বড়দিন : বড়দিন বা ক্রিস্মাস খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। ২৫শে ডিসেম্বর এ দিনটি বাংলাদেশসহ সরাবিশ্বে যথাযোগ্য মর্যাদা এবং আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে খ্রিস্টানগণ পালন করে থাকেন। এ দিন মানব জাতির মুক্তিদাতা প্রভু যীশু খ্রিস্ট জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। এখন থেকে দু’হাজার ১২ বৎসর আগে কনকনে শীতের রাতে যিরূশালেমের বেথলেহেম নগরীর এক জরাজীর্ণ গোশালায় তিনি জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। তাই এ দিনটি খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যমন্ডিত।
পূণ্য শুক্রবার : পুণ্য শুক্রবার খ্রিস্টান ধর্মালম্বীদের শোকের দিন, বেদনার দিন। এ দিনে বিপদগামী ইহুদীরা নিরপরাধ যীশু খ্রিস্টকে বর্তমান যিরূশালেমের ক্যালভেরী পর্বতে ক্রুশবিদ্ধ করে নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল। পাপ থেকে মানব জাতির মুক্তির জন্যই তিনি ক্রুশে প্রাণ দিয়েছিলেন এ দিনে।
ইস্টার সানডে : ইস্টার সানডে বা পুনরুত্থান রবিবার খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। পুণ্য শুক্রবারে বিপদগামী ইহুদীরা যীশু খ্রিস্টকে ক্রুশবিদ্ধ করে হত্যা করে এবং পাশেই এক পর্বতের গুহায় সমাহিত করে। মৃত্যুর তৃতীয় দিবস রবিবার দিন তিনি মৃত্যু থেকে বেঁচে উঠেন বা পুনরুত্থান করেন। তাই এ দিনটিকে পুনরুত্থান রবিবার বলা হয়। দিনটি খ্রিস্ট বিশ্বাসীদের জন্যে তাৎপর্যপূর্ণ এবং অত্যন্ত আনন্দের।
মৃত্যুলোকের পর্ব দিবস : প্রতি বৎসর ২ নভেম্বর মৃত্যুলোকের পর্ব দিবস বা ‘অষষ ঝড়ঁষং উধু’ পালন করা হয়। এ দিন চার্চে এবং কোথাও কোথাও কবরস্থানে বিশেষ প্রার্থনানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মৃত আত্মীয় স্বজন এবং সকলের আত্মার মঙ্গল কামনা করা হয় এ বিশেষ প্রার্থনানুষ্ঠানে। এ দিন ফুলে ফুলে ও প্রজ্জলিত মোমেরবাতিতে ভরে উঠে সকল সমাধিস্থল।
খ্রীষ্টিয়ান জনসংখ্যা:
বর্তমানে বাংলাদেশে খ্রিস্টান জনসংখ্যা ৫ লক্ষাধিক হবে। ১৬৮২ খ্রিস্টাব্দে আমাদের এ ভূখন্ডে ক্যাথলিক খ্রিস্টভক্তের সংখ্যা ছিলো ১৪১২০ জন, যা বর্তমানে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে আনুমানিক সাড়ে ৩ লক্ষ জন। ক্যাথলিক চার্চ বা ধর্মপল্লী ৯৪ টি, উপ-ধর্মপল্লী ৪৩ টি, বিশপ ৯ জন, পুরোহিত ৩৫৬ জন, ব্রাদার ১০১ জন, সিস্টার ১০৬১ জন রয়েছে বলে জানা যায়। প্রটেস্ট্যান্ট খ্রিস্টভক্তের সংখ্যা আনুমানিক ১ লক্ষ ৫০ হাজার। খ্রিস্টান জনসংখ্যার শিক্ষার হার ৯৫ শতাংশের অধিক। খ্রিস্টান জনগণের প্রায় ৬০ শতাংশ বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি ভুক্ত।