খ্রীষ্টিয়ান শব্দ নিয়ে কম বেশি সকলেই অনেক পরিচিতি । কিন্তু খ্রীষ্টিয়ান শব্দের অর্থ কি বা এই শব্দটি কিভাবে বা কোথাই থেকে এসেছে, সে বিষয়ে আমরা অনেকেই কিছুই জানে না, এমনটি আপনি যদি একজন খ্রীষ্ট ভক্তকেও খ্রীষ্টিয়ান শব্দের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় তবে তারা এর বিষয়ে সঠিক তথ্য দিতে পারে না। তবে আমরা দেখি যে, পবিত্র বাইবেলে এই খ্রীষ্টিয়ান শব্দটি বাইবেলের ‘‘প্ররিত্র পুস্তকে এর 11 অধ্যায়ে 26 পদে প্রথম বলা হয়েছে।
আর তাঁহারা সম্পূর্ণ এক বৎসর কাল মণ্ডলীতে একত্র হইতেন, এবং অনেক লোককে উপদেশ দিলেন; আর প্রথমে আন্তিয়খিয়াতেই শিষ্যেরা ‘খ্রীষ্টীয়ান’ নামে আখ্যাত হইল।
#খ্রীষ্টিয়ান শব্দের অর্থ : খ্রীষ্টিয়ান পৃথিবীর সব থেকে বেশি মান্যতা প্রাপ্ত ধর্মের নাম। যারা প্রভু যীশু খ্রীষ্টের আদর্ বাণী/বাক্য গুলোকে অনুসরণ করে তাদের জীবনে অতিভাহিত করে। অর্থাৎ যীশু খ্রীষ্টের দ্বারা প্রচারিত ধর্ যারা পালন করে তাদের এক কথায় বলে
খ্রীষ্টিয়ান।
খ্রীষ্টিয়ান পবত্র ধর্গ্রন্থর নাম ‘‘পবিত্র বাইবেল’’ ।
উপরি উক্ত বিষয় যা আপনি জানলেন তা ছিল সাধারণ একটি ধারণা মাত্র। বাস্তবিক ভাবে খ্রীষ্টিয়ান শব্দের কয়েকটি বিশেষ বিশেষ অন্তনিহীত অর্ রয়েছে তা আমরা অনেকে জানি না। আর সেই অর্ গুলির সঠিক বিশ্লেষণ করতে হলে খ্রীষ্টিয়ান শব্দের উৎপত্তির ইতিহাস সম্পর্কে জানতে হলে আপনাকে কিছু টা অবগত হতে হবে। সকল তথ্যগুলো রয়েছে পবিত্র বাইবেলের নতুন নিয়মের বা প্রেরিত পুস্তকে রয়েছে।
খ্রীষ্টিয়ান শব্দটি মুলত দুটি গ্রীক শব্দ থেকে উৎপন্ন হয়েছে, যার প্রথমটি ‘‘ Christ'' যার অর্ হলো ক্রোশ, এবং দ্বিতীয়টি হলো ‘‘ianous’’ যার অর্ অনুসরণ করা হয়। এই দুটি শব্দ একত্রিত করলে তৈরি হয় ‘‘Christianous'' শব্দটি, যেটির মূল অর্ দাড়াই ‘‘যারা ক্রুশকে অনুসরণ করে।’’ আবার একই ভাবে লাটিন শব্দের এই শব্দটিকে বলা হয় ‘‘Christianus'', যে শব্দটিকে ল্যাটিন শব্দ আকারে সন্ধি-বিচ্ছেদ ঘটালে, দেখতে পাই,যে দুটি পৃথক শব্দ দাড়াই সেগুলির অর্ আরো প্রভাবশালি ও বিশ্লেষনাত্মক। ল্যাটিন শব্দ ‘‘Christ'' বা খ্রীষ্ট, আর‘‘ianous’’ যার অর্ গ্রহন করা , কারো উপরে নিয়ন্ত্রণ বা ভড় করা, যার ভেতর থেকে দখল করা, অথাৎ ল্যাটিন ভাষা অনুযায়ী Christian শব্দের অর্ হল‘‘ যার মধ্যে খ্রীষ্ট রয়েছে। আপনি যদি একটু ভালো ভাবে চিন্তা করেন বা লক্ষ্য করেন তাহলে দেখবেন যে গ্রীক ও ল্যাটিন দুটি শব্দ প্রায় একি রকম তবুও ভিন্ন ভিন্ন ভিন্ন অর্ বহণ করেছে। তবে মান্যতা অনুযায়ী খ্রীষ্টিয়ান শব্দের অর্থ -যারা ক্রুশকে অনুসরণ করে।

প্রভু যীশু খ্রীষ্ট স্বর্গরোহনের আগে প্রযন্ত এই শব্দটির উৎপত্তি হয়নি, কারণ প্রভু যীশুর স্বর্গরোহনের পর এই খ্রীষ্টিযান শব্দটি একটি তিরস্কার মুলক হিসাবে উৎপন্ন হয়েছিল। এই শব্দটি
উৎপত্তি হবার ঘটনাটি যতটা সহজ ও যতটা ছোট আকারে বলা যায় তার অফুরন্ত চেষ্টা করা হবে।
যীশু খ্রীষ্ট মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুস্থান করার পরও তিনি তাঁর 12 জন প্রেরিত বা শিষ্যদের আদেশ দেন, তারা যেন তার আদর্ ও বাণী গোটা বিশ্বে প্রচারে করে, সেই শিষ্যগুলোর নাম পাওয়া যায়, মথি লিখিত 10 অধ্যায়ের 2-4 পদে, সেই 12 জন শিষ্য বা প্রেরিতের নাম হলে-
প্রথম, শিমোন, যাঁহাকে পিতর বলে, এবং তাঁহার ভ্রাতা আন্দ্রিয়, সিবদিয়ের পুত্র যাকোব এবং তাঁহার ভ্রাতা যোহন, ফিলিপ ও বর্থলময়, থোমা ও করগ্রাহী মথি, আল্ফেয়ের পুত্র যাকোব ও থদ্দেয়,কানানী শিমোন এবং ঈষ্করিয়োতীয় যিহূদা, যে তাঁহাকে শত্রুহস্তে সমর্পণ করিল।
এই 12 জন শিষ্যর মধ্যে পিতর ছিলেন বয়সজ্যেষ্ঠ্য, আর সেই হিসাবে সমস্ত প্রেরিতদের নিয়ন্ত্রন বা খ্রীষ্ট ধর্ প্রচারের মূল দায়িত্ব এসে পরে পিতরের উপর। প্রথম প্রথম প্রভু যীশুর প্রেরিতরা শুধুমাত্র ইজরায়েলীদের আর উচ্চ জাতির লোকেদের খ্রীষ্ট ধর্ দিক্ষিত করতেন আর 12 জন শিষ্যদের অন্যজাতি ও ধমের লোকেরা ‘‘ খ্রীষ্টিয়ান ‘’ বলে বিদ্রুপ করতো। আর এই প্রসঙ্গে পবিত্র বাইবেল বলে-
1 পিতার 4:16 পদে -কিন্তু যদি কেহ খ্রীষ্টীয়ান বলিয়া দুঃখভোগ করে, তবে সে লজ্জিত না হউক; কিন্তু এই নামে ঈশ্বরের গৌরব করুক।
আমরা দেখতে পাই যে, যারা নিজেদের ‘‘খ্রীষ্টিয়ান ’’ হিসাবে অভিহিত করতে শুরু করে। এই ভাবে’’খ্রীষ্টিয়ান ‘’ শব্দটি একটি বিদ্রুপ কারি শব্দ থেকে ক্রমে একটি বিশেষ ধমের নামে পরিচয় লাভ করে।সবশেষে আমি যেটা বলতে চাই, যদি কেও আমাকে প্রশ্ন করে খ্রীষ্ট ধর্ম বলতে আমি কি বুঝি , তাহরে আমার উত্তর হবে খ্রীষ্ট ধর্ আমার কাছে গর্ আর গর্বের কারণ তাই এই বিষয়ে আমি পবিত্র বাইবেলের একটি উদ্ধৃতি দিতে চাই, যেটি রয়ে 1 পিতর 4:14 পদে-
তোমরা যদি খ্রীষ্টের নাম প্রযুক্ত তিরস্কৃত হও, তবে তোমরা ধন্য; কেননা প্রতাপের আত্মা, এমন কি, ঈশ্বরের আত্মা তোমাদের উপরে অবস্থিতি করিতেছেন।
****
ঈশ্বর আপনাদের সকলে মঙ্গল করুক।