বড়দিন, বড়দিন, বড়দিন, দিনটি আসলে বড় নয়। কিন্তু এটি একটি আনন্দের দিন, আর সেই আনন্দ, সমস্ত মানব জাতির জন্য। এই আনন্দ হল পরিত্রাণের আনন্দ। এই দিনে আমাদের মুক্তিদাতা প্রভু যীশু খ্রীষ্ট স্বর্গধাম থেকে মানব জাতিকে পাপ থেকে মুক্ত করার জন্য ধরাধামে নেমে এলেন এবং আমাদের মত অধম পাপীদেরকে ত্বরালেন। এই দিনটিতে খাওয়া-দাওয়া নিয়ে ব্যস্ত থাকা বড় বিষয় নয়, এটি তখনই স্বার্থক হবে যখন আমরা আমাদের মুক্তিদাতা প্রভু যীশুকে আমাদের এই ছোট গোশালায় (হৃদয়ে) স্থান দিতে পারব।
কেন প্রভু যীশু খ্রীষ্ট এ জগতে এসেছিলেন?
প্রভু যীশু খ্রীষ্ট স্বর্গীয় রাজ সিংহাসন ছেড়ে, এই পৃথিবীর পাপী মানুষকে ভালবেসে, পাপীদের খোঁজে, পাপীদের কাছে এসেছিলেন তাঁর পরিত্রাণের বার্তা নিয়ে। তিনি পাপীদের জানিয়েছেন স্বর্গরাজ্যের কথা, পথ দেখিয়েছেন নতুন জীবনের ও নতুন সমাজের। তিনি মানুষের কাছে পৌছে দিয়েছেন প্রেমের অমৃত বাণী। তিনি মানুষের কাছে পৌছে দিয়েছেন প্রেমের অমৃত বাণী। তিনি বিশ্বের প্রত্যেকটি পাপী মানুষকে জানিয়েছেন তাঁকে অনুসরণ করার আমন্ত্রণ।
যীশু খ্রীষ্টের জন্ম কিভাবে হয়েছিল?
আজ থেকে প্রায় 2018 বছর পূর্বে যীশু খ্রীষ্ট প্যালেষ্টােইন দেশে জন্ম গ্রহণ করেন। ঐ সময়ে সেই দেশের লোকেরা খুব কষ্টভোগ করছিল, আর ঈশ্বরের লোকের বিদেশী রোমীয় শাসকদের আইন-কানুন মেনে চলতে হত। তারা অপেক্ষা করছিল ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞার বিষয়ে কারণ তিনি তাদের পূর্ব পুরুষদের প্রতিজ্ঞা করেছিলেন তাদের জন্য একজন রাজা দিবেন। ঈশ্বর সেই প্রতিজ্ঞা পূর্ণ করার জন্য মরিয়ম নামক একজন কুমারীর কাছে গাব্রিয়েল দূতকে পাঠালেন। গাব্রিয়েল দূতের কথানুসারে পবিত্র আত্মার মাধ্যমে মরিয়মের গর্ভ হল এবং ঈশ্বর তনয় ঈশ্বরের নিরূপিত সময়ে এই পৃথিবীতে আসলেন।
বড়দিনের আনন্দঃ
যীশু খ্রীষ্টের জন্ম এক দিকে আনন্দের দিন, অপরদিকে দুঃখ-কষ্টের দিন। পবিত্র বাইবেলে উল্লেখ রয়েছে যে, খ্রীষ্টের জন্মের সময়ে রাজা হেরোদ 2 বছরের নিচে যত বালক ছিল সকলকেই হত্যা করার আদেশ দিয়েছিলেন এবং তার আদেশ সৈন্যরা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছিল। এখন ভাবুন এই মর্মান্তিক অবস্থা! কত মায়ে কোল যে খালি হয়েছিল তার পরিসংখ্যান আমার জানা নাই কিন্ত ঘরে ঘরে যে আর্তনাদ, হাহাকার , ক্রন্দন ছিল তা বলাই বাহুল্য। এই দুঃখ -কষ্টের মধ্যে ও কিন্তু অনেকে আনন্দ প্রকাশ করেছিলেন তা লক্ষণীয়।
প্রথমতঃ আনন্দ প্রকাশ করেছিলেন মরিয়ম, কারণ তিনি হবেন জগতের ত্রাণক র্তার মাতা( লূক 1: 45-47) ;
দ্বিতীয়তঃ আনন্দ করেছিল মরিয়মের জ্ঞাতী ইলিশাবেৎ ও তাঁর জঠরের সন্তান যোহন বাপ্তাইজক । কেননা যীশু সংবাদে যোহন মাতৃগভে নেচে উঠেছিলেন এবং ইলিশাবেৎ আনন্দে মরিয়মকে প্রভুর মাতা বলে সম্ভাষণ জানিয়েছিলেন ( লূক 1:42-43)
তৃতীয়তঃ মাঠের রাখালেরা স্বর্দূতের মুখে যীশুর জন্মের সংবাদ শুনে আনন্দে মেতে উঠেছিলেন এবং যীশুর পায়ে প্রণাম জানিয়েছিলেন (লূক 2:8-20)
চতুর্থতঃ পূর্ব দেশের পন্ডিতবর্গ । আকাশের তারা গণনা করে যীশুর জন্মের সংবাদ জানতে পেরেছিলেন এবং যীশুর নিকটে এসে আপনাদের ধনকোষ খুলে তাঁকে মূল্যবান উপহার সামগ্রী দিয়ে প্রণাম জানিয়েছিলেন ( মথি) 2:11-12)
খ্রীষ্টেতে প্রিয় পাঠক ও পাঠিকা,
আজ পন্ডিতবর্গ দামি উপহার দিয়ে প্রণাম জানিয়েছেন যীশুর ঐ রাঙ্গা চরণে। আজ আমরা প্রভু যীশুর চরণে কি উপহার দিব?
বড়দিনের আনন্দ তখনই স্বার্থক হবে যখন যীশুকে আমাদের ছোট গোশালায় (হৃদয়ে) স্থান দিতে পারব। তাই আসুন , এই বড়দিনে আপনি / আমি আমরা সকলেই যীশুর চরণ কমলে আমাদের হৃদয়কে উৎসর্গ করি এবং প্রভুকে বলি, প্রভু এই তো আমরা তোমার অধম সন্তানেরা , আমাদের জীবনে তোমার কি পরিকল্পনা তা তুমি কর‘‘প্রকাশ’’
শুভ বড়দিনের আনন্দ শুভেচ্ছা রইল সকলের জন্য