পুরো বিশ্ব এখন করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে ভুগছে । প্রতিদিন নতুন নতুন দেশ আক্রান্ত হচ্ছে এই ভাইরাসের আঘাতে , অনেক মানুষ প্রান হারাচ্ছে, বলা যায় শতাব্দির সবচেয়ে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতে বর্তমান পৃথিবী । ভাইরাসটির আরেক নাম ২০১৯ - এনসিওভি বা নভেল করোনাভাইরাস। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা রোগটির আনুষ্ঠানিক নাম দেয় কোভিড-১৯ যা 'করোনাভাইরাস ডিজিজ ২০১৯'-এর সংক্ষিপ্ত রূপ।
সম্প্রতি বাংলাদেশ করোনা ভাইরাস আঘাত করেছে খুব স্বাভাবিক ভাবেই ,চারিদিকে মানুষের ঘুম কেড়ে নিচ্ছে , সরকার চেষ্টা করছে সাধ্যের মধ্য দিয়ে মানুষকে রক্ষা করার , পাশাপাশি জনগণকে সচেতন করছে , রাত দিন পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে দেশের মানুষদের রক্ষা করার জন্য নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে সরকার ।
একজন সচেতন বিস্বাসী হিসাবে করোনা ভাইরাসের প্রতিরোধে কি করনিয় বা কি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত এসব নিয়ে কথা বলা এখন জরুরী হয়ে পরেছে ।
সবার আগে বাইবেল আমাদের এই কথা বলে যে , শেষ কালে নানা বিধ রোগ ব্যাধি , প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রদুর্ভাব ঘটবে বলে ভব্যিষ্যত বানী করা হয়েছে । প্রকাশিত বাক্য ৬ :৮ লেখা আছে , পরে আমি দৃষ্টিপাত করিলাম, আর দেখ, এক পাণ্ডুবর্ণ অশ্ব, এবং যে তাহার উপরে বসিয়া আছে, তাহার নাম মৃত্যু, এবং পাতাল তাহার অনুগমন করিতেছে; আর তাহাদিগকে পৃথিবীর চতুর্থ অংশের উপরে কর্তৃত্ব দত্ত হইল, যেন তাহারা তরবারি, দুর্ভিক্ষ, মহামারী ও বনপশু দ্বারা বধ করে ।
বৃহৎ বৃহৎ ভূমিকমপ এবং স্থানে স্থানে দুর্ভিক্ষ ও মহামারী হইবে, আর আকাশে ভয়ঙ্কর ভয়ঙ্কর লক্ষণ ও মহৎ মহৎ চিহ্ন হইবে ,লুক ২১ : ১১ পদে ও ভবিষ্যত বাণি করা হয়েছে ।
তবে একটা বিষয় নিশ্চিত যে , পৃথিবীর সব স্থানে সুসমাচার প্রচারিত হবার পর যীশুর দ্বিতিয় আগমন ঘটবে তার আগে নয় ।
সুতারং যারা শাস্ত্র জানে তাদের কাছে করোনা ভাইরাস অবাক হবার কোন বিষয় না ,কিন্তু অনেকের কাছে যারা বাইবেল জানেন না তাদের কাছে রীতিমত অনাকংখিত ।
পবিত্র শাস্ত্র আমাদের এই সব ঘটনা বলী ঘটবার পুর্বেই আত্মিক ভাবে প্রস্তুত হবার কথা বলেছেন । ঈশ্বরের বাক্য আমাদের মনোবল বাড়িয়ে দিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সাহায্য করে , কারন বাইবেল হল ঈশ্বরের উপস্থিতি ।
করোনা ভাইরাস বাইবেলে একটি ঘটনা কে স্মরন করে দেয় , মোশির আমলে দশটি আঘাতের ঘটনার কথা নিশচয় মনে আছে , দশম আঘাতের সময় সংহারকর্তা সকল প্রথম জাত সন্তান কে আঘাত করলেন কিন্তু যে ঘরের বাজুয়ার দুই পাশে ও কপালিতে মেষশাবকের রক্ত লেপন ছিল সেখানে মৃত্যুদুত আঘাত করতে পারে নাই যাত্রা ১২ :২৩ । ইস্রায়েল জাতিকে প্রভু এভাবেই রক্ষা করেছিলেন রক্তের মাধ্যমে ।
প্রভু যীশু তিনি ক্রশোপরে রক্ত দিয়ে সমগ্র মানব জাতিকে রক্ষার ব্যবস্থা করেছেন । তাই তো সাধু দায়ুদ বলেছেন , ঈস্বর আমাদের ব্যাধের ফাদ হইতে , সর্বনাশক মাড়ি ,সাংঘাতিক ব্যাধি হতে রক্ষা করবেন ,তিনি সকল প্রকার উতপাত ও বিপদমুক্ত রাখবেন । শক্তিশালি সিংহ বা বিষধর সাপ কিছুই করতে পারবেনা কারন আমরা সদাপ্রভুকে জেনেছি তাই আমরা ভীত হবোনা , বরং সদাপ্রভু আমদের দীর্ঘ আয়ু দিয়া বাচিয়ে রাখবেন গীত ৯১।
যে রোগে মানুষ মারা যায় , সেই রোগ একমাত্র যীশুই পারেন প্রতিরোধ করতে । কারন সব রোগের উৎস সেই পাপকে ধ্বংশ করেছেন প্রভু যীশু তার নিস্পাপ রক্ত দিয়ে । তার ক্ষত সকল দ্বারা আমরা আরোগ্য হই যিশাইয় ৫৩ :৫ ।
তাই সাধু পৌল বলেছেন , কেননা ঈশ্বর আমাদিগকে ভীরুতার আত্মা দেন নাই, কিন্তু শক্তির, প্রেমের ও সুবুদ্ধির আত্মা দিয়াছেন। ২য় তিমথি ১ :৭ ।
সুতারং করোনা ভাইরাস নিয়ে বিস্বাসীদের ভয় পাবার সুযোগ নেই একমাত্র ঈশ্বর ছাড়া বিশ্বাসীরা আর কাউকে ভয় পাননা । পৃথিবির ইতিহাসে অনেক বড় বড় দুর্যোগের কথা আমরা জানি ,আবার এটাও জানি পৃথিবীর সব কিছু প্রভুর নিয়ন্ত্রনে আছে । যা কিছু ঘটছে মানব সমাজে ,সব কিছু ঈশ্বরের রাজ্যের মঙ্গলের জন্য ঘটছে । হতে পারে এসব বিশ্বাস করা সময়ের কারনে একটু কঠিন তবে এটাই সত্যি যে প্রভু যা করেন তা মঙ্গলের জন্য করেন ।বাইবেলে ইয়োবের জীবন দ্বারা প্রমানিত , তাই করোনা ভাইরাসের সময় একজন মন্ডলির সদস্যের কি করা উচিত তা নিয়ে কিছু আলোচনা করি ।
প্রথম বিষয় : পরিত্রানের বিষয়ে নিশ্চিত থাকুন
করোনা ভাইরাসের প্রতিরোধে একজন মন্ডলির সদস্য হিসাবে প্রথম কাজ হবে , নিজেকে প্রশ্ন করা , আমার হৃদয়ে প্রভু হয়ে কে আছেন , আমি না যীশু ?
অনেকের কাছে বিষয়টি হাস্যকর হতে পারে তবে বিষয়টি খুব গুরত্বপুর্ন ও মহামারী করোনার সাথে যুক্ত , প্রশ্ন হল কিভাবে ? কারন যদি আপনি যীশুর হয় থাকেন তবে মৃতুকে ভয় পাবেন না , এর মানে করোনা ভাইরাস বা এর চেয়ে মারত্বক কোন মহামারী হলেও আপনি যীশুর উপর নির্ভরশিল হবেন , বরং সর্বদাই আত্মায় আনন্দিত থাকবেন । পৌলের মত ভাববেন জীবিত থাকলে প্রভুর গৌরব করবো , মরে গেলে প্রভুর সঙ্গে গিয়ে থাকবো ফিলিপিয় ১ :২১-২৪ ।
কিন্তু আপনার জীবনে যদি পরিত্রানের অভিজ্ঞতা না থাকে তাহলে শুধুমাত্র করোনা ভাইরাস না , যে কোন পরিস্থিতিতে ঘাবড়ে যাবেন , ভয় পাবেন , ঘুমাতে পারবেন না , ছোটাছটি করতে থাকবেন । জীবনে কোন আশা থাকবেনা আর তাই আত্মিক বিষয় গুলির উপর আপনার বিশ্বাস থাকবেনা , । বিভিন্ন খবর বা উপদেশ অথবা নিজের জ্ঞান বুদ্ধি নিয়ে প্রানিক মানুষের মত আচরন করতে থাকবেন , একবার ভাবেন আপনি ঠিক পথেই হাঁটছেন আবার ভাববেন আপনি হারিয়ে যাচ্ছেন । ভাবুনতো করোনা নিয়ে আপনার মন্তব্যগুলো কি , আপনি কি প্রচন্ডভাবে আতঙ্কিত ? বাচার জন্য নানবিধ পথ খোজছেন ?
মজার ব্যাপার হল ,শেষ পর্যন্ত কি হবে কি হবে সে বিষয়ে কোন নিশ্চয়তা আপনার নেই ।
সেজন্য এই দুর্দিনে প্রভুর আহবান করছেন আপনাকে , তুমি আমার কাছে আসো , আমি তোমার ভাবনার ভার তুলে নেবো ।তাই বিলম্ব না করে এই মুহুর্তে প্রভু যীশুকে গ্রহন করেন , জীবনের নিশ্চয়তা খুঁজে নেন । করোনার আতঙ্ক থেকে নির্ভিয়ে জীবন যাপন করেন ।
দ্বিতীয় বিষয় : মেডিকাল উপদেশ গুলো মেনে চলুন
করোনা প্রতিরোধে সবচেয়ে গুরত্বপুর্ন দিক গুলি হচ্ছে সচেনতা বাড়ানো , পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা , ভীর এড়িয়ে চলা , ঘরের বাইরে না যাওয়া , আক্রান্ত ব্যাক্তির কাছে না যাওয়া , ফলের রস ও জল বেশি করে পান করা ।
এখানে বলা রাখা দরকার অনেক এখন দেশে সব রকম পাবলিক স্থান গুলোতে অস্থায়ী ভাবে জনগণের জন্য যাওয়া নিসিদ্ধ করে দিইয়েছেন , লক ডাউন করা হয়েছে অনেক দেশ । বাংলাদেশে গির্জাঘর বন্ধ করে দেবার মত পরিস্থিতি হলে , ছোট ছোট দল হয়ে পারিবারিক উপাসনা শুরু করা যেতে পারে ,এতে একজন বিশ্বাসীর অন্য বিশ্বাসীর সম্পর্ক আরো আন্তরিক হবে ,পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধ বাড়বে এবং আরো ঘনিষ্ট সম্পর্ক গড়বে ।প্রাথমিক যূগে মন্ডলির উপসনা তো ঘরেই ঘরেই হত , এই মন্ডলিকে বলা হত গৃহস্থিত মন্ডলি , কোন চার্চ ঘর ছিল না । মন্ডলিতে উপবাস প্রার্থনা বা চেইন প্রেয়ার করা যেতে পারে ।
সবচেয়ে গুরত্বপুর্ন বিষয় হল , প্রভু আপনাকে এই সময়টুকোতে তার গৌরবের নিমিত্ত অন্য কাজের মধ্য দিয়ে ব্যবহার করতে পারেন । যেহেতু ঘরের বাইরে যাওয়া নিরাপদ না তাই একজন বিস্বাসীর কাছে একটা বড় সুযোগ যেন সে ঘরে বসে দীর্ঘ সময় ধরে প্রার্থনা ও বাইবেল পাঠ করতে পারে, ধ্যান করতে পারে । প্রয়োজনে ফোন বা বিভিন্ন ডিজিটালের মাধ্যমে অন্য কাউকে সচেতন করতে পারেন , সুসমাচার প্রচার করতে পারেন । এমনকি ঘরে বসে পরিবারের অন্য সবাইকে বাইবেলের শিক্ষা দিতে পারে । দেখা যায় ব্যস্ততার কারনে পরিবারকে সময় দেওয়া খুব কঠিন , তাই এই সমইয়টাকে পরিবারের জন্য দিন ।
তৃতিয় বিষয় : আক্রান্ত হলে ভয় না পেয়ে প্রভুর ইচ্ছাকে মেনে নিন
করোনা নিঃসন্দেহে ভয়ঙ্কর , কিন্তু প্রভুর শক্তির কাছে একাবারেই ছোট একটা বিষয় ।আমদের মনে রাখা দরকার যে, করোনা ভাইরাসের চেয়ে আমদের যীশু অনেক বেশী বড় ।
যীশু ক্রুশের মৃত্যু ও পুনুর্থানের মধ্য দিয়ে শয়তান পরাজিত হয়েছে ,তাই করোনা ভাইরাসকে আমরা বলতে পারি পরাজিত শয়তান , যদি এই ভাইরাস আপনাকে আক্রমান করেই থাকে ,তবে তা মেনে নিয়ে প্রভুর কাছে সমর্পিত থাকেন, অবিবেচকের মত করো দোষারোপ না করে ধৈর্য ধরুন এবং প্রার্থনার পাশাপাশি চিকিৎসা নিতে থাকুন ।এটা ভাবতে থাকেন প্রভু যা করেন মঙ্গলের জন্য করেন । একমাত্র প্রভুই আপনাকে করূনা করে করোনা থেকে উদ্ধার করতে পারেন ।
আর যদি চিরতরে নিদ্রায় যেতে হয় তবে এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন যেন সবাই আপনার প্রস্থানের মধ্য দিয়ে প্রভুর গৌরব করবেন । কারন আপনি নরকে যাবেন না , প্রভুর কাছে যাবেন , তাহলে ভয় কি ।
পরিশেষে বলতে চাই ,আজকে করোনা ভাইরাসের আক্রমন কাল অন্য কিছু কিন্তু আমার আমার প্রভুর করুনা চিরকাল থাকবে । আমেন