যীশু খ্রীষ্ট তাঁর শিষ্যদের পা ধুইয়ে তাঁর বিনম্রতার সেরা দৃষ্টান্ত

ads20
    সাধু যোহন ১৩:১-১৭ পদে দেখি যীশু ভোজে বসার আগে উপরের বস্ত্র খুলে রাখলেন, আর একখানি গামছা নিয়ে কটি বন্ধন কররেন, পরে তিনি পাত্রে জল ঢাললেন এবং শিষ্যদের পা ধুইয়ে দিতে লাগলেন এবং যে গামছা দিয়ে কটি বন্ধন করেছিলেন তা দিয়ে মুছাতে লাগলেন। যীশু পার্থিব জীবনের শেষ নিস্তারপর্বে দাসের রূপ ধারণ করলেন। এক গামলা জল ও গামছা নিয়ে শিষ্যদের পা ধুইয়ে দিলেন। এ এক অপরূপ নম্রতা দৃশ্য। তিনি মাংসে মূর্তিমান স্বয়ং ঈশ্বর। তিনি রাজাদের রাজা, প্রভুদের প্রভু। কিন্তু সেই অতুলনীয় প্রভুই নত হয়ে শিষ্যদের পা ধুইয়ে দিলেন। এত বড় বিনম্রতার দৃষ্টান্ত, এই পৃথিবীতে আর নেই। কিন্তু প্রভুর কেন তাঁর পার্থিব জীবনের শেষ রাতে এই অসাধারণ কাজটি কররেন? তিনি তাঁর সাড়ে তিন বছরের পরিচর্যার জীবনের শেষ দিনটির জন্য রেখেছিলেন?

    কারণ তিনি তাঁর শেষ নিস্তারপর্বের ভোজে আমাদের বুঝাতে চাইলেন যে , নম্রতা চেয়ে আর কোন বড় কাজ হতে পারে না। বিশ্বাসীর জীবনে নম্র হওয়া; নিজেকে শূন্য করা সবচেয়ে বড় কঠিন কাজ। তিনি অন্যান্য শিষ্যদের পা ধোয়ানোর কাজ করতে করতে যখন পিতরের কাছে এলেন; তখন পিতর বাধা দিলেন, ‘‘ আপনি কখনও আমার পা ধুইয়ে দেবেন না’’ এটা কি করে সম্ভব- আপনি ঈশ্বরের পুত্র; আপনি ত্রাণকর্তা প্রভু মশীহ; আপনি আমাদের গুরু। আপনি আমাদের পা ধোয়াবেন না। পিতর হয়ত ভাবছিলেন, প্রভু যীশু ঝড় থামিয়েছেন, ঢেউ শান্ত করেছেন ; ভূতগ্রস্ত লোকদের সুস্থ করেছেন; মৃত মানুষকে জীবিত করেছেন ; মোশি ও এলিয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন -  স্বর্গ থেকে বাণী হয়েছিল-‘‘ ইনি আমার প্রিয় পুত্র’’ সেই প্রভুই আমার পা ধোয়াবেন – না, না, তা হতে পারে না।

    প্রভু যীশু বলে উঠলেন, ‘‘ যদি আমি তোমার পা ধুইয়ে না দিই, তবে আমার সঙ্গে তোমার কোন সম্বন্ধ নেই’’ একি কথা! যদি যীশু পা না ধুইয়ে দেন; তবে যীশু আমাদের কেউ না। প্রভু যীশুর পা ধোয়ানোর সঙ্গে বিশ্বাসীর এত বড় বন্ধন?  পিতর এই বন্ধনের মধ্যে থাকতে চান- তিনি বলে উঠলেন ‘‘ শুধ পা কেন , হাত ও মাথা ও ধুইয়ে দিন।’’ প্রভু যীশু বললেনঃ  ‘‘ যে শুচি তার জন্য পা ধোয়াই যথেষ্ট। পরে যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, ‘‘ আমি প্রভু ও গুরু হইয়া যখন তোমাদের পা ধুইয়া দিলাম, তখন তোমাদের ও পরস্পরের পা ধোয়ান উচিত। কেননা আমি তোমাদিগকে দৃষ্টান্ত দেখাইলাম, যেন তোমাদের প্রতি আমি যেমন করিয়াছি, তোমরাও তদ্রূপ কর।’’

    আজ মন্ডলীতে পা ধোয়ানো একটি পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ পর্বে পরিণত হয়েছে। ভক্তিপূর্ণ ন¤্রতায় ও সরলতায় এই কাজ করা উচিত। নম্রতা ও সরলতায় যখন আমরা পা ধোয়াই তখন, যাদের পা ধোয়াবো তাদের বিরুদ্ধে যদি কোন অভিযোগ থাকে, তবে তা পা ধোয়াতে ধোয়াদে মুছে দিই। অপরপক্ষে যিনি নম্রতা আপনার পা ধোয়াচ্ছেন, তার বিরুদ্ধে কোন কথা থাকলে তা রক্ষা করা, নিজেকে ভগ্নচূর্ণ করা। অন্তর দিয়ে তা যখন করা যায়, তখন আমাদের মন থেকে , হৃদয় থেকে সব অহংকার; গরিমা, গর্ববোধ ধুয়ে মুছে যায়।

                                                          নিস্তাররপর্বে যীশু দেওয়া শেষ ভোজ 

    পরিচিতদেরকে জানাতে শেয়ার করুন

    আপনার জন্য আরো কিছু পোস্ট

    RELATED ARTICLES

      ADS