পরিত্রানের গল্প /২য় পর্ব

ads20
    গত সপ্তাহে সজলের সাথে দেখা হওয়াতে একটা বিষয় পরিস্কার হয়েছে , সজলের অনেক জানার আগ্রহ আছে ।
    তাই ডেভিড স্বিদ্ধান্ত নিল সজলের সাথে এই সপ্তাহে আবার দেখা করবে ,তাই সজল কে ফোন দিল । সজলের অফিস সদরঘাটের কাছে তাই , রমনা পার্ক সুবিধামত স্থান।
    সজল আর ডেভিড দুজনে আবার রমনা পার্কে বসে কথা শুরু করলো ..
    দাদা , আপনি প্রায়ই বলে থাকেন চার্চে আসলেই সবাইকে বিস্বাসী বলা যাবে না ? কেন ? এই কথ বলার কারনে আপনাকে অনেকেই পছন্দ করে না । আর কারো বিচার করার দায়িত্ব কি আপনার ? সজল প্রশ্ন করলো
    হুম , সত্যি বলছো আমাকে অনেকেই পছন্দ করে না , এমন কি আমার মণ্ডলী আমাকে এরিয়ে চলে , আগে উপাসনায় প্রচার করতে দিত , এখন দেয়না । আমি নাকি এমন কিছু বলি তা বিচার করার মত হয়ে যায় , কিন্তু আমি যা বলি বাইবেল থেকে বলি । সজল, নিশচয় জান যে, বাইবেল হল আমাদের খ্রীষ্টানদের একমাত্র বিশ্বাসের ভিত্তি , আমাদের মানদণ্ড ।কে কি বলল ,এটা না , কিন্তু বাইবেল কি বলে এটাই ফাইনাল ।
    সজল মাথা নেড়ে সম্মতি জানাল ।
    তাই আমি কারো বিচার করেনি , বাইবেল বলে ,ফল দেখলে গাছ চেনা যায় ।
    তাই বলে আপনি কাউকে বলতে পারেন না , কে প্রকৃত বিস্বাসী কে না , সজল একটু রাগ হয়েই বলল ।
    ডেভিড বলতে লাগলো , এবার আসি পরিত্রান প্রাপ্ত বলতে কি বুঝি , যখন আমরা মন পরিবর্তন করি , অনুতাপ করে যীশুর কাছে পাপের জন্য ক্ষমা চাই ,আর প্রভু হিসাবে আমার হৃদয়ে স্থান দেই তবে আমি পরিত্রান প্রাপ্ত ।তাই তো ?
    হুম , এটাই সত্যি , সজলের উত্তর
    কিন্তু এখানেই শেষ না , পরিত্রান মানে তুমি মুখে স্বীকার করবে আর অন্তরে বিশ্বাস রাখবে যিশুর উপর , রোমিয় দশ অধ্যায় নয় দশ পদে আছে ।
    মুখে স্বীকার মানে তুমি ব্যাক্তিগত ভাবে প্রভুর কাছে তার গৌরব স্বীকার করবে আর অন্য যারা যীশুকে জানেনা তাদের কাছে পরিত্রানের স্বাক্ষ তুলে ধরবে , এটাই পরিত্রান প্রাপ্তিদের একটা গুরুত্বপুর্ন চিহ্ন । বুঝতে পারছো সজল ?এইজন্য আমি রাস্তায় প্রচার করি
    দাড়ান দাদা , এগুলো তো আগে শুনি না ই
    চলো, বাড়ির দিকে হাটি, যেতে যেতে আরো কিছু তোমাকে জানাই । তার আগে এক কাপ চা চলুক ।
    রমনা পার্কের সময়ের চেহারা একেক সময় একেক রকম , এই যেমন ভোরে একরকম , দুপরে আরেক রকম আর বিকেলে হৈ চৈ । ডেভিড ট্র্যাক্টস বিলি করতে সজলের সাথে রমনা পার্ক থেকে বের হল ।বের হয়ে চায়ের দোকানে ঢুকে তারা দুজন চা খেল ।
    হাটতে হাটতে ডেভিড বলতে লাগলো ,যারা পরিত্রান পেয়েছেন , তার জগত থেকে আলাদা রকম , তারা পুরানো স্বভাব ত্যাগ করে , নতুন মানুষে রুপান্তরিত হয় । সকলে তাকে দেখে বলে , এই মানুষটা আগের মতন নেই , কেমন যেন পরিবর্তন হয়ে গেছে ।
    ডেভিড বলতে লাগলো , এই যেমন আমি যীশুকে জানবার আগে অনেক রাগী ছিলাম , আমার বাবা মা এমন কি সকলে আমাকে বদ রাগী বলে জানত । কিন্তু এখন বলতে গেলে রাগ নেই । কেউ আমাকে মারলেও চেষ্টা করি প্রতিশোধ না নিতে । নম্রতার সাথে বলল ডেভিড ।
    ধরো তুমি যদি পুকুরে স্নান করলে তোমার সারা শরির সহ সব জামা কাপড় ভেজা থাকবে , সবাই জানবে যে তুমি ভিজে আছো , ঠিক না ?
    ঠিক একই ভাবে নতুন জন্ম পাবার পর তার জীবনে আমুল পরিবর্তন আসবে। কথায় কাজে , চিন্তায় , ব্যবহারে , সব কিছুতে ।
    সজল তোমার বোঝতে কষ্ট হচ্ছে ?
    না , ভালোই লাগছে শুনতে , এই রকম করে আগে শুনিনি , সজল বলল ।
    আরেকটা গুরত্বপুর্ন বিষয় হল , যদি তুমি সত্যিকার ভাবে পরিত্রান পেয়ে থাকো তবে তুমি কোন পাপ করলে ,তুমি কষ্ট পাবে, দুঃখ পাবে , আর সেই পাপের জন্য অনুতাপ করে যীশুর কাছে ক্ষমা চাবে ।
    কিন্তু তুমি যদি পরিত্রান প্রাপ্ত না হও তবে পাপ করে আনন্দ পাবে, অনুশেচনা আসবে না ।
    সজল এবার খানিকটা সময় নিয়ে বলল , আচ্ছা দাদা , পরিত্রান পাবার পর মানুষ আবার কি ভাবে পাপ করে ?
    ডেভিড একটু হেসে বলল , আমাদের দেহ তো মাংশিক , এই দেহ যতদিন জীবিত আছে ততদিন পাপের প্রবনতা থেকে যাবে ।একজন লোক শত চেষ্টা করেও তার পোশাকে ধুলা হীন রাখতে পারবেনা , যদি সে রাস্তায় বেরোয় তাই না ?
    হুম ,ঠিক ,সজলের উত্তর ।
    তেমনি যতদিন একজন বিস্বাসী পৃথিবীতে বেচে থাকবে ততদিন পাপ পরে যাবার সুযোগ থাকবে , কিন্তু গুরত্বপুর্ন বিষয় হল একজন বিস্বাসী পাপ না করার আপ্রান চেষ্টা করবে , ঈশ্বরের বাধ্য থাকবার চেষ্টা করবে , আর যদি কখনো পাপ করেই বসে তবে সে অনুতপ্ত হৃদয় নিয়ে প্রভুর কাছে এসে ক্ষমা চাবে ।
    সজল বলল , দাদা , আজকে অনেক কিছু শিখলাম আপনার কাছে থেকে , এগুলি আগে জানতাম না , ধন্যবাদ দাদা ।আরেক দিন আপনার কাছ থেকে আরো শিখবো,
    চলেন এখন ঘরে ফিরে যাই …………।। চলবে

    পরিচিতদেরকে জানাতে শেয়ার করুন

    আপনার জন্য আরো কিছু পোস্ট

    RELATED ARTICLES

      ADS