অপ্রিয় হলেও সত্য - ২ ( Although it is unpleasant but true 2)

ads20

    পবিত্র বাইবেলের দৃষ্টিকোন থেকে আমরা দেখতে পাই, ঈশ্বর এই জগৎকে সৃষ্টি করলেন। ঈশ্বর ধাপে ধাপে খুব সুক্ষ ভাবেই সমস্ত কিছু সৃষ্টি করলেন। কিন্ত তিনি সব শেষে মনুষ্যকে নির্মাণ করলেন। ঈশ্বর প্রথমে মনুষ্য তথা কোন প্রাণীকেই নির্দিষ্ট ভাবে আয়ু দেন নাই। কিন্তু জল প্লাবনের ঠিক পূর্ব মুহুর্তে ঈশ্বর কেবল মাত্র মনুষ্যদের আয়ু ১২০ বছর দিলেন- আদি ৬;১-৩ পদ।

    আজ আমরা মানুষের বর্তমান আয়ু সম্পর্কে একটি চমৎকার গল্প শুনতে যাচ্ছি যাহা কোন না কোন একজন মানুষ বলেছেন। গল্পটি এই রকম:-

    # গাধাকে সৃষ্টি করার পরে সৃষ্টিকর্তা বললেন; তুমি আজীবন কঠোর পরিশ্রম করবে, অন্যের বোঝা বয়ে বেড়াবে। তোমার মাথায় কোন বুদ্ধিসুদ্ধি থাকবে না। তোমাকে আমি ৫০ বছর আয়ু দিলাম।

    গাধা বলল, সে কি !! এত কষ্ট করে আমি এত দীর্ঘদিন বাঁচতে চাই না। দয়াকরে আমার আয়ু কমিয়ে ২০ বছর করে দিন। সুষ্টিকর্তা বললেন, বাহ্ তোমাকে বিশ বছরই দিলাম।

    # কুকুরকে বললেন; তুমি হবে মানুষের সবচেয়ে বিশ্বস্ত বন্ধু। কিন্তু মানুষের উচ্ছিষ্ট খাবার খেয়ে বেঁচে থাকবে। তোমার আয়ু হবে ৩০ বছর।

    এই কথা শুনে কুকুর সৃষ্টিকর্তাকে বলল; দয়াকরে একটু শর্ট করে এটা ১৫ বছর করে দিন। আমি এতোদিন বাঁচতে চাই না। সৃষ্টিকর্তা এইবারও কুকুরের কথায় রাজি হয়ে গেলেন।

    # এরপর সৃষ্টিকর্তা বানরকে বললেন, ওহে বানর; তোমার একমাত্র কাজ হবে লাফিয়ে লাফিয়ে এক গাছ থেকে আরেক গাছে যাওয়া। আর তামাসা দেখিয়ে মানুষকে বিনোদন দেওয়া। আমি তোমাকে ২০ বছর আয়ু দিলাম।

    বানর বলল, দিবেনই যখন ১০ বছর দেন। আমি এতো বড় জীবন দিয়ে কি করব ?

    # এরপর সৃষ্টিকর্তা মানুষকে বললেন, তুমি সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব। সবচেয়ে জ্ঞানী ও বিচক্ষণ; তোমার আয়ু হবে ২০ বছর।

    সে তো খুশীতে পাগল হয়ে গেল, আর মনে মনে বলল, এত মহৎ জীবন নিয়ে মাত্র ২০ বছর ?? তাই সৃষ্টিকর্তাকে বলল, সমস্ত কিছু সৃষ্টির পর আপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন; আর বলেছেন, আমি পৃথিবীর সমস্ত সৃষ্টির উপর তোমাকে খবরদারী করবার ক্ষমতা দিলাম। তাই সে করজোরে প্রভুকে বলল, একটা কাজ করলে হয় না ? আপনি আমাকে গাধার ফেরত দেওয়া ৩০ বছর, কুকুরের ১৫ বছর এবং বানরের ১০ বছর দিয়ে দিন; যেন আমি সমস্ত সৃষ্টির উপর খবরদারি করতে পারি।

    সৃষ্টিকর্তা বললেন, “ নিজের ভাল পাগলেও বোঝে ” কিন্তু তুমি বুঝলে না। তাই আমি তোমার মনের আশা পূরণ করলাম; যাহ্ আমি তোমাকে তা-ই দিলাম, এবার খুশী তো ? যাও এবার সমস্ত সৃষ্টির উপরে ইচ্ছামত খবরদারি কর।

    # সেই থেকে মানুষ হিসেবে খুব ভালভাবে পিতা-মাতার আদর ¯েœহে বেঁচে থাকে ২০ বছর। তখন তার খাওযা-দাওয়া, লেখা-পড়ার কোন চিন্তা করতে হয় না। বাবার হোটেলে সে খুব ভালভাবেই কাটিয়ে দেয়। পরের ৩০ বছর গাধার মতো সংসারের বোঝা টানে। তার পরের ১৫ বছর ছেলেমেয়ে যা দেয়, তাই খেয়ে-পড়ে কুকুরের মতো জীবন যাপন করে। আর তার পরের ১০ বছর কাটে বানরের মতো। কখনো এক সন্তানের বাসা খেকে আরেক সন্তানের বাসায় ঘোরে; আর নাতি-নাতনিদের বিনোদন দেওয়াই হয় তাদের প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য।

    উপসংহার:- ঠিক জানি না এই গল্পটি উন্নত কোন দেশের জন্য প্রযোজ্য কি না ? কিন্তু হ্যা! আমাদের দেশের জন্য প্রযোজ্য। আমরা আমাদের নিজেদের কাছে নিজেরাই প্রশ্ন করি, গল্পটি কতটা সত্য এবং বাস্তব। আর বাস্তবতা তাহাই, যাহা বাস্তবে স্বচক্ষে দেখা যায়, যাচ্ছে। কিন্তু পবিত্র বাইবেল এমন চিত্রের বিবরণ আমরা দেখতে পাই না। বরং পবিত্র বাইবেলে বর্ণীত দশ আজ্ঞা হইল পৃথিবীর সকল দেশের, রাষ্ট্রের, গোত্রের তথা মানব জাতির ব্যবস্থা/আইন-কানুন। সেখানে ৫ম আজ্ঞাতে আমরা স্পষ্ট দেখতে পাই যে, “ তোমার পিতাকে ও মাতাকে সমাদর করিও। যেন তোমার ঈশ্বর তোমাকে যে দেশ দিবেন, সেই দেশে তোমার দীর্ঘ পরমায়ু হয়- যাত্রা ২০;১২ পদ। অর্থাৎ পিতা-মাতার প্রতি সঠিক দায়িত্ব কর্তব্য পালন করবার পরেই আমরা দীর্ঘ পরমায়ু নিয়ে আশীর্বাদের সহিত জীবন যাপন করব। কিন্তু সেই মানুষ, যে মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব; যাকে ঈশ্বর তাঁর নিজ প্রতি মূর্তিতে নির্মাণ করেছিলেন; সেই মানুষের এমন ব্যবহার/আচারণ। তাই তো বলি, “ অপ্রিয় হলেও সত্য।

    লেখক : পাষ্টর কিশোর তালুকদার



    পরিচিতদেরকে জানাতে শেয়ার করুন

    আপনার জন্য আরো কিছু পোস্ট

    RELATED ARTICLES

      ADS