যিরূশালেমের পথে যীশু

ads20

    শেষবারের মত যীশু যিরূশালেমে যাচ্ছেন। তিনি ও তাঁর শিষ্যেরা যখন একটি গ্রামের মধ্য দিয়ে  যাচ্ছিলেন তখন তারা দশজন লোকের দেখা পেলেন। সেই লোকেরা কুষ্ঠরোগে ভুগছিল। এর ফলে তাদের মুখের চেহারা ও হাতের আঙ্গুল নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। এই রোগের কারণে সেই লোকদেরকে তাদের নিজেদের গ্রাম ছেড়ে অন্য জায়গায় বাস করতে হত।তারা যখন একটি রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে যীশুকে ডেকে বলছিল, ‘আমাদের প্রতি দয়া করুন।’যীশু যখন তাদের দেখলেন তখন তিনি তাদের বললেন,‘আপনারা পুরোহিতদের কাছে গিয়ে নিজেদের দেখান, তারা আপনাদের পরীক্ষা করে দেখুক।’ (পুরোহিতেরা যখন তাদের পরীক্ষা করে বলবে যে, তারা সুস্থ হয়েছে তখনই তারা কেবল বাড়ী যেতে পারবে)।

    পথে যেতে যেতে তাদের গায়ের চামড়া ভাল গয়ে গেল। তারা একেবারে সুস্থ হয়ে গেল।মাত্র একজন লোক যে ছিল শমরীয় সে যীশুর কাছে ফিরে এসে তাঁকে ধন্যবাদ দিল। অন্যেরা খুব ব্যস্ত হয়ে গিয়েছিল তাদের নিজেদের বাড়ী যাবার জন্য। যীশু বললেন, ‘দশজন তো সুস্থ হল, তবে বাকি নয় জন কোথায়? মাত্র এই বিদেশী লোকটি একা এসে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিল?’অন্ধ বরতীময় বরতীময় যিরীহো শহরে বাস করত। সে অন্ধ ছিল বলে সংসার চালাবার জন্য কোন কাজ করতে পারত না। সে কারনে সে রাস্তার পাশে বসে ভিক্ষা করত, যারা সেই রাস্তা দিয়ে চলত তাদের কাছে সে ভিক্ষা চাইত।তার আকাংখা ছিল যেন তার চোখ ভাল হয়ে যায় আর অন্য সবার মত কাজ করে জীবন-যাপন করতে পারে। তাই সে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, যীশু যদি কখনও যিরীহোর রাস্তা দিয়ে যান তবে তাঁর কাছে সাহায্য চাইবে। যীশু একদিন সেই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। বরতীময় অনেক লোকের আসা যাওয়ার শব্দ শুনতে পাচ্ছিল। সে জিজ্ঞেস করল, ‘কি হচ্ছে, কে যাচ্ছে? আপনারা কি দেখতে পাচ্ছেন? আমাকে একটু বলুন।’

    তারা বলল, ‘যীশু এই রাস্তা দিয়ে আসছেন।’বরতীময় কিছু দেখতে পায় না বটে কিন্তু তাঁর গলার স্বরে কোন সমস্যা নেই।তাই সে চিৎকার করে ডাকতে লাগল,‘যীশু, নাসরতের যীশু, আমাকে দয়া করুন।’সে যখন যীশুকে ডাকছিল তখন লোকজনের কথাবার্তার অনেক শব্দও হচ্ছিল, তাই সে আরও জোরে যীশুকে ডাকতে লাগল। অন্ধ ভিক্ষুক বরতীময়কে যীশু তাঁর কাছে ডাকলেন। তখন সে লাভ দিয়ে উঠে তার গায়ের চাদর ফেলে যীশুর কাছে এল।

    যীশু তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনি কি চান, আমি আপনার জন্য কি করব?’উত্তরে বরতীময় বলল, ‘যীশু আমি দেখতে চাই। আমি সবকিছু দেখতে চাই।’যীশু বললেন, ‘তবে তাই হোক। আপনার বিশ্বাস আপনাকে সুস্থ করল।’সেই মুহূর্তেই বরতীময়ের চোখ খুলে গেল। সে যীশুকে দেখতে পেল! সে মহা খুশি হয়ে অন্যদের সঙ্গে যীশুর পিছনে পিছনে যেতে লাগল।

    সক্কেয় জেরিকো শহরের প্রধান কর-আদায়কারীর নাম ছিল সক্কেয়। সে ছিল খুব ধনী। কিন্তু তাকে দেখে মনে হত না যে সে ধনী। কারণ সে ছিল খুবই বেটে বা খাটো।সে যীশুকে দেখতে চায়, কিন্তু যীশুর সামনে-পিছনে অনেক লোকের ভিড়। তাতে কি! যেভাবে হোক সে যীশুকে দেখবেই। তার মাথায় একটি বুদ্ধি আসল। সে দৌড়ে লোকদের আগে গিয়ে একটি গাছে উঠল। এটা তার জন্য মোটেই সম্মানের বিষয় না হলেও এই জায়গা থেকে যীশুকে সে পরিষ্কার  দেখতে পাচ্ছে।যীশু সোজা সেই গাছটির নিচে গেলেন। তিনি উপরের দিকে তাকিয়ে সক্কেয়কে বললেন, ‘সক্কেয় নেমে  আসুন, আজ আমি আপনার বাড়ীতে অতিথি হব।’সক্কেয় এই কথা শুনে খুশিতে যেন গাছ থেকে লাফ দিয়ে পড়ে যাবে। সে নিজের কানকেই বিশ্বাস করতে পারছিল না।সে মহা খুশিতে তার বাড়ীতে যীশুকে নিয়ে গেল।সেদিন থেকেই সক্কেয়ের জীবন একেবারে পাল্টে গেল।সে বলল, ‘আমি আমার অর্ধেক সম্পত্তি গরীবদের বিলিয়ে দিচ্ছি। আর আমি যদি কাউকে ঠকিয়ে  থাকি তবে তার চারগুণ ফিরিয়ে দিচ্ছি।’লূক ১৭:১১-১৯; ১৯:১-৯; মার্ক ১০:৪৬-৫২


    পরিচিতদেরকে জানাতে শেয়ার করুন

    আপনার জন্য আরো কিছু পোস্ট

    RELATED ARTICLES

      ADS