছিলেন অদৃশ্য ঈশ্বরকে প্রকাশ করতে। শ্রীষ্টের জীবন, দুঃখভোগ ও মৃত্যুর মধ্য দিয়ে মানুষ বুঝতে পেরেছে ঈশ্বর কত প্রেমময়, দয়াশীল ও ক্ষমাবান। “আর সেই বাক্য মাংসে মূর্তিমান হইলেন এবং আমাদের মধ্যে বাস করিলেন, আর আমরা তাঁহার মহিমা দেখিলাম, যেমন পিতা হইতে আগত একজাতের মহিমা; তিনি অনুথহে ও সত্যে পূর্ণ" (যোহন ১ : ১৪)। “ঈশ্বরকে কেহ কখনও দেখে নাই; একজাত পুত্র, যিনি পিতার ক্রোড়ে থাকেন, তিনিই তাহাকে প্রকাশ করিয়াছেন” (যোহন ১ ঃ ১৮)। “তুমি আমাকে যে কার্য করিতে দিয়াছ, তাহা সমাপ্ত করিয়া আমি পৃথিবীতে তোমাকে মহিম্বানিত করিয়াছি” (যোহন ১৭ ঃ 8)। যীশু বলেন, “আমি ও পিতা, আমরা এক” (যোহন ১০ : ৩০)। অবিশ্বাসী থোমার সন্দেহ নিরসন হওয়ার পর তিনি পুনরুখিত খ্রীষ্টের চরণে প্রণত হয়ে বলেছিলেন, “প্রভু আমার, ঈশ্বর আমার” (যোহন ২০ :২৮)।

    (গ) অদৃশ্যকে করলেন দৃশ্যমান :
     মানবের পরিত্রাণের জন্য সকল বলি সমাপ্ত করেছেন। পশু বলিদানের আর প্রয়োজন নেই খরষ্ট তার অমূল্য রক্ত সেচন করেছেন, যেন চিরকাল তারই মূল্যে মানুষ পরিত্রাণ লাভ করে। “পাপার্থক প্রতীক বা প্রতিরূপ। পুরাতন নিয়মের সেই প্রতীক এখন শ্বীষ্টের মাধ্যমে বাস্তবে রূপায়িত হলো। তাই মেষ বলিদানের আর কোনো প্রয়োজন নেই। “পুরাতন তাড়ী বাহির করিয়া দাও; যেন তোমরা নূতন তাল হইতে পার - তোমরা ত তাড়ীশৃন্য। কারণ আমাদের নিস্তারপৰ্বীয় মেষশাবক বলিকৃত হইয়াছেন, তিনি শ্রষ্ট” (১ করিত্থীয় ৫ ৪ ৭)। মন্দিরের পূজা অর্চনা ও সমস্ত প্রাচীন বিধি-ব্যবস্থা সবই ছিল ছায়ামাত্র। স্রীষ্টতেই সে সমস্ত পূর্ণ হয়েছে, সফল হয়েছে তার সম্পর্কে ভাববাদীদের সমস্ত ভবিষ্যদ্বাণী (ইবীয় ৮ : ৫;৯:৯)।

    ঘে) ব্যবস্থার যুগ সমাপ্ত করেছেন ঃ
    প্রভু যীশুর পবিত্র রক্তের গুণে মানুষ আর ব্যবস্থার অধীন নয়, কিন্তু অনুগ্রহের অধীন। “কেননা পাপের বেতন মৃত্যু; কিন্তু ঈশ্বরের অনুগহ-দান আমাদের প্রভু যীশু শ্রীষ্টেতে অনন্ত জীবন” (রোমীয় ৬ £ ২৩)। সুতরাং প্রভুর রক্তে এক নূতন নিয়ম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

    (ড) একটি আত্মিক সেতু নির্মাণ করলেন ঃ
     প্রভু যীশু খ্ীষ্টের ক্রুশ পৃথিবীর পাপী মানুষ ও স্বর্গের ঈশ্বরের মধ্যে একটি সেতু তৈরী করে দিল। এই ক্রুশ ব্যতীত পাপের কারাগারে বন্দী মানুষের মুক্তির আর কোন পথ ছিল না। সুতরাং এই ক্রুশ হলো স্বর্গ ও মর্ত্যের মিলন ও শান্তির সেতু । প্রভু যীশু বলেছিলেন, “আমিই পথ, সত্য ও জীবন; আমা দিয়া না আসিলে কেহ পিতার নিকটে আইসে না” (যোহন ১৪ : ৬)। “মহাপবিত্র স্থানের ছিন্ন পর্দা অর্থাৎ শবীষ্টের চূর্ণ-বিচূর্ণ দেহের মধ্য দিয়ে এক নতুন ও জীবন্ত পথ ব্বীষ্ট স্বয়ং আমাদের জন্য উন্মুক্ত করেছেন যেন আমরা পবিত্র ঈশ্বরের সামনে উপস্থিত হতে পারি” হৰীয় ১০ : ২০ সহজ বাংলা)।

    (চ) উশ্বরের সঙ্গে মানুষের পুনর্মিলনের কাজ সমাপ্ত হয়েছে ঃ 
    এদোন উদ্যানে মানুষের অবাধ্যতা ও পাপ তাকে ঈশ্বর থেকে বিচ্ছিন্ন করেছিল। কিন্তু ক্রুশের উপর স্রীষ্টের আত্মদান ও রক্তসেচন তাকে ঈশ্বরের সঙ্গে পুর্নমিলিত করেছে।্রী ষ্টিয় জীবন একটা অবিরত যুদ্ধের জীবন। কিন্তু অনেকেই এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে চায় না এবং যারা অংশগ্রহণ করতে চায় না, তাদের অনেকেই পরিশেষে মন্দের সাথে আপোস করে পরাজিত জীবন যাপন করে। কিন্তু প্রভু বীশ স্রীষ্ট মানুষ হয়ে এই জীবন যুদ্ধে জয়ী হয়ে দেখিয়েছেন যে, এই যুদ্ধে জয়ী হওয়া সম্ভব । শুধু যা প্রয়োজন তা হলো, সর্বাবস্থায় পিতার ইচ্ছা মেনে নিয়ে সামনে পথ-চলা। তাই আসুন, আমরা প্রভুতে নির্ভর করে এগিয়ে যাই যেন যুদ্ধ ক্ষেত্রে সমস্বরে গেয়ে উঠি “তোমার (যীশুর) হলো সারা, আমার হলো শুরু” । (রবীন্দ্রনাথের গানের কলি পরিবর্তন করে)


    পরিচিতদেরকে জানাতে শেয়ার করুন

    আপনার জন্য আরো কিছু পোস্ট

    RELATED ARTICLES

      ADS