বন্ধু ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক ।। সামসুল আলম পলাশ(এম. টিএইচ)

ads20
    শাস্ত্র পাঠ: হিতোপদেশ ১৭:১৭ “বন্ধু সবসময়েই ভালবাসে, আর ভাই থাকে দুর্দশার সময়ে সাহায্য করবার জন্য।”
    বন্ধু ও বন্ধুত্ব অনুপম একটি বিষয়। আজকাল প্রায় টেলিভিশনে একটি এড দেখা যায়, “বন্ধু ছাড়া জীবন চলে না।” আমাদের জীবনে বন্ধু দরকার। এমন কিঈশ্বরের জন্যও বন্ধু দরকার ছিল।পবিত্র শাস্ত্র এই কথা বলে যে, অব্রাহাম ঈশ্বরের বন্ধু ছিলেন। আবারঅব্রাহামও অনেকের সঙ্গে বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন।দায়ূদেরসঙ্গে যোনাথনের বন্ধুত্বের বন্ধন এত গভীর ছিল যে, এর উপমা দিতে গিয়ে দায়ূদনিজেই বলেছেন “তা উত্তম আঙ্গুর-রসের চেয়েও উত্তম ছিল।” যীশু খ্রীষ্ট নিজেও তাঁর শিষ্যদের ‘বন্ধ’ু বলে সম্বোধন করেছেন।

    এই পৃথিবীর সম্পর্কগুলো আমাদের প্রভুর কাছেুবইখ গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের পিতা-ঈশ্বর এই পৃথিবীতে মানুষের জন্য বিয়ের ব্যবস্থা স্থাপন করেছেন এবং আমাদেরকে পরিবার গঠন করা ও পরিবারের মধ্যে থাকবার ব্যবস্থা করেছেন। আমরা বন্ধুত্ব, সম্পর্ক স্থাপন, বিয়ে বা পরিবার গঠন, যীশু খ্রীষ্টে অবস্থিত অন্যান্য ভাইবোনদের সঙ্গে সম্পর্ক নির্মাণÑ যাদের কথাই আমরা বলি না কেন প্রকৃতপক্ষেপবিত্র বাইবেল একে অন্যের সঙ্গে সম্পর্কের ব্যাপারে আমাদেরকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছে।

    আমাদের সকলেরই বন্ধু প্রয়োজন, সে আমরা যে বয়সেরই হই না কেন। তবে যে বয়সে বন্ধুত্বের বিষয়ে নানা দিক আলোচিত-সমালোচিত হয় তা হল আমাদের যুব বয়স। এই বয়সে বন্ধুত্বের সম্পর্কগুলো যেন ডানা মেলে উড়তে থাকে। সেজন্য আমরা যারা বাবা-মা, বন্ধু বেছে নেবার ব্যাপারে আমাদের উঠতি বয়সেরছেলেমেয়েদের দিকে মনযোগ দেওয়া উচিত। এর কারণ হল যেমনিভাবে তাদের মধ্যে ন্যাচারাল বিষয়গুলো বৃদ্ধি পেতে থাকে তেমনি ভাবে সম্পর্ক নির্মাণের বিষয়গুলো বৃদ্ধি পেতে থাকে।

    আমাদের ছেলেমেয়েদের সেই টিন এইজ থেকে শুরু করে বিয়ের আগ পর্যন্ত নানা রকম সামাজিক সম্পর্কের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এর মধ্যে তাদের সম বয়সীদের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক সবচেয়ে বড় হয়ে দেখা দেয়।পবিত্র বাইবেলে বন্ধুত্বের জন্য অনেক ঘটনা ও শিক্ষা রয়েছে। এছাড়া বন্ধুত্বের বিষয়ে বেশ কিছু শাস্ত্রবাক্য আমাদের সামনে রয়েছে যেগুলো সম্পর্ক নির্মাণের ক্ষেত্রে আমাদের আলোকিত করে, যেমন: হিতোপদেশ ১৭:১৭ “বন্ধু সবসময়েই ভালবাসে, আর ভাই থাকে দুর্দশার সময়ে সাহায্য করবার জন্য।”হিতোপদেশ ১৮:২৪ “যার অনেক বন্ধু তার বেশী সর্বনাশ হতে পারে, কিন্তু এমন বন্ধু আছে যে ভাইয়ের চেয়েও বেশী বিশ্বস্ত।”হিতোপদেশ ২৭:৬ “শত্রু অনেক চু¤¦ন করতে পারে, কিন্তু বন্ধুর দেওয়া আঘাতে বিশ্বস্ততা আছে।”একজন যুবক বা যুবতী হিসাবে বন্ধুত্ব নির্মাণ করার ক্ষেত্রে আমাকে ভেবেচিন্তে অগ্রসর হওয়া দরকার। আমাকে মনে রাখতে হবে সত্যিকারের বন্ধু অনেক নয় কিন্তু খুব অল্পই হয়Ñ তা সত্যিই মুক্তার মত দামী যা আমার উপকার ছাড়া অপকার করে না। যারা আমার বন্ধু তাদের সম্বন্ধে কিছু ভাবনার উত্তর আমাকে অবশ্যই পেতে হবে।যেমনÑ

    কে অনেক দিন ধরে আমার বন্ধু? কেন আমার এই বন্ধুত্ব টিকে আছে?আমার মধ্যেকার কোন বিষয়টি বন্ধুত্ব টিকে থাকতে সাহায্য করছে?আমি বন্ধুত্ব চলাকালীন সময়ে কি কি সমস্যায় পড়েছি এবং সেটি কিভাবে সমাধান করেছি? আমার বন্ধুত্বের মধ্যে এমন কি কিছু আছে যাতে এই সম্পর্কের ফাটল ধরাতেপারে?
    একজন যুবক-যুবতী হিসাবে যদি আমি এই প্রশ্নগুলো নিজেকে করি তবে হয়তো আমাদের বন্ধুতের জীবনকে শাস্ত্র ভিত্তিক ও আদর্শ ভিত্তিক করে গড়ে তুলতে পারব।
    আমাদের বুঝতে হবে যে, ভাল বন্ধুত্ব গড়ে তোলার জন্য অনেকগুলো বিষয় আমাদের বিবেচনা করতে হবে। আমাদের বুঝতে হবে যে, আমরা নিজেরা বন্ধু হিসাবে যত ভাল বন্ধু হতে পারবে আমাদের বন্ধুত্ব ততই দৃঢ় হবে। তখন দেখা যাবে:
    আমরা আমাদের বন্ধুদের ক্ষমা করেছি। আমরা আমাদের বন্ধুদেরকে মূল্য দিই এবং সম্মান করি। আমাদের আগ্রহ এবং শখ একই রকম। আমরা একে অন্যের সাথে যোগাযোগ রাখি। আমাদের বন্ধুত্বের সীমারেখা মান্য করে চলছি।
    এটি খুবই চমৎকার হতো যদি সকল বন্ধুত্বই ভাল বন্ধুত্ব হতো। তবে আমরা জানি যে, আমরা বা আমাদের বন্ধুরা কেউই পুরোপুরি সঠিক নয়। আমরা হয়তো অন্যদের চেয়ে আমাদের বন্ধুত্ব নিয়ে অনেক সমস্যায় পরি। কিন্তুআমাদের শিখাতে হবে যে, বন্ধুত্বের মাঝে যেসব সমস্য দেখা দেয় তা কিভাবে আমি চিহ্নিত করতে পারি ও এই সমস্যা থেকে সমাধানের পথে এগিয়ে যেতে পারি।
    আমাদের দেখতে হবে যে, বন্ধুত্বের মধ্যে নিন্মলিখিত সমস্যা দেখা দেয় কি না। যদি এসব বিষয় আমার বন্ধুর মধ্যে দেখা যায় তবে তার বন্ধুত্বের চলমান আবস্থা একটু বিবেচনা করা দরকার। আমাকে ভাবতে হবে এই বন্ধুত্বেেক আমাকে বের হয়ে আসতে হবে কি না।
    আমি কি বন্ধুর মধ্যে স্বার্থপরতা লক্ষ্য করেছি সে কি আমাকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায় সে কি কটুভাষী সে কি শুধু দোষারোপ করে আমি যদি অন্য কারও সাথে চলি তাহলে কি সে সেই বিষয়ে হিংসা করে সে কি শুধু নিতে যায় সে কি কিছু দিতে চায় নাসে কি খুবসহজেই আমাকে কষ্ট দেয়সত্যিকারের বন্ধুত্ব বা যদি আরেকটুকু নির্দিষ্ট করে বলি সত্যিকারেরখ্রীষ্টান‘ বন্ধুত্ব’ দেখতে কি রকম হওয়া উচিত? আসুন, আমরা এটাকে গভীরভাবে দেখতে চেষ্টা করি যাতে এটি আমাদের বোধগম্য হয় এবং বন্ধুত্ব গড়ার ক্ষেত্রে এরকম একটা উত্তম মন প্রস্তুত হয়।

    ১. খ্রীষ্টীয় বন্ধুত্ব-- উৎসর্গমূলক“নিজের বন্ধুদের জন্য যদি কেউ প্রাণ দেয়, তবে তার চেয়ে বেশী ভালবাসা আর কিছু হতে পারে না।”যোহন ১৫:১৩।খ্রীষ্টীয় বন্ধুত্বের জন্যযীশু খ্রীষ্ট হলেন আমাদের সবচেয়ে উৎকৃষ্ট উদাহরণ। তাঁর ভালবাসা ছিল উৎসর্গমূলক, আত্মকেন্দ্রিক নয়। তিনি যে শুধু তাঁর অলৌকিক কাজের মধ্য দিয়ে তা দেখিয়েছেন তা নয়, তিনি নিজে তাঁরশিষ্যদের পা ধুইয়ে দিয়ে, এমন কি মানুষের পরিত্রাণের জন্য নিজের জীবন ও রক্ত দিয়ে দেখিয়েছেন যে, তিনিই সত্যিকারের ভালবাসতে জানেন ও ভালবেসে দিতে জানেন।আমরা অনেক সময় বন্ধু বেছে নিই তারা কি আমাদেরঅফার করে তার উপর ভিত্তি করে, এর মধ্য দিয়ে বন্ধুত্বের যে আশীর্বাদ তা আমরা আবিস্কার করতে ব্যর্থ হই। ফিলিপীয় ২:৩ পদ বলে, “তোমাদের মধ্যে যেন স্বার্থপরতা না থাকে বরং নম্রভাবে প্রত্যেকে নিজের থেকে অপরকে শ্রেষ্ঠ ভাবো।” তোমার বন্ধুত্বের মূল্য দিতে গিয়ে তুমি নিজেকে তোমার চেয়ে একটু উপরে তুলতে যীশুহবেÑযেভাবে ভালবেসেছেন সেখানে যেতে হবে। যদি সেখানে তোমার মন, হৃদয়, মানসিকতা নিয়ে যেতে পার তবে হয়তো তুমি সত্যিকারের বন্ধুত্ব কি তা লাভ করতে পারবে।

    ২. সত্যিকারের খ্রীষ্টান বন্ধুত্ব শর্তহীন ভাবেই গ্রহণ করে “বন্ধু সব সময়েই ভালবাসে।”হিতোপদেশ ১৭:১৭। আমরা অনেক সময় আবিস্কার করি যে, আমাদের ভাই ও বোনেরা হল সবচেয়ে ভাল বন্ধু কারণ তারা আমাদের দুর্বলতা ও ব্যর্থতাগুলো জানে এবং তারপরও আমাকে ভালবাসে।যদি আমরা খুব সহজেই ক্ষেপে যাই বা অসন্তুষ্টহই ও তিক্ততা দেখাই তবে আমাদের জন্য বন্ধুত্ব স্থাপন করা খুবই কঠিন। আমাদের জানা দরকার যে, কেউই নিখুঁত নয়। আমরা সবাই যখন তখন ভুল করি। আমরা যদি আমাদের ভেতরটা একটুকু চেয়ে দেখি তবে আমাদের স্বীকার করতে হবে যে, আমাদের বন্ধুত্বের মধ্যে যখন কোন ভুল দেখা যায় তার জন্য অনেকাংশে আমি নিজেই দায়ী। ভাল বন্ধু খুব তাড়াতাড়িই বলে, “আমাকে ক্ষমা কর” এবং নিজেও ক্ষমা করতে প্রস্তুত।

    ৩. খ্রীষ্টীয় বন্ধুরা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে, বিশ্বাস করে “যার অনেক বন্ধু, তার সর্বনাশ হয়; কিন্তু যে সত্যিকারের বন্ধুসে ভাইয়ের চেয়েও বেশী নিকটবর্তী।” হিতোপদেশ ১৮:২৪, পুস্তকেরএই অংশে দেখায় যে, সত্যিকারের খ্রীষ্টান বন্ধু এমন যার উপর নির্ভর করা যায়, কিন্তু এখানে দ্বিতীয় সত্যিটার উপরও জোর দেওয়া হয়েছে। মানুষের জীবনে মাত্র অল্প কয়েকজন বন্ধুই থাকে যাদের উপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করা যায়Ñ যাদের কাছে সব কিছু শেয়ার করা যায়। সহজেই কাউকে বিশ্বাস করা আমাদের জীবন ধ্বংসের পথে নিয়ে যেতে পারে। সুতরাং কোন বন্ধুর উপরআপনার বিশ্বাস রাখার বিষয়ে সতর্ক থাকা দরকার। একজন সত্যিকারের খ্রীষ্টান বন্ধু অনেক সময় নিজের ভাই বা বোন থেকেও আরও কাছের হয়।

    ৪. খ্রীষ্টান বন্ধুরা একটি স্বাস্থ্যকর সীমা রক্ষা করে
    “ভালবাসা চিরসহিষ্ণু, ভালবাসা দয়া করে; ভালবাসা ঈর্ষা করেনা, বড়াই করে না, গর্বে স্ফিত হয় না।” ১ করিন্থীয় ১৩:৪, আপনি যদি অনুভব করেন কোন বন্ধু আপনার ব্যক্তি জীবনের যেখানে তার আসা উচিত না সেখানে ঢুকে পরে, তবে বুঝতে হবে নিশ্চয়ই কোন ভুল হচ্ছে। একইভাবে যদি অনুভব করেন যে, আপনাকে ব্যবহার করছে বা এবিউজড্ করছে তবে আপনাকে পথভ্রষ্ট করতে চেষ্ট করছে। একটি সুস্থ বন্ধুত্বপূর্ণ সীমা অবশ্যই থাকতে হবে। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে কোন বন্ধুর ঢুকে পড়া উচিত নয়। অথবা কোন প্রেমিক-প্রেমিকার মধ্যে কোন তৃতীয় ব্যক্তির প্রবেশ তাদের জীবনে ক্ষতি ছাড়া ভাল কিছু বয়ে আনবে না। একটি সত্যিকারের খ্রীষ্টান বন্ধু এই সীমাগুলো অনুধাবন করতে পারে এবং সম্পর্কের মধ্যে কোথায় থাকতে হবে তা বুঝে চলতে পারে।


    ৫. খ্রীষ্টান বন্ধুরা একে অন্যের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে
    “এক জন বন্ধু তোমাকে তিরস্কার করে হয়তো আঘাত করতে পারে, কিন্তু সেটা তোমার নিজেরই ভালোর জন্য।”হিতোপদেশ ২৭:৬
    একজন সত্যিকারের খ্রীষ্টীয় বন্ধু একে অন্যকে গড়ে তুলে, আবেগীকভাবে, আত্মিকভাবে, ও শারীরিকভাবে। বন্ধুরা সাধারণ ভাবেই এক সঙ্গে মিলিত হতে ভালবাসে কারণ তারা তাতে ভাল অনুভব করে। আমরা যখন একত্রিত হই তখন শক্তি, উৎসাহ ও ভালবাসায় সমৃদ্ধ হই। আমরা কথা বলি, কান্না করি, আমরা শুনি। কিন্তু একই সময়ে আমরা এমন কঠিন কথাও বলি যা আমাদের প্রিয়তম বন্ধুকে তা শোনা দরকার। কারণ আমরা একে অন্যের উপর বিশ্বাস রাখি, গ্রহণ করি, আমরা এমন একজন ব্যক্তির মত যিনি বন্ধুর জীবনে প্রভাব বিস্তার করি, কারণ আমরা জানি যে, যদিও খুব শক্ত কথা কিন্তু তা কিভাবে সত্য ও অনুগ্রহের সঙ্গে তা বলা দরকার। আমিবিশ্বাস করি যখন হিতোপদেশ বলে লোহা লোহাকে ধারালো করে, তেমনি একজন বন্ধু অন্য বন্ধুকে গড়ে তোলে।
    উপসংহার: আমি আশা করি যে এই পাঁচটি বৈশিষ্ট্য আমাদের জীবনে শক্তিশালী বন্ধুত্ব গড়ে তোলবার জন্য একটি শক্ত ভূমিকা রাখবে। কিন্তু যদি আপনার অনেক ঘনিষ্ট বন্ধু থাকে সেটা আপনার জন্য অনেক কষ্টের কারণ হতে পারে। স্মরণ রাখুন সত্যিকারেরখ্রীষ্টীয় বন্ধু একটা সম্পদ যা সহজে পাওয়া যায় না। এই রকম বন্ধুত্ব গড়তে হলে কিছু সময় লাগে কিন্তু তা মুক্তার মতই দামী সম্পর্ক হয়।
    যার সঙ্গে আপনি বন্ধুত্ব করতে চান তাকে জানুন, তার সঙ্গে কোন না কোন জেকা সম্পৃক্ত হন, তার সঙ্গে ইতিবাচক হোন। এতে করে দেখবেন আপনাদের বন্ধুত্ব এক শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে গেছে।

    Christo Sangeet Presenter

    খ্রীষ্ট সঙ্গীত অ্যাপ

    আপনার উপাসনার সঙ্গী, এখন আপনার হাতের মুঠোয়।

    সহজ ও নিরাপদ এবং সম্পূর্ণ অফলাইন সুবিধা।

    আজই ডাউনলোড করুন

    পরিচিতদেরকে জানাতে শেয়ার করুন

    আপনার জন্য আরো কিছু পোস্ট

    RELATED ARTICLES

      ADS