সাধু অডিলো জীবনী

ads20
    বীর সন্ন্যাসী সাধু সুন্দর সিং : সাধু অডিলো ছিলেন একজন বেনিডিক্টটিয়ান সন্ন্যাসী, যিনি পরে ফ্রান্সের একটি বিখ্যাত আশ্রমের পঞ্চম প্রধান কর্তা হন। ফ্রান্সের একটি শহরে ৯৬২ খ্রীষ্টাব্দে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। খুব শীঘ্রই একজন ভাল নেতা হিসেবে তার অসাধারণ গুণ ও ক্ষমতা প্রকাশ পায়। তিনি আশ্রমের কর্তা হিসেবে ৫০ বৎসর সেবা দান করে ১০৪৯ খ্রীষ্টাব্দের ১ জানুয়ারি প্রভুতে নিদ্রিত হন।
    তাঁর জীবনীকার লিখেছেন, তিনি ছিলেন একজন খাটো মানুষ এবং তেমন সুদর্শন ছিলেন না। কিছু তার চরিত্রবলে এত উঁচুতে উঠেছিলেন যে, তখনকার সময়ে সকলেই তাঁে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করতেন। আশ্রম বা মঠের প্রধানকর্তা হিসেবে তাকে অনেক দায়িত্ব পালন করতে হতো। তার অধীনস্থদের প্রতি তাঁর ব্যবহার এতই মধুর ছিল যে, সকলে তার আদেশ শুনতে, কাজ করতে ও সর্বোপরি তাঁর কাছে থাকতে পছন্দ করতো।
    ১০৩০ খ্রীষ্টাব্দে তিনি পরলোকগতদের নিয়ে ভাবতে শুরু করলেন এবং তার নিজের আশ্রমে তাদের সর্ব সাধুর পরের দিন,২ নভেম্বর মৃতদের আত্মার উদ্দেশে বিশেষ পর্ব হিসেবে প্রার্থনা উৎসর্গ করা শুরু করলেন। যেহেতু ফ্রান্সে তার যথেষ্ট প্রভাব ছিল, সেহেতু পরবর্তীতে সমস্ত ইউরোপে এই পর্ব পরিচিত পেল এবং পরিশেষে আন্তর্জাতিকভাবে ল্যাটিন চার্চে অন্তর্ভূক্ত হলো। সেই থেকে আজ পর্যন্ত ২ নভেম্বর পরলোকগতদের স্মরণে এই পর্ব পালিত হয়ে আসছে।

    এই পর্ব পালনের গুরুত্বঃ
    আমরা বিশ্বাসূত্রে স্বীকারের সময় বলি,‘‘ আমরা সাধুদের সহভাগিতায়, পাপমোচনে, শরীরের পুনরুত্থানে ও অনন্ত জীবনে বিশ্বাস করি’’ । আমরা যখন সর্ব সাধুর পর্ব ও পরলোকগতের পর্ব স্মরণ করি, তখনই বিশ্বাসসূত্রের এই অঙ্গীকার পূর্ণতা পায়। আমাদের এই সহভাগিতা শুধু তাদের সাথে নয়, যারা আমাদের চারপাশে জীবিত অবস্থায় আছেন, কিন্তু যারা আমাদের পূর্বে প্রভুতে নিদ্রাগত হয়েছেন তাদের সাথেও প্রতিটি ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, সকলের পবিত্র সম্পর্ক গঠন ও তা রক্ষা করে চলা, যা আধুনিক বিশ্বে বড়ই অভাব। আদি ম-লীর ভাই বোনেরা আপ্রাণ চেষ্টা করতেন যেন, তারা সকলে একত্রে বাস করতে পারেন। আমরাও প্রতিটি পবিত্র প্রভুরভোজের উপাসনায় দৃশ্য ও অদৃশ্য সকলের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করি।
    প্রথমতঃ যে সকল সাধুভক্তগণ প্রভুতে বিশ্বাসপ্রাপ্ত হয়েছেন, তাদের জীবনের জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দেওয়া।দ্বিতীয়তঃ তারা ঈশ্বরের রাজ্যবিস্তারের জন্য যে আদর্শ রেখে গেছেন, আমরাও যেন সে সকল অনুকরণ করতে চেষ্টা করি এবং একদিন তাদের সাথে একত্রে পরম পিতার সাথে অফুরন্ত আনন্দের সহভাগী হতে পারি।
    যখন আমরা পরিচিত বা বিশেষ উল্লেখযোগ্য সাধু সাধ্বীদের ১ নভেম্বর স্মরণ করি, তখন আরও অনেক মানুষ ছিলেন, যারা ইতিপূর্বে প্রভুতে নিদ্রিত হয়েছেন, যাদের আমরা চিনি না, তাদের সম্পর্কে কিছুই জানি না। কিন্তু এমনও হতে পারে যে, তারাও প্রভুকে বিশ্বাস করে তাঁর পক্ষে অনেক সুন্দর কাজ করেছিলেন, সমাজের জন্য অনেক অবদান রেখেছিলেন। তাদের এই অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ আমরা ২ নভেম্বর তাদের জীবনের জন্য ঈশ্বরে ধন্যবাদ দিতে পারি। সুতরাং পরলোকগত বিশ্বাসীদের পর্ব আমাদের এই শিক্ষা দেয় যে, যারা প্রভুতে নিদ্রিত হয়েছেন এবং বর্তমানে আমরা যারা প্রভুতে বিশ্বাস করি, আমরা আত্মায় এক। আমরা এও বিশ্বাস করি যে, যারা আমাদের পূর্বে প্রভুর কোলে ঠাঁই নিয়েছেন, তারা আমাদের পক্ষে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছেন।




    সাধু অডিলো জীবনী 




    পরিচিতদেরকে জানাতে শেয়ার করুন

    আপনার জন্য আরো কিছু পোস্ট

    RELATED ARTICLES

      ADS