ঐশ্বরিক আরোগ্যসাধন |
মথি ৮:১৬-১৭ ‘‘আর সন্ধ্যা হইলে লোকেরা অনেক ভূতগ্রস্তকে তাঁহার নিকটে আনিল তাহাতে তিনি বাক্য দ্বারাই সেই আত্মাগণকে ছাড়াইলেন এবং সকল পীড়িত লোককে সুস্থ করিলেন, যেন যিশাইয় ভাববাদী দ্বারা কথিত এই বচন পূর্ণ হয় ‘‘তিনি আপনি আমাদের দুর্বলতা সকল গ্রহণ করিলেন ও ব্যাধিসকল বহন করিলেন।’’
ঈশ্বরের পরিত্রাণ সাধনের ব্যবস্থা। (১) অসুস্থতা, রোগ-ব্যাধির সমস্যা, পাপ ও মৃত্যু মানুষের সেই আদি পতনের সঙ্গে জড়িত। অথচ চিকিৎসা বিজ্ঞান মনে করে যে অসুস্থতা ও রোগ-ব্যাধির কারণ হোল শারীরিক অথবা মানসিক। কিন্তু বাইবেল এর অন্তনির্হিত বা মূল সমস্যাকে অর্থাৎ আত্মিক সমস্যাকেই দায়ী করে। এগুলি দু’রকম : (ক) প্রথমতঃ পাপ- যা আমাদের আত্মা ও দেহকে প্রভাবিত করেছে (যোহন ৫:৫,১৪)। (খ) দ্বিতীয়ঃ শয়তান-(যেমন প্রেরিত ১০:৩৮, মার্ক ৯:১৭,২০,২৫; লূক ১৩:১১; প্রেরিত ১৯:১১-১২)।
(২) ঈশ্বরের পরিত্রাণ সাধনের ব্যবস্থাটা সেই আদি পতনের মতই সুবিস্তৃতঃ পাপের জন্য ঈশ্বর ক্ষমার ব্যবস্থা করেছেন, মৃত্যুর জন্য অনন্তকালীন ও পুনরুত্থিত জীবনের ব্যবস্থা করেছেন, আর রোগ-ব্যাধির জন্য ঈশ্বর আরোগ্যদানের ব্যবস্থা করেছেন (গীত ১০৩:১-৫; লূক ৪:১৮; ৫ধ১৭-২৬; যাকোব ৫:১৪-১৫ )। এভাবে যীশুর পার্থিব জীবনকালে তিন রকম পরিচর্যা ছিলঃ ঈশ্বরের বাক্য শিক্ষাদান ও মনপরিবর্তন প্রচার (পাপের সমস্যা), ঈশ্বরের রাজ্যের আশীর্বাদ (জীবন), এবং সর্বপ্রকার রোগ-ব্যাধি ও দুর্বলতাকে সুস্থকরণ (মথি ৪:২৩-২৪)।
ঈশ্বরের ইচ্ছার প্রকাশ। শাস্ত্রের মধ্যে আরোগ্যদান সম্পর্কে ঈশ্বরের ইচ্ছা প্রকাশিত হয়েছে প্রধানতঃ চারভাবে। (১) ঈশ্বরের নিজস্ব ঘোষণায়ঃ যাত্রাপুস্তক ১৫:২৬ পদে ঈশ্বর প্রতিজ্ঞা করেছেন যে তার লোকেরা যদি তার চুক্তি ও আজ্ঞাগুলির প্রতি বিশ্বস্ত থাকে তবে তিনি তাদের সুস্থতা ও আরোগ্য প্রদান করবেন (যাত্রা ১৫:২৬ পদের টীকা দেখুন) তার ঘোষণাটা ছিল দুরকম (ক) ‘‘আমি মিস্রীয়দিগকে যে সকল রোগে আক্রান্ত করিলাম, সেই সকলেতে তোমাকে আক্রমন করিতে দিব না (বিচারদন্ড হিসেবে)’’ আর (খ) ‘‘ আমি সদাপ্রভু তোমার আরোগ্যকারী’’ (মুক্তিদাতা হিসেবে)। পুরাতন নিয়মের সব জায়গায় যখনই তাঁর লোকেরা তাঁর মুখদর্শনের চেষ্টা করেছে এবং তাঁর বাক্যের বাধ্য থাকার একাগ্র হয়েছে তখনই ঈশ্বর তাদের চিকিৎসক বা আরোগ্যদানকারী হয়েছে (২রাজা ২০:৫ ; গীত ১০৩:৩)।