পৃথিবীর শ্রেষ্ট উপহার

ads20
    আমরা আমাদের আত্মীয় স্বজন, বন্ধু বান্ধব, বাবা মা এর কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে উপহার পেয়ে থাকি। যিনি সেই উপহারটি গ্রহণ করে থাকেন তিনি উপহার দাতাকে বিভিন্ন বিশেষন ব্যবহার করে ধন্যবাদ দিয়ে থাকেন। আবার উপহারটি খুব যত্নের সাথে রেখে দেন বা ব্যবহার করেন। এভাবে আমাদের জীবনে অনেক উপহার আমরা পেয়ে থাকি । কিন্তু কেউ কি কখনও ভেবে দেখেছি , আমাদের অনেক উপহারের মধ্যে কোনটি পৃথিবীর শ্র্রেষ্ট উপহার । নিশ্চই না । কিন্তু আমি এখানে বলতে চাই আমরা যারা খ্রীষ্টে বিশ্বাসী তারা নিশ্চই শ্রেষ্ট উপহার গ্রহন করেছি। ঈশ্বর মানুষকে দুটি শ্রেষ্ট উপহার দিয়েছেন। প্রথমত আমরা পবিত্র বাইবেলের আদি পুস্তকে দেখতে পাই, ঈশ্বর আদিতে আকাশমন্ডল ও পৃথিবী সৃষ্টি করিলেন, আর এই সৃষ্টিতে তিনি পাঁচটি দিন ব্যবহার করেছিলেন, ষষ্ট দিনে তিনি আদমকে সৃষ্টি করে তাকে শ্রেষ্ট উপহার হিসাবে হবাকে সৃষ্টি করিলেন। পবিত্র বাইবেলের আদিপুস্তক ২: ২১-২৩ পদে বলা হয়েছে পরে সদাপ্রভু  ঈশ্বর আদমকে ঘোর নিদ্রায় মগ্ন করিলেন, তিনি নিদ্রিত হইলে, আর তিনি তাঁহার একখানা পাঞ্জর লইয়া মাংস দ্বারা সেই স্থান পুরাইলেন। সদাপ্রভু ঈশ্বর আদম হইতে গৃহীত সেই পাঞ্জর দ্বারা এক স্ত্রী নির্মান করিলেন ও তাঁহাকে আদমের নিকট আনিলেন। তখন আদম কহিলেন, এবার হইয়াছে, ইনি আমার অস্তির অস্তি ও মাংসের মাংস। কারণ ঈশ্বর বললেন মানুষের একাকি থাকা ভাল নয় । ১৮ পদে বলা হয়েছে আর সদাপ্রভু ঈশ্বর কহিলেন মনুষ্যের একাকি থাকা ভাল নয়, আমি তাহার অনুরুপ সহকারিনী নির্মান করি । আর তারা একে অপরের জন্য ঈশ্বরের প্রথম উপহার ছিল। আর এটা ছিল মানুষের জন্য প্রথম শ্রেষ্ট উপহার । পরবর্তীতে  আদম হবা পাপ করল, সমগ্র মানবজাতীর পতন হল। ঈশ্বরের অবাধ্যতা কারণে সদাপ্রভুর নির্মিত উদ্যান থেকে আদম হবা বিতাড়িত হলো। পাপময় জগতে প্রবেশ করল । আর সেই পাপময় জগত মানুষে পরিপূর্ণ হলো সাথে সাথে পাপে পূর্ণ হলো।  ঈশ্বরের সৃষ্টির সাধের মানুষ যখন পাপ কাজ করতে লাগল তখন তিনি অনেক অনুশোচনা করতে লাগলেন এবং সেই সাধের মানুষ যাতে বিনষ্ট না হয়, তাই তিনি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাববাদিদের এই পাপ ময় জগতে পাঠালেন, যেন তার সেই সাধের মানুষ উদ্ধার পায় । কিন্তু দেখা গেল যাদের দিয়ে তিনি মানুষকে উদ্ধার করবেন তাদেরকে মানুষ সহজে গ্রহণ করল না। বরং তাদেরকে অত্যাচার করল । এমনকি অনেককে বধ করল। পরে ঈশ্বর তার প্রিয় পুত্রকে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিলেন। তাঁর প্রিয় পুত্র আমাদের প্রভু যীশুই হলেন আমাদের সর্বশ্রেষ্ট উপহার । আর সেটি দিয়েছেন আমাদের সৃষ্টি কর্তা মহান ঈশ্বর । 

    যীশু খ্রীষ্ট কে ?
     যীশু নিজেকে কি হিসাবে দাবী করেন ? বাইবেল কি বলে, তিনি কে ? যোহন ১০:৩০ পদে যীশুর বলা কথা আমরা প্রথমেই লক্ষ্য করি,” আমি আর পিতা এক । এই কথাটি প্রাথমিক ভাবে ঈশ্বর হিসেবে দাবী করা হয়েছে বলে মনে করা হয় না। তবে, তাঁর কথায় যিহুদীদের প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করুন, নেতারা উত্তরে বললেন, ভাল কাজের জন্য আমরা তোমাকে পাথর মারি না, কিন্তু তুমি ঈশ্বরের বিরুদ্ধে  অপমানের কথা বলেছ বলেই পাথর মারি। মানুষ হয়েও নিজেকে ঈশ্বর বলে দাবি করছ। যীশুর কথায় যিহুদীরা বুঝতে পেরেছিল, তিনি নিজেকে ঈশ্বর বলে দাবি করছেন। এই পদে যীশু কিন্তু যিহুদীদের কখনও সংশোধন করতে চেষ্টা করেন নাই যে, আমি নিজেকে ঈশ্বর বলে দাবি করি না। যীশু যে ঈশ্বর, সত্যি তা এই কথার ইংগিতে বোঝা যায়, যখন তিনি বলেছিলেন, আমি আর পিতা এক। যোহন ৮: ৫৮ পদে আরও একটি উদাহরণ রয়েছে” যীশু তাদের বললেন,”আমি আপনাদের সত্যি বলছি, অব্রাহাম জন্মগ্রহণ করবার আগে থেকেই আমি আছি। এবারও এই কথায় যিহুদীরা যীশুকে মারতে পাথর তুলে নিয়েছিল--যোহন ৮: ৫৯পদ । যীশু তাঁর পরিচয় প্রকাশ করতে গিয়ে বলেছেন,”আমি আছি, যা পুরাতন নিয়মের ঈশ্বর নামের সরাসরি প্রয়োগ---যাত্রাপুস্তক ৩:১৪পদ। যীশু যদি তাদের বিশ্বাসের ভিত্তি অনুসারে  ঈশ্বর নিন্দা সমতুল্য এমন কিছু না বলতেন, তাহলে কেন তারা আবার তাকে পাথর মারতে চেয়েছিল?। যোহন ১:১ পদে  বলেছেন, বাক্য নিজেই ঈশ্বর ছিলেন।, সেই বাক্যই মানুষ হয়ে জন্ম গ্রহণ করলেন । এখানেই সুস্পষ্ট যে, যীশুই মানুষরুপে ঈশ্বর । শিষ্য থোমা যীশুকে বলেছিলেন, সামনা সামনি ঘোষনা দিয়ে বলেছিলন’ প্রভু আমার ঈশ্বর আমার,। প্রেরিত পৌল যীশুকে বলেছেন, আমাদের মহান ঈশ্বর এবং উদ্ধারকর্তা যীশু খ্রীষ্টের------(তীত ২:১৩পদ) । যিশাইয় ৯:৬ পদে বলা হয়েছে---কারণ একটি পুত্র আমাদের জন্য জন্মগ্রহণ করবেন, একটি পুত্র আমাদের জন্য দেয়া হবে। শাসন করবার ভার তার উপর দেয়া হবে। আর তার নাম হবে আশ্চর্য পরামর্শদাতা, শক্তিশালী ঈশ্বর, চিরস্থায়ী পিতা, শান্তি রাজ । তাই সি এম লুইস যুক্তি দেখিয়েছেন, শুধুমাত্র ভাল শিক্ষক হিসেবে যীশুকে বিশ্বাস করাই যথেষ্ট নয়। যীশু সুস্পষ্টভাবে এবং অনস্বীকার্যভাবে নিজেকে ঈশ্বর বলে দাবি করেছেন। যদি তিনি ঈশ্বর না হতেন তাহলে তিনি তো মিথ্যাবাদী হতেন, তাহলে তিনি ভাববাদী হতে পারতেন না, ভাল শিক্ষক অথবা ঈশ্বরীয় মানুষও হতে পারেন না।
    যীশুর জন্ম যেভাবে হয়েছিল:
     আমরা সকলেই জানি যে যীশুর জন্ম একটি অলৌকিক ঘটনা প্রবাহের মধ্যদিয়ে হয়েছিল । তাঁর জন্মের আগে বিভিন্ন ভাববাদির মাধ্যমে জানানো হয়েছিল । জন্মের সময় কুমারী মরিয়মকে দর্শন দিয়ে স্বর্গদূত বলেছিল, জন্মের পর মাঠে রাখালদের  ষ¦র্গদূত দর্শন দিয়ে বলেছিল, পূর্বদেশীয় পন্ডিতদের দর্শন দিয়ে বলা হয়েছিল। এভাবে  পবিত্র বাইবেলে আরও অনেক ঘটনা এর জলন্ত স্বাক্ষী । লন্ডনে দ্যা টাইমস পত্রিকা, ১৯৮৪ সালে একটা চিঠি প্রকাশ করেছিল যা এ বিষয়ের উপর গুরুত্ব দিয়ে যুক্তি দেখিয়ে ছিলেন” অলৌকিক ঘটনাগুলোর বিপক্ষে প্রমান হিসাবে বিজ্ঞানকে ব্যবহার করা আইনগত যুক্তিসংগত নয়। অলৌকিক ঘটনাগুলো ঘটতে পারে না আবার ঘটতে পারে, এই দুটো বিষয়কে মেনে নেয়ার জন্য একধরনের বিশ্বাসের প্রয়োজন। ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ১৪ জন বিজ্ঞানের অধ্যাপক সেই চিঠিতে সই করেছিলেন। তারা বলেছিলেন” আমরা আনন্দের সাথে কুমারীর দ্বারা জন্ম সুসমাচারের অলৌকিক ঘটনাগুলো এবং খ্রীষ্টের পুনরুত্থানকে ঐতিহাসিক ঘটনা হিসাবে স্বীকার করি । তবুও একজন ব্যক্তি যখন প্রথমে একজন কুমারীর গর্ভে যীশুর জন্ম বৃত্তান্ত শোনেন, তখন তার পক্ষে হতবুদ্ধি হয়ে পড়াটাই স্বাভাবিক। যীশুর কুমারী মা নিজেই হতবুদ্ধি হয়ে পড়েছিলেন যখন ঈশ্বরের দূত তাঁকে বলেছিলেন”দেখ, তুমি গর্ভবতী হইয়া পুত্র প্রসব করিবে,ও তাঁহার নাম যীশু রাখিবে। এর উত্তরে মরিয়ম জিজ্ঞেস করেছিলেন,”ইহা কি রুপে হইবে? আমি তো পুরুষকে জানি না। এরপর দূত তাকে ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছিলেন যে, ঈশ্বর তাঁর পবিত্র আত্মার মাধ্যমে এই অলৌকিক কাজটি করবেন এবং তিনি আরও বলেছিলেন, ” ঈশ্বরের কোন বাক্য শক্তিহীন হইবে না। লুক ১:৩১, ৩৪-৩৭পদ । যিনি মনুষ্য প্রজননের এই অসাধারণ পদ্ধতির সৃষ্টি করেছেন তিনি নিশ্চই এক সতী কুমারীকে গর্ভবতী হওয়াতে এবং যীশুর জন্ম ঘটাতেও পারেন। ঈশ্বর যদি এই বিশ্বভ্রমান্ড এবং এর খুটিনাটি সমস্ত নিয়ম সৃষ্টি করে থাকেন,তা হলে মরিয়মের গর্ভ ধারনের ব্যবস্থাও করতে পারবেন।

    যে কারণে এর প্রয়োজন ছিল : মরিয়ম যখন গর্ভবতী হয়েছিলেন, সেই সময়ে তার সঙ্গে ঈশ্বর ভয়শীল পুরুষ যোষেফের বাগদান হয়েছিল । একটা স্বপ্নের মাধ্যমে, ঈশ্বরের দূত যোষেফকে ব্যাখ্যা করে বলেছিলেন যে কোন বিষ্ময়কর কারণে তার কুমারী বাগদত্তা গর্ভবতী হয়েছিল। দূত তাকে বলেছিলেন,” তোমার স্ত্রী মরিয়মকে গ্রহন করিতে ভয় করিও না, কেননা তাঁহার গর্ভে যাহা জন্মিয়াছে তাহা পবিত্র আত্মা হইতে হইয়াছে, আর তিনি পুত্র প্রসব করিবেন এবং তুমি তাঁহার নাম যীশু (ত্রানকর্তা ) রাখিবে, কারণ তিনিই আপন প্রজাদিগকে তাহাদের পাপ হইতে রক্ষা করিবেন- মথি ১:২০-২১ পদ। ইব্রীয়  ভাষায় যীশু নামের অর্থ যিহোবা যা হল পরিত্রান। এটা আমাদের পাপ ও মৃত্যু থেকে পরিত্রান আর এই পরিত্রানের জন্য যীশুর মাধ্যমে যিহোবা ঈশ্বর যে ব্যবস্থা করেছেন, সেটার প্রয়োজনীয়তার কথা মনে করিয়ে দেয়। যেহেতু প্রথম মানুষ আদম পাপ করেছিলেন, তাই তার পরবতী বংশধরেরাও ঈশ্বরের নিয়মগুলো লঙ্ঘন করার প্রবনতা রয়েছিল। রোমীয় ৫:১২ পদে কীভাবে আদমের বংশধরেরা পাপ থেকে রক্ষা পাবে এবং সিদ্ধতা অর্জন করতে পারবে ? আরেকটা সিদ্ধ মানুষ জীবনের প্রয়োজন, যার মূল্য ঠিক আদমের জীবনের সমতুল্য এবং ভারসাম্য বজায় রাখতে সেই জীবনকে অবশ্যই বলিরুপে দান করতে হতো।এই কারণেই ঈশ্বর সিদ্ধ মানুষ যীশুর অলৌকিক জন্ম ঘটিয়েছিলেন আর একই কারণে যীশু তাঁর শত্রুদের তাঁকে হত্যা করতে সুযোগ করে দিয়েছিলেন। যোহন ১০:১৭-১৮পদ, ১ম তীমথীয় ২:৫,৬পদ যীশু তাঁর পূনরুত্থান ও স্বর্গীয় জীবনে আরোহণের পর দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে পেরেছিলেন, আমি মরিয়া ছিলাম, আর দেখ আমি যুগপর্যায়ে যুগে যুগে জীবন্ত, আর মৃত্যুর ও পাতালের চাবি আমার হাতে। প্রকাশিত বাক্য ১:১৮পদ। মৃত্যুর ও পাতালের এই রুপক চাবির দ্বারা যীশু পাপপূর্ণ মানুষের জন্য আদম যা হারিয়েছিলেন, তা ফিরে পাওয়ার পথ খুলে দেন। যীশু বলেছিলে, আমিই পূনরুত্থান ও জীবন, যে আমাতে বিশ্বাস করে, সে মরিলেও জীবিত থাকিবে, আর যে কেহ জীবিত আছে, এবং আমাতে বিশ্বাস করে, সে কখনও মরিবে না। যোহন ১১:২৫-২৬পদ । কতই না অপূর্ব      প্রতিশ্রুতি ।
    যীশুর জন্মের সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ কারণ।
    কিন্তু যীশুর জন্মের পিছনে আরও একটি মহৎ কারণ রয়েছে । মরিয়মের গর্ভে জন্মই যে তাঁর জীবনের শুরু ছিল তা কিন্তু নয় । তিনি স্পষ্টভাবে বলেছিলেন, আমি ম্বর্গ হইতে নামিয়া আসিয়াছি । যোহন ৬: ৩৮ পদ। সৃষ্টির শুরু থেকে যীশু তাঁর স্বর্গীয় পিতার আত্মিক রাজ্যে বাস করতেন। বাস্তবিকই বাইবেল তাঁকে ঈশ্বরের সৃষ্টির আদি হিসেবে বর্ণনাা করে। স্বর্গ থেকে যীশু একজন দুষ্টু দূতের বিদ্রোহ লক্ষ্য করেছিলেন, যে কিনা প্রথম মানুষদের ঈশ্বরের শাসনের বিরুদ্ধে নিয়ে গিয়েছিল। এটাই যীশুকে ঈশ্বরের একজন সিদ্ধ মানব পুত্র হিসেবে জন্মগ্রহণ করতে চাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ কারণ যুগিয়েছিল । এই বিশ্বভ্রমান্ডের শাসন করার অধিকার একমাত্র স্বর্গীয় পিতার আছে। পৃথিবীতে যীশু তাঁর জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত বিশ্বস্থ থাকার দ্বারা দেখিয়েছিলেন যে, যিহোবার সৃষ্টিকে শাসন করার বিষয়ে তার পদ্ধতির প্রতি বশ্যতা করতে যীশু ইচ্ছুক ছিলেন। ঈশ্বরের শত্রুর হাতে মারা যাওয়ার ঠিক আগে যীশু স্পষ্টভাবে ব্যক্ত করেছিলেন যে, কেন তিনি স্বেচ্ছায় তাঁর জীবন বলিরুপে দান করতে ইচ্ছুক ছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে এর কারণ হল, জগৎ যেন জানতে পারে যে তিনি পিতাকে প্রেম করেন-যোহন ১৪:৩১পদ। প্রথম দুজন মানুষ, আদম ও হবা যদি এই ধরনের প্রেম নিজেদের মধ্যে গড়ে তুলত তা হলে তারা অপেক্ষাকৃত সহজতর পরীক্ষার মধ্যে বিশ্বস্ততা বজায় রাখতে পারত। আদিপুস্তক ২:১৫-১৭ পদ। 
    অতএব,পৃথিবীতে যীশুর জন্মের প্রধাণ কারণ ছিল, যা তিনি নিজেই বলেছিলেন, যে তিনি সত্যের পক্ষে স্বাক্ষ্য দেন--যোহন ১৮: ৩৭ তিনি কথা ও কাজের মাধ্যমে দেখিয়েছিলেন যে, ঈশ্বরের শাসনই হল সম্পূর্ণরুপে ন্যায্য আর এর প্রতি বশ্যতা স্বীকার করা স্থায়ী সুখ নিয়ে আসে। এ ছাড়া যীশু এও ব্যাখ্যা করেছেন যে তিনি এই পৃথিবীতে তাঁর মনুষ্য জীবন অনেকের পরিবর্ত্তে  --মুক্তির মূল্যরুপে এসেছেন, যাতে পাপী মানুষের জন্য সিদ্ধতা ও অনন্ত জীবন লাভ করার পথ খুলে যায়। মার্ক ১০৪৫ পদ। এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো মানবজাতি যাতে পুরোপুরিভাবে বুঝতে পারে সেই জন্যই যীশুর এক নথির প্রয়োজন ছিল।

    বন্ধুত্ব লাভ করা : আমরা ঈশ্বরের বাছ থেকে যে শ্রেষ্ট উপহারটি পেয়েছি তাঁর সাথে আমাদের ঘনিষ্টতা লাভ করা একান্ত কাম্য। তিনি আমাদের পরম বন্ধু । কোন ব্যক্তিকে খ্রীষ্টের জন্য জয় করার প্রক্রিয়াটির মোটামুটি দুটি পর্য্যায় বা ধাপ থাকে । প্রথম পর্য্যায়ে সেই ব্যক্তির আ¯া’া ও বন্ধুত্ব লাভ করতে হয়।, আর দ্বিতীয় ধাপে প্রভু ও ত্রানকর্তা হিসেবে খ্রীষ্টের সঙ্গে সমর্পিত সম্পর্ক স্থাপনের পথে তাকে পরিচালিত করতে হয়।  ঈশ্বর আমাদের প্রভু যীশুকে আমাদের মাঝে দিয়ে ছিলেন এবং  আমাদেরই সাদৃশ্য একজন হয়েছিলেন । পার্থক্য মাত্র এটুকু, তার মধ্যে কোন পাপ ছিল না। তিনি আমাদের সদৃশ্য হয়েছিলেন যেন আমরা তাঁর  সদৃশ্য হতে পারি। তিনি আমাদের বন্ধু ছিলেন বিধায় আমাদের তিনি বিভিন্ন সময়ে আস্বস্থ করেছিলেন । যোহন ১৪ অধ্যায়ে বলেছেন-- তোমাদের হৃদয় উদ্বিগ্ন না হউক;  ঈশ্বরে বিশ্বাস কর  আমাতেও  বিশ্বাস কর । আমার পিতার বাটিতে অনেক বাসস্থান আছে, যদি না থাকিত, তোমাদের বলিতাম, কেননা আমি তোমাদের জন্য স্থান প্রষÍুত করিতে যাইতেছি। তিনি আমাদের পরম বন্ধু বলে আমাদের থাকার ব্যবস্থার কথা চিন্তা করেছেন। 
    খ্রীষ্টের প্রতি দৃষ্টি : আমরা এবার একটা বাস্তব বিষয়ের উপর দৃষ্টি ফিরাই। আমরা সবাই পরীক্ষিত হই। কিন্তু পরীক্ষার সেই বাস্তব মুহুর্তে তাহলে আমাদের কি করা উচিত ? পরীক্ষা প্রলোভন মোকাবিলা করার ব্যাপারে সবচেয়ে জরুরী ও প্রথম কাজ হবে সেগুলোকে অঙ্কুরেই বিনাশ করা। কিন্তু কথা হচ্ছে, বাস্তবিকপক্ষে আমরা কি উপায়ে তা মোকাবিলা করব? যে উপায়েই অবলম্বন করা হোক না কেন, একটা বিষয় নিশ্চই অন্তত স্পষ্ট যে, প্রলোভনকারী মন্দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়ে সেই মন্দের ওপরই মনোনিবেশ করা মারাত্বক ভুল । এতে মন্দ কাজের প্রতি মনোযোগ বেশী দিতে হবে ফলে মন্দের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশী থাকে। সকল বিশ্বাসীই খ্রীষ্টের দেহের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের মত এদের প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু কাজ থাকে । আমাদের দেহের মধ্যে অ্যাপেনডিক্স নামে একটি অঙ্গের মাত্র কোন কাজ নাই। তবে অনেক প্রকার কষ্ট সৃষ্টি করতেও ওর জুড়িদার নেই। এটা একটা জলন্ত ও বাস্তব দৃষ্টান্ত। খ্রীষ্টিয় পরিবারে বা সমাজে এমন অনেক শ্রেণীর লোকের অভাব নেই । তারা যেন যাত্রী। সভা সমিতি, মন্ডলীতে আসেন, আর নিজের সুযোগ সুবিধাটুকু ঠিক মতই ভোগ করেন অথচ দায়িত্ব কর্ত্তব্য পালনের বেলায় একেবারে শুন্য।  সত্যিকারে আমরা যারা বিশ্বাসী তাদের মনে রাখতে হবে খ্রীষ্ট আমাদের জীবন ও প্রাণ । তাঁর প্রতি মনোযোগী হওয়া একান্ত আবশ্যক। একবন্ধু কখনও আর এক বন্ধুকে ভুলতে পারে না, ভুলে গেলে তো আর বন্ধু হওয়া যায় না।

    উপসংহার :
    সাংসারিক জীবন সুন্দরভাবে  গঠন ও পরিচালনার জন্য ঈশ্বর  আমাদের জাগতিক সঙ্গী বা বন্ধু দিয়েছেন, একজন অন্যজনের সাথে পরামর্শ করে সংসার পরিচালনা করে থাকে, সুন্দর পরিবার গঠনে সহায়ক ভুমিকা পালন করে থাকে । ব্যক্তি জীবনে সব কিছু শেয়ার করা যায়, পরামর্শ করা যায়। ফলে সুন্দর ও সুখি পরিবার গঠিত হয় । আত্মিক জীবনের জন্যও ঈশ্বর আমাদের জন্য খ্রীষ্টকে আমাদের মাঝে পাঠিয়েছেন, যেন আমরা সঠিক পথে চলতে পারি, ভুল পথে পা না দেই, যে ভাবে আদম ও হবা ঈশ্বরের অবাধ্য হয়ে ভুল করেছিলেন আর সেই ভুলের জন্য সুন্দর উদ্যান থেকে বিতারিত হয়েছিলেন। আমরা তো তাদেরই সন্তান,  আমাদের মধ্যে সেই ভুলের রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে, তাই আমরা সহজেই শয়তানের দ্বারা প্ররোচিত হতে পারি। সেই জন্য খ্রীষ্টকে আমাদের সাথে সব সময়ের জন্য কাছে রাখা প্রয়োজন। তিনি তো আমাদের জন্য প্রতিজ্ঞা করেছেন । যোহন লিখিত সুসমাচারের ১৪: ১২ পদে বলেছেন---- সত্য সত্য আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, যে আমাতে বিশ্বাস করে, আমি যে সকল কার্য্য করিতেছি, সেও করিবে, এমন কি, এ সকল হইতেও বড় বড় কার্য্য করিবে; ১৩ --১৪পদে এও বলেছেন আর তোমরা আমার নামে যাহা কিছু যাঞ্চা করিবে, তাহা আমি সাধন করিব, যেন পিতা পুত্রে মহিমান্বিত হন। যদি আমার নামে আমার কাছে কিছু যাঞ্চা কর, তবে আমি তাহা করিব।  আমেন

    পরিচিতদেরকে জানাতে শেয়ার করুন

    আপনার জন্য আরো কিছু পোস্ট

    RELATED ARTICLES

      ADS