বিবাহ মানুষের জন্য ঈশ্বরের মঙ্গল পরিকল্পনা সমূহের একটি। আমরা বিবাহ সম্পর্কে তাঁর নির্দেশগুলি যদি পালন করি, বা তাঁর দেওয়া আদর্শগুলি অনুসরণ করি তবে আমাদের জন্য অবশ্যই সুখের হবে,ও আমাদের ঘরে স্বর্গের শান্তি বিরাজ করবে। আমাদের ঘরের দৈনন্দিন অভিজ্ঞতাগুলি অনেক আত্মিক সত্য আরও ভালভাবে বুঝতে আমাদের সাহায্য করবে। ঈশ্বর চান, যেন স্বামী স্ত্রী, মা-বাবা, সন্তান সন্ততি প্রভৃতি সকলেই পরিবারের মধ্য দিয়ে একে অন্যের প্রতি তাদের বন্ধুত্ব, ভালবাসা ও স্নেহ প্রকাশ করতে পারে। পরিবারকেই ঈশ্বর সমাজের মৌলিক ভিত্তি রুপে স্থাপন করেছেন। তাঁর দেওয়া ব্যবস্থা থেকেই মানুষ তার চলবার মত নৈতিক আদর্শগুলি গ্রহন করে। পরিবারের মধ্যে সকলে একত্রে শান্তিতে বসবাস করে, তারা বাইরের লোকদের সঙ্গে ভালভাবে মিশতে বা চলতে জানে। এইভাবে অনেকগুলি ভাল পরিবার নিয়ে একটি ভাল সমাজ গঠিত হয়; অনেকগুলি ভাল সমাজ নিয়ে একটি ভাল জাতি গঠিত হয়; ও অনেক গুলি ভাল জাতি নিয়ে একটি ভাল পৃথিবী গঠিত হয় ।
বিবাহ একটি পারস্পরিক সম্পর্ক :
বিবাহ এমন একটি বন্ধন, যার মধ্য দিয়ে এক জন পুরুষ ও একজন স্ত্রী আইনত ও ধর্মত পস্পরের সঙ্গে আজীবনের জন্য আবদ্ধ হয়,ও তাদের পরস্পরের মধ্যে অন্য লোকের ঘনিষ্ট সম্পর্ক সস্পূর্ণ অবৈধ বলে গন্য হয়। এইভাবে কেবল একটি ঘর বাধা যায় ও একটি পরিবার গড়ে উঠে। পুরাতন নিয়মে দেখতে পাই ঈশ্বর বলেছিলেন মানুষের একাকি থাকা ভাল নয়; এই জন্য তিনি পুরুষের দেহ থেকে একখানি হাড় নিলেন ও তার এই নিঃসঙ্গতা দুর করবার জন্য সেই হাড় থেকেই তার জন্যে এক সঙ্গিনী বা এক স্ত্রী সৃষ্টি করলেন। এক লেখক ম্যাথিউ হেনরি বলেছেন যে, ঈশ্বর স্ত্রীলোকের জন্য পুরুষের দেহ থেকে একটুকরা পায়ের হাড় নেননি, যেন স্ত্রীকে সে তার পায়ের তলায় চেপে রাখতে পারেন, বা ঈশ্বর তার মাথা থেকেও নেননি, যেন স্ত্রী তার উপর কর্তৃত্ব করতে পারে, কিন্তু ঈশ্বর আদমের দেহের এক পাশ থেকে এক টুকরা পাঁজরের হাড় নিয়েছিলেন, তার হৃদয়ের অতি নিকটের এক টুকরো হাড়, যেন সে তার স্ত্রীকে ভালবাসতে পারে; তাকে রক্ষা করতে পারে ও সব সময় তাকে পাশে রাখতে পারে। বিবাহিত জীবনের প্রকৃত সুখ বা প্রকৃত শান্তি নির্ভর করে স্বামী- স্ত্রীর একে অন্যের প্রতি তাদের বন্ধুত্বের ও ভালবাসার উপর। হবা ছিল আদমের একটি অঙ্গ। স্বামী- স্ত্রী একে অন্যের অঙ্গ স্বরুপ। তাদের উভয় জীবন এক সুতোয় গেঁথে দেওয়া হয়েছে, সুতরং তারা কেউ আর এক অন্যকে ছাড়া সম্পূর্ণ হতে পারে না।
একটি পবিত্র সংযোগ হচ্ছে বিবাহ ঃ
কেবল মাত্র আদম হবা ছাড়া ঐ সময় আর তৃতীয় কোন মানুষ জগতে ছিল না। আমরা মনে করতে পারি, যে ঈশ্বর ইচ্ছা করলে আদমের জন্য আরও কয়েকজন স্ত্রীর ব্যবস্থা করে দিতে পারতেন,যাতে পৃথিবী আরও তাড়াতাড়ি মানুষে ভরে উঠতে পারে কিন্তু সর্ব্বজ্ঞ ঈশ্বর, যিনি আমাদের মঙ্গলের বিষয় সঠিক ভাবে জানেন, তিনিই আদমের জন্য একমাত্র স্ত্রীর ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। এই ছিল তার সত্যিকারের প্রয়োজনের পক্ষে যথেষ্ট ও তার বিবাহের জন্যও ঈশ্বরের পরিকল্পনা। শত যুক্তি তর্ক, শত অজুহাত,বা কোন কিছুই এই কথার ব্যতিক্রম করতে পারে না, ঈশ্বর এক পুরুষের জন্য একই স্ত্রীর ব্যবস্থা করেছিলেন। মথি লিখিত সুসমাচারে পাই অতএব ঈশ্বর যাহা যোগ করিয়া দিয়াছেন, মনুষ্য তাহার বিয়োগ না করুক। সেই দুইজন একাঙ্গ হইবে, যীশু একই কথা বলেন,এক পুরুষ ও এক স্ত্রী। খ্রীষ্ট ধর্ম মতে বহু বিবাহ বা স্ত্রী বা স্বামী ত্যাগ কোন মতেই বাইবেল সম্মত নয় ।
জগতের প্রতি বিবাহের গুরুত্ব : আমি আগে লিখেছি যে, বিবাহ মানুষের জন্য ঈশ্বরের মঙ্গল পরিকল্পনা সমূহের একটি। আমরা বিবাহ সম্পর্কে তাঁর নির্দেশ গুলি যদি পালন করি, বা তাঁর দেওয়া আদর্শগুলির অনুসরণ করি তবে আমাদের ঘর অবশ্যই সুখের ঘর হবে, ও আমাদের ঘরে স্বর্গের শান্তি বিরাজ করবে। আমাদের ঘরের দৈনন্দিন অভিজ্ঞতাগুলি অনেক আত্মিক সত্য আরও ভালভাবে বুঝতে আমাদের সাহায্য করবে। ঈশ্বর চান, যেন স্বামী স্ত্রী, মা-বাবা, সন্তান সন্ততি সকলেই পরিবারের মধ্য দিয়ে একে অন্যের প্রতি তাদের বন্ধুত্ব, ভালবাসা ও স্নেহ যত্ন প্রকাশ করতে পারে। পরিবারকেই ঈশ্বর সমাজের মৌলিক ভিত্তি রুপে স্থাপন করেছেন। তাঁর দেওয়া ব্যবস্থা থেকেই মানুষ তার চলবার মত নৈতিক আদর্শগুলি গ্রহণ করে। পরিবারের মধ্যে সকলে একত্রে শান্তিতে বসবাস করে,তারা বাইরের লোকদের সঙ্গে ভালভাবে মিশতে বা চলতে জানে। এই ভাবে অনেকগুলি ভাল পরিবার নিয়ে একটি ভাল সমাজ গঠিত হয় । অনেক গুলি সমাজ নিয়ে একটি ভাল জাতি গঠিত হয়.ও অনেকগুলি জাতি নিয়ে একটি ভাল পৃথিবী গঠিত হয় । সুতরং আমরা দেখতে পাই যে, একটি পরিবারের জন্য ঈশ্বর যে মান নিরুপন করেছেন, তা গ্রহণ করা ও পরিবারের সুখ শান্তির নিয়মগলি মেনে চলা কত প্রয়োজন। যা কিছু আপনার ঘর নষ্ট করে দিতে পারে, এমন যে কোন কিছুর বিরুদ্ধে প্রাণপণ করা কত প্রয়োজন,ও ঈশ্বর আপনার পরিবার বা আপনার ঘরের বিষয় যে নির্দেশগুলি দিয়েছেন, সেগুলি ভাল করে জেনে নেওয়াও কত প্রয়োজন।
প্রথমত : আপনার জীবনের উপরে আপনার সঙ্গীর প্রভাব। আপনার সঙ্গী যাকে আপনি বিবাহ করতে যাচ্ছেন, তার জীবন আপনার জীবনকে গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। আপনার স্ত্রী বা আপনার স্বামী আপনার জীবনের গতি হয়, ধার্মিকতা ও স্বর্গের দিকে নতুবা পাপ ও নরকের দিকে পরিচালিত করবে। আপনার সঙ্গীর প্রতি দিনকার প্রভাব আপনাকে হয় আপনার চির আকাঙ্খিত বিশ্রাম সুখের মধ্য দিয়ে নিয়ে যাবে, নতুবা আপনাকে আপনার প্রকৃত শান্তির উৎস, ঈশ্বরের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যাবে, ঈশ্বরকে প্রেম করা, তাঁর সেবা করা ও তাঁর বাধ্য হওয়া, আপনার পক্ষে দুরুহ ব্যাপার হবে, না আপনার পক্ষে সহজ সাধ্য হবে,তা নির্ভর করে আপনি কি ধরনের সঙ্গী নির্বাচন করেন তার উপর।
দ্বিতীয়ত : এই নির্বাচন আজীবনের জন্য। অসুবিধা হলে এক স্ত্রীকে ছেড়ে দিয়ে আবার বিবাহ করা যাবে; খ্রীষ্টানের বিবাহেতে সেই চিন্তার কোন স্থান নেই। একটি সাইকেল বা একটি গাড়ি পছন্দ সই না হলে বিক্রি করে দেওয়া যায় ও সেই জায়গায় একটি নূতন সাইকেল বা একটি নূতন গাড়ি কিনে নেওয়া যায়। কিন্তু স্বামী বা স্ত্রীর ব্যাপারটি ঠিক তা নয়। বাইবেল পরিস্কারভাবে শিক্ষা দেয় যে, বিবাহ আজীবনের জন্য। রোমীয় ৭:২ পদে আছে---যতদিন স্বামী জীবিত থাকে, ততদিন সধবা স্ত্রী ব্যবস্থা দ্বারা তাহার কাছে আবদ্ধ থাকে; কিন্তু স্বামী মরিলে সে স্বামীর ব্যবস্থা হইতে মুক্ত হয়। আবার মার্ক ১:৯ পদে বলা আছে;অতএব ঈশ্বর যাহা যোগ করিয়া দিয়াছেন মনুষ্য তাহা বিয়োগ না করুক। সুতরাং আপনার জীবন সঙ্গী নির্বাচনের কাজটি অতি গুরুত্ব পূর্ণ। এত তাড়াহুড়ো করা কোনভাবেই কাম্য নয়। ঈশ্বর আপনার বিষয় জানেন ও আপনার কি কি প্রয়োজন তাও তিনি জানেন। সুতরাং আপনার জীবন সঙ্গী নির্বাচন করবার আগে তাঁর সাহায্য কামনা করুন। প্রার্থনা করুন যেন তিনি আপনার জন্য তাঁর মনের মত লোক ঠিক করে দেন।
মন্ডলী বা সমাজিক দিক : খ্রীষ্টিয় বিবাহে বর ও কনে উভয়ে ঈশ্বরকে সাক্ষী মেনে সর্ব্বসমক্ষে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়। তারা মৃত্যু পর্যন্ত একে অন্যকে প্রেম করবে, সম্মান করবে, সেবা যত্ন করবে ও একে অন্যের প্রতি বিশ্বস্ত থাকবে বলে প্রতিজ্ঞা করে। একজন ধর্ম যাজক তাদের দায়িত্বে এ বিষয় শিক্ষা দিবেন, তাদের প্রতিজ্ঞাগুলি শোনেন, তাদের স্বামী স্ত্রী বলে ঘোষনা করেন ও তাদের ঘরে ঈশ্বরের আর্শীবাদের জন্য প্রার্থনা করেন। বিবাহ ঈশ্বর কর্ত্তৃক আদিষ্ট একটি বিশেষ অনুষ্ঠান। এর দ্বারা আরও প্রমানিত হয় যে, নব দম্পতি তাদের বিবাহিত জীবনে চলার পথে,ও তাদের নূতন ঘরে ঈশ্বরের সাহায্য ও তাঁর পরিচালনা কামনা করে।
খ্রীষ্টিয় পরিবার : সমাজ বিজ্ঞানের ভাষায় বাবা মা,ভাই বোন নিয়ে একটি পরিবার হয় । পরিবার সমাজের প্রাথমিক প্রতিষ্ঠান। গোষ্টি জীবনেরও প্রথম ধাপ হচ্ছে পরিবার। পরিবার হচ্ছে মোটামুটিভাবে স্বামী-স্ত্রীর একটি স্থায়ী সংঘ বা প্রতিষ্ঠান, যেখানে সন্তান-সন্ততি থাকতে পারে আবার নাও থাকতে পারে। পরিবার থেকে সমাজের উৎপত্তি। সমাজে যে সব সামাজিক প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে তার মধ্যে পরিবার অন্যতম। মানুষের অকৃত্রিম ও নিবিড় সম্পর্ক এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই গড়ে উঠে। বিবাহ পরিবার গঠনের পূর্বশর্ত। একজন পুরুষ সমাজস্বীকৃত উপায়ে একজন নারীকে বিবাহ করে একটি পরিবার গঠন করে।
আর খ্রীষ্টিয় পরিবার বলতে আমরা কি বুঝি ? খ্রীষ্টিয় পরিবার বলতে আমরা এমন একটি পরিবারকে বা ঘরকে বুঝি যেখানে খ্রীষ্ট স্বয়ং থাকেন। এখানে বসবাস কারী স্বামী-স্ত্রী, ছেলে-মেয়েরা সকলেই খ্রীষ্ট বিশ্বাসী । খ্রীষ্টিয় পরিবার গড়ে তুলতে হলে স্বামী স্ত্রী উভয়ের জীবনেই বহূ রদবদলের প্রয়োজন আছে। এমনভাবে তাদের চলা দরকার, যাতে তাদের সবকিছুই স্বামী-স্ত্রীর পরস্পরের প্রতি ও তাদের পরিবারের মঙ্গলের প্রতি লক্ষ্য করা হয়। ফিলিপীয় ২: ৩ পদে-- প্রতিযোগিতার কিম্বা অনর্থক দর্পের বশে কিছুই করিও না, বরং ন¤্রভাবে প্রত্যেক জন আপনা হইতে অন্যকে শ্রেষ্ট জ্ঞান কর। হিতোপদেশ ১৮:২২ পদে বলা আছে, যে ভার্য্যা পায় সে উৎকৃষ্ঠ বস্তু পায়,এবং সদাপ্রভুর কাছে অনুগ্রহ প্রাপ্ত হয়।
প্রেম দিয়ে ঘর রক্ষা করুন : প্রেম শয়তানের সমস্ত রকম আক্রমনের হাত হতে আপনার ঘরকে রক্ষা করবে। প্রেমই স্বামী-স্ত্রীকে সাহায্য করবে এবং একে অন্যের প্রতি বিশ্বস্থ থাকতে সাহায্য করবে। একটি সুখি ঘরের পক্ষে অত্যাবশ্যকীয় গুনগুলি যেমন ধৈর্য্য, সহিষ্ণতা সমবেদনা ও পরস্পরের প্রতি সাহায্যের মনোভাব প্রেমেরই ফসল স্বরুপ। প্রেম ছেলে মেয়েদের প্রতি মা বাবাকে সহানুভুতিশীল করে তোলে ও ছেলে মেয়েদের তাদের বাধ্যতা শিক্ষা দেয়। প্রেম পরিবারের অন্যান্য সকলের ভুল ত্রুটি বার বার ক্ষমা করতে সাহায্য দান করে। সুতরাং পরিবারের মধ্যে প্রথমে প্রেমের উৎকর্ষ সাধন করুন, তাহলে দেখতে পাবেন যে, ঘরের নিরাপত্তা বিধানে অন্যান্য দেওয়ালগুলি তোলাও আপনার পক্ষে সহজ হয়ে পড়বে। পরিবারের মধ্যে বা ঘরে সমস্যা দেখা দিলে কোন কোন পুরুষকে অন্য মেয়েছেলেদের সাহচর্য্য ও সহানুভুতির দিকে আকৃষ্ট হতে দেখা যায়। এইভাবে তারা তাদের বিষয়ের প্রতিজ্ঞা ভেঙ্গে ফেলেন ও নিজেরাই নিজেদের ঘরের ধ্বংস ডেকে আনেন। কোন কোন সময় স্ত্রীরাও এই ধরনের মুর্খতা করেন ও অন্য পুরুষের প্রশংসা লাভের আশায় স্বামীর প্রতি অবিশ্বস্থ হন। জগতের প্রত্যেক মানুষেরই কিছু না কিছু ভুল আছে, কোন লোকই একেবারে নির্দোষ নয়। কিন্তু দু:খের বিষয় এই যে আমরা নিজেদের ভুল ত্রুটিগুলিকে কিছুই মনে করি না, বরং এগুলিকে আমাদের যার যার স্বভাব বলে এড়িয়ে চলে যাই। এর ফলে পরিবারের মধ্যে একে অন্যের প্রতি সৌজন্য ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের যে দিকটি তা একেবারেই চাপা পড়ে যায়। স্বামী- স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া ঝাটি বা অশান্তি তাদের পরস্পরের প্রেম নষ্ট করে দেয়। স্ত্রীর বিরক্তিজনক ও খিটখিটে স্বভাব অনেক স্বামীকে অন্য আকর্ষনের শিকার হতে বাধ্য করে। কথায় কথায় দোষ ধরা প্রকৃতির স্বামীরা বা বাবারাও অনেক ক্ষেত্রে নিজেদের ঘর নিজেরাই ভেঙ্গে ফেলে। একটি সুখি ঘর পেতে হলে প্রথমে নিজের অন্যায়ের ক্ষমা চাইতে হবে ও অন্যদের অন্যায়ের ক্ষমা করতে হবে। এই কথা বলতে শিখুন, আমার ভুল হয়েছে, দয়া করে ক্ষমা কর। অন্যের প্রতি সহনশীল হন,ও কোমল ব্যবহার করুন। কথা ধরে রেখে মনে মনে অশান্তি পুষে রাখতে চেষ্টা করবেন না, বা নিজের কপাল খারাপ বলে নিজের ওপর ধিক্কার দিবেন না। এক দিনের রাগ তার পরের দিন পর্যন্ত ধরে রাখা মোটেই উচিৎ নয়। সমস্ত কথা ছেড়ে দিন ও সেগুলি ভুলে যান। প্রেম দিয়ে ক্ষমা করতে শিক্ষাই হল খ্রীষ্টের শিক্ষা। ঘর রক্ষার উপায়গুলি হল-
১। প্রেম দিয়ে ঘর রক্ষা করুন ২। বিশ্বস্ততা দিয়ে ঘর রক্ষা করুন। ৩। ক্ষমা করে ঘর রক্ষা করুন। ৪। প্রার্থনা দিয়ে ঘর রক্ষা করুন।
পারিবারিক উপাসনা ও প্রার্থনা : পারিবারিক প্রার্থনায় মা বাবা ছেলে মেয়েদের ঈশ্বরের দিকে পরিচালিত করেন, ও তাদের প্রার্থনা করতে শিক্ষা দেয়। যতদিন পর্যন্ত মা বাবা এই জগতে বেঁচে থাকেন, ততদিন পর্যন্ত ছেলে মেয়েদের জন্য প্রার্থনা করা তাদের একটি বিশেষ দায়িত্ব,ও কর্তব্য ও একটি বিশেষ সুযোগ। সন্তান সন্ততিদের রক্ষা, নিরাপত্তা ও তত্তাবধানের জন্য আমাদের উচিৎ হবে ঈশ্বরের হাতে তাদের সমর্পন করা ও তার ওপর সম্পূর্ণ নির্ভর রাখতে পারেন। কোন কোন সময় আপনি হয়ত নিরাশ হয়ে পড়বেন, মনে হবে যে, আপনার সমস্ত চেষ্টাই বুঝি ব্যর্থ হয়ে গেল। আপনার সন্তান সন্ততিরা হয়ত ভুল পথে পা বাড়াতে পারে, কিন্তু মনে রাখবেন যে, ঈশ্বর আপনার প্রার্থনা কখনই বিফলে যেতে দিবেন না। তিনি আপনাকে সাহায্য করবেন যেন, আপনি একজন উপযুক্ত পিতা বা মাতা হিসেবে আপনার সন্তান সন্ততির ইচ্ছা বুঝেন এবং সেই অনুসারে চালাতে পারেন,তাও তিনি নিশ্চিত করবেন।
পাপই পরিবারের ধ্বংসের কারণ :
আমাদের পাপই পরিবারকে ধ্বংস করে। পরিবার সম্পর্কে ঈশ্বরের যে সংকল্প, অনেক ক্ষেত্রেই তার ব্যতিক্রম দেখা যায়। পাপ জগতের সর্বপ্রথম পরিবারটি ধ্বংস করে দিয়েছিল। ঈশ্বরের আজ্ঞার অবাধ্যতার জন্য প্রথম স্বামী স্ত্রী আদম হবার পরিবার নানা প্রকার দু:খ কষ্ট উপস্থিত হয়। শান্তি ও প্রেমের পরিবর্ত্তে সেখানে এসেছিল ঈর্ষা, বিবাদ ও নরহত্যা। পাপ আজও এক এক করে মানূষের পরিবারকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। সুতরাং একটি সুখী ও স্বার্থক পরিবার গড়ে তুলতে হলে স্বামী স্ত্রীর সর্ব প্রথম কর্ত্তব্য হচ্ছে পাপ থেকে দূরে থাকা। শিক্ষা-দীক্ষা, ধন সম্পদ, মান সম্মান প্রভৃতি কোন কিছুই একটি সুখী ঘর গড়ে তুলতে পারে না, যে পর্যন্ত মানুষের ঘরে বা তার জীবনে পাপ রাজত্ব করে। তার প্রয়োজন একটি পাপ মুক্ত খ্রীষ্টিয় পরিবারের।
উপসংহার : বিবাহ ও নর নারীর এই সংযোগের মধ্য দিয়েই একটি পরিবার এর সৃষ্টি যা আদি থেকেই ছিল। সেই জন্য ইব্রীয় ১৩:৪ পদে বলা হয়েছে--- সকলের মধ্যে বিবাহ আদরনীয় ও সেই শয্যা বিমল হউক । একটি পরিবারের জন্য ঈশ্বর যে মান নিরুপন করে দিয়েছেন, তা গ্রহন করা ও পরিবারের সুখ শান্তির নিয়মগুলি মেনে চলা একজন খ্রীষ্ট বিশ্বাসী হিসেবে অতি আবশ্যক। ঈশ্বরের প্রতি প্রেম, সম্মান ও বাধ্যতাই বিবাহকে উপযুক্ত করবে এবং পরিবার গঠনে সহায়ক ভুমিকা রাখবে ।
আমেন