প্রভু যীশুর পুনরুত্থান ও মাতা মরিয়মের গুরুত্ব

ads20
    কেলভিন মন্ডল, নিউইয়র্ক : পুনরুত্থনের এই মহা পর্বোৎসবে আজ আমারা বিন¤্রচিত্তে স্মরণ করছি মানব জাতিকে পাপ থেকে মুক্তির দিতে প্রভু যীশু নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। আবার তৃতীয় দিনে পুনরুত্থিত হয়ে পরম করুণাময় ঈশ্বরের মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছেন। তাই খ্রীষ্টবিশ্বাসীদের জন্য পুনরুত্থান পর্ব খুবই গুরুত্ব ও তাৎপর্যপূর্ণ। সেই সাথে স্মরণ করতে হয় যে পৃথিবীর সেই মহীয়ষী নারী মাতা মরিয়মকে, যিনি ঈশ্বর কর্তৃক মনোনীয় হয়েছিলেন মুক্তিদাতা যীশুর জননী হবার জন্যে। ঈশ্বরের পরিকল্পণা মতই মাতা মরিয়ম কুমারী হয়েও পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ গর্বীত মা হিসেবে প্রভু যীশুকে গর্ভে ধারণ করে, আমাদের পাপ থেকে মুক্তির পথ করে দিয়েছেন। তাই এই পুনরুত্থান দিবসে আমরা প্রভুযীশুর আত্মত্যাগ ও মাতা মরিয়মের ভূমিকা শ্রদ্ধা বিন¤্র চিত্তে স্মরণ করছি।
    প্রায় দুই হাজার বছর আগে মা মরিয়মের গর্ভে জন্মেছিলেন  যীশু। কুমারী অবস্থাতেই অলৌকিক উপায়ে যীশুকে গর্ভে ধারণ করেছিলেন মা মরিয়ম। মরিয়ম ছিলেন ইসরাইলের নাজারেথবাসী যোসেফের বাগদত্তা। সৎ, ধর্মপ্রাণ ও সাধু এ মানুষটি পেশায় ছিলেন কাঠমিস্ত্রি। একদিন এক স্বর্গদূতের (ফেরেস্তা) কাছ থেকে মরিয়ম জানতে পারেন, মানুষকে মুক্তির পথ দেখাতে তাঁর গর্ভে আসছেন ঈশ্বরের পুত্র। দূত শিশুটির নাম “যীশু” রাখার নির্দেশ দেন।
    বিয়ের আগেই মরিয়মের সন্তান হচ্ছে জেনে ধর্মপ্রাণ যোসেফ খুব চিন্তিত হয়ে পড়েন। তিনি সিদ্ধান্ত নেন গোপনেই ত্যাগ করবেন মরিয়মকে। কিন্তু সেই স্বর্গদূত এসে যখন ঈশ্বরের পরিকল্পনা যোসেফের কাছে খুলে বলেন, তখন যোসেফ রাজি হয়ে যান মরিয়মকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করতে।
    যোসেফের গ্রাম নাজারেথ ছিল জুদেয়া রাজ্যের একটি শহর। রাজার নির্দেশে তখন রাজ্যজুড়ে চলছে আদমশুমারির কাজ। কর দেওয়া ও নাম লেখানোর জন্য হাজার হাজার মানুষ বেথেলহেমে যান। মরিয়মকে গাধার পিঠে বসিয়ে যোসেফও রওয়ানা দেন বেথেলহেমে। পথেই মরিয়মের গর্ভবেদনা ওঠে। রাজ্যের মানুষের ভিড়ে বেথেলহেমের কোনো সরাইখানায় জায়গা হয় না তাঁদের। অবশেষে উপায়ন্তর না দেখে সন্তান জন্মদানের জন্য মরিয়মকে এক গোয়ালঘরে ঠাঁই নিতে হয়। সেখানেই জন্ম দেন পুত্র যিশুকে। এভাবেই মহা আশ্চর্যরূপে মা মরিয়মের কোলে খ্রীস্টান ধর্মাবলম্বীদের মুক্তিদাতার জন্ম হয়।
    যীশুর মা মরিয়ম, প্রভু যীশুর জন্মের ব্যাপারে এক মহৎ ও তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন, যা বর্তমান সময়ে তথা ঐ সময়কার দিনে ছিল অসামাজিক ও বিতর্কিত একটি বিষয়। এরকম ঘটনাবলী কেবল মায়েদের দ্বারাই মোকাবিলা করা সম্ভব, কারণ এগুলো প্রতিকূল ও অস্বাভাবিক ঘটনা, যা কল্পনাতীত।


    শুভ ও পবিত্র পুনুরুত্থান দিবসে, আমাদের স্মরণ করতে হবে, সেই মা মরিয়মের সীমাহীন ত্যাগ স¦ীকার, যার জন্য আমাদের ত্রাণর্কতা এ ধরণীর বুকে এসেছিলেন, নিজের প্রাণ উৎসর্গের মধ্য দিয়ে মানব জাতীকে আদী পাপ মুক্ত করেছিলেন, যার জন্য আমরা আজ পাপের উপর বিজয়ী হতে পারি।

    পরিচিতদেরকে জানাতে শেয়ার করুন

    আপনার জন্য আরো কিছু পোস্ট

    RELATED ARTICLES

      ADS