বাইবেল পাঠঃ ১ থিষলনীকীয় ৪:১৩-১৮ পদ অথবা ১ করি ১৫:৫০-৫৮ পদ; অথবা প্রকাশিত ৭:১৩-১৭ পদ; যে কোন একটি বাইবেলের অংশ পাঠ করা যেতে পারে।
খ্রীষ্টিয়ান জীবনে তিনটি প্রত্যাশা এখানে প্রত্যাশা শব্দটি একটু ব্যাখ্যা করে নেওয়া ভাল। আশা হচ্ছে আগামীতে কোন একটি বিষয় পেতে পারি, আবার নাও পেতে পারি, অথবা হতেও পারে আবার নাও হতে পারে। এখানে একটি অনিশ্চয়তা থেকেই যায়। কিন্তু প্রত্যাশার বেলাতে আগামীতে কোন একটি বিষয় অবশ্যই পাব। এখানে নিশ্চয়তার উপরে জোর দেয়। তাই প্রত্যাশা হচ্ছে বিশ্বাস যুক্ত আশা। আশা+বিশ্বাস=প্রত্যাশা। অর্থাৎ পাবই বা হবেই। এই সময় আমরা তিনটি প্রত্যাশা নিয়ে আলোচনা করব।
প্রথম প্রত্যাশাঃ আমরা খ্রীষ্টের সঙ্গে মিলিত হব।
খ্রীষ্টের সঙ্গে মিলিত হওয়াই হচ্ছে খ্রীষ্টিয়ান জীবনের সব চেয়ে বড় প্রত্যাশা। ১ম থিষলনীকীয় ৪:১৩-১৮ পদে; পরিস্কার ভাবে সাধূ পৌল বলেছেন খ্রীষ্টের দ্বিতীয় আগমন হবে। সেই সময় প্রথমে যারা খ্রীষ্টেতে নিদ্রাগত হয়েছেন তাদের আত্মা রূপান্তরিত দেহ ধারন করে প্রথমে খ্রীষ্টের সঙ্গে মিলিত হবে। পরে যারা জীবিত বিশ্বাসী বর্গ রয়েছেন তারও এক পলকের মধ্যেই মাংসিক দেহ পরিবর্তিত হবে। এবং রূপান্তরিত দেহ ধারন করবে; সেই সঙ্গে সঙ্গে তারা খ্রীষ্টের সঙ্গে মিলিত হবে। প্রভু যীশু সকল বিশ্বাসীবর্গকে নিয়ে আপন রাজ্য স্থাপন করবে। এক হাজার বছর তিনি আপন রাজ্য পরিচালনা করবেন। বিশ্বাসীর জীবনে পরিত্রাণের আনন্দ লাভ করবে।
দ্বিতীয় প্রত্যাশাঃ আমরা অনন্ত জীবনের নিশ্চয়তা পাব।
খ্রীষ্টের প্রতিজ্ঞা অনুসারে আমরা সেই অনন্ত জীবন লাভ করব। যোহন ৩:১৬ পদে।‘‘কারণ ঈশ্বর জগৎকে এমন প্রেম করিলেন যে, আপনার একজাত পুত্রকে দান করিলেন, যেন, যে কেহ তাঁহাতে বিশ্বাস করে, সে বিনষ্ট না হয়, কিন্তু অনন্ত জীবন পায়” যোহন ১১:২৫-২৬পদে; যীশু তাঁহাকে কহিলেন, ‘‘আমিই পুনরুত্থান ও জীবন; যে আমাতে বিশ্বাস করে, সে মরিলেও জীবিত থাকিবে;আর যে কেহ জীবিত আছে,এবং আমাতে বিশ্বাস করে, সে কখনও মরিবে না; ইহা কি বিশ্বাস কর’?
২করি ৫:১ পদে সাধু পৌল বলেছেন‘‘আমরা পার্থিব তাম্বুতে বাস করছি’’২করি ৫:৪পদে,বলে ‘‘আর বাস্তবিক এই তাম্বুতে থাকিয়া আমরা ভারাক্রান্ত হওয়াতে আর্ত্তস্বর করতেছি’’ যোহন ১৪:১-৩ পদে, প্রভু যীশু বলেন, আমাদের নিমিত্ত বাসস্থান তৈরী করতে যাচ্ছেন।তিনিই আমাদের সেই অনন্ত কালীন বাসস্থান তৈরি করতে যাচ্ছেন। আমাদের সেই অনন্ত কালীন বাসস্থান নিয়ে যাবেন। ইব্রীয় ৮:২পদে যীশু সেই অনন্তকালীন বাসস্থানের সেবক। সুতরাং আমরা সেই অনন্ত জীবনের নিশ্চয়তা লাভ করি এবং প্রভু যীশু আমাদের সঙ্গে সার্বক্ষনিক থাকবেন ও রক্ষনা বেক্ষন করবেন।
তৃতীয় প্রত্যাশাঃ বিশ্বাসীরা সেই পরম আনন্দ ও শান্তি চিরকালের জন্য লাভ করবে।
আমরা যখনই মৃতুরূপ দরজার মধ্যদিয়ে সেই স্বর্গ রাজ্যে প্রবেশ করব; তখনই আর আমাদের কোন দুঃখ কষ্ট,শোক,যাতনা,তাড়না, করোনা ভাইরাস ,মৃত্যু,জ্বর ব্যধি,ভয় কিছুই আমাদের স্পর্শ করতে পারবেনা। আমরা তখন সেখানে পরম আনন্দে শান্তিতে বাস করতে থাকব। সেখানে থাকবেনা কোন হানাহানি, মারামারি,হিংসা,ঘৃনা, সমালোচনা, লজ্জা, ভয় ইত্যাদি। প্রকাশিত ৭:৯-১৭পদে, আমরা সেই বিরাট আশ্বাস পাই।১৬-১৭ পদে বলে-ইহারা আর কখনো ক্ষুদিত হইবেনা; এবং ইহাদিগকে রৌদ্র বা কোন উত্তাপ লাগিবেনা; কারণ সিংহাসনের মধ্যস্থিত মেষ শাবক ইহাদিগকে পালন করিবেন এবং জীবন জলের উনুইয়ের নিকটে গমন করাইবেন আর ঈশ্বর ইহাদের সমস্থ নেত্রজল মুছাইয়া দিবেন।’’সবাই বলি আমেন।
আমরা জানি, অনেক সময় আমাদের মন্ডলীর লোকেরা ভ্রান্ত ধারনা বশত: ২রা নভেম্বর মৃত্যু ব্যক্তির আত্মার জন্য প্রার্থনা করতে কবর স্থানে যায়। তাই আমরা কখনই প্রিয়জনের মৃত আত্মার শান্তির জন্য বা স্বর্গে যাবার জন্য প্রার্থনা করতে পারি না। কারণ এ বিষয়টি হচ্ছে একজন ব্যক্তির সম্পূর্ণ নিজস্ব ব্যবহার। তিনি প্রভুকে বিশ্বাস করে, হৃদয়ে ধারন করে স্বর্গে স্থান পাবেন।কিন্তু যদি তিনি খ্রীষ্টকে বিশ্বাস ও হৃদয়ে গ্রহন না করে থাকেন তা হলে মৃত্যুর পরে আত্মিয় স্বজন , প্রিয় জনরা তার আত্মার শান্তির জন্য শত শত বার প্রার্থনা করেও স্বর্গে যেতে কোন সাহায্য করতে পারবে না। তাছাড়া তার স্বর্গে যাবার, না যাবার বিষয় আমরা জানিা, কেবল মাত্র ঈশ্বর জানেন।বিষয়টি ঈশ্বরের উপরেই ছেড়ে দিতে হবে।
তাছাড়া আমরা সবাই যে মারা যাব তা নয়,কিন্তু বদলে যাব। ১করি ১৫:৫১
তাই বন্ধুগণ আসুন আমরা সর্ব্বদা প্রভুর আগমনের জন্য প্রস্তুত থাকি। আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের মধ্য দিয়ে তিনি আমাদের জয় দান করুক। আমেন।
পাস্টর মাসুদ রানা