
যখন শৌল রোমান সাম্রাজ্যের সর্বত্র যাত্রা করলেন তখন তিনি তার রোমান নাম “পৌল” ব্যবহার করেছিলেন৷ একদিন, পৌল আর তার সঙ্গী সীল ফিলিপীয়ের এক নগরে যীশুর সুসমাচার প্রচার করতে গেলেন৷ তারা নগরের বাইরে নদীর ধরে সেখানে গেলেন যেখানে লোকেরা প্রার্থনা করতে যেত৷ সেখানে তারা লুদিয়া নামক এক ব্যবসায়ী মহিলার সাথে দেখা করলেন৷ তিনি ঈশ্বরকে ভালোবাসতেন আর আরাধনা করতেন৷
ঈশ্বর লুদিয়ার হৃদয় খুলে দিলেন যীশুকে বিশ্বাস করার জন্য আর তিনি ও তার পরিবার বাপ্তিস্ম নিলেন৷ তিনি পৌল আর সীলকে তার বাড়িতে থাকার জন্য অনুগ্রহ করলেন, তাই তারা তার পরিবারের সাথে থাকলেন৷
পৌল আর সীল প্রায়ই প্রার্থনার স্থানে যেতেন৷ যতবার তারা সেখানে যেতেন, ততবার একটি দাসী মেয়ে যে ভূতগ্রস্ত ছিল তাদের অনুস্বরণ করত৷ এই ভূতটির দ্বারা সে লোকেদের ভবিষ্যত বলত, আর জোতিষ বিদ্যার দ্বারা সে তার মালিককে প্রচুর ধন রোজগার করে দিত৷
সেই দাসীটি বলতেই থাকত যখন তারা হেঁটে বেড়াত, “এই লোকগুলো মহান ঈশ্বরের দাস৷ তারা তোমাদের উদ্ধারের পথ বলছে!” সে বহু বার এমনই করল যে পৌল বিরক্ত হয়ে উঠল৷
অন্তিমে একদিন যখন সেই দাসীটি চিৎকার করে বলা শুরু করল, তখন পৌল তার দিকে ফিরলেন আর তার ভিতরের ভূতটিকে বললেন, “যীশুর নামে এই মেয়েটির ভিতর থেকে বেরিয়ে যাও৷” তখনই ভূতটি বেরিয়ে গেল৷
সেই লোকটি যে সেই দাসীটির মালিক ছিল খুব রেগে গেল৷ তারা দেখল যে ভূতটিকে ছাড়া দাসীটি ভবিষ্যত আর বলতে পারছে না৷ এর অর্থ হল যে লোকেরা আর দাসীটির মালিককে আর কোনো টাকা দেবে না তাই এখন তাদের কি হবে৷
তাই সেই দাসীটির মালিক পৌল আর সীলকে রোমান শাসকদের কাছে নিয়ে গেল, যারা তাদের পেটালো আর তাকে জেলে পুরে দিল৷
তারা পৌল আর সীলকে জেলের সবচাইতে সুরক্ষিত জায়গায় রাখল আর তাদের পা শিকল দিয়ে বেধে রাখল৷ কিন্তু তবুও মধ্য রাতে, তারা ঈশ্বরের স্তুতি গান গায়ছিলেন৷
হঠাৎ, সেখানে ভীষণ এক ভূমিকম্প হয়! জেলের সকল দরজা খুলে গেল আর বন্দিদের পায়ের শিকল সব খুলে গেল৷
জেল অধিকারী ঘুম থেকে উঠলেন,যখন তিনি দেখলেন যে জেলের সকল দরজা খোলা, তিনি ভয় পেলেন৷ তিনি ভাবলেন যে সকল বন্দীরা পালিয়েছে, তাই সে আত্যহত্যা করার চেষ্টা করলেন৷ (তিনি জানতেন যে রোমান শাসকরা যদি জানতে পায় যে তিনি বন্দিদের পালাতে দিয়েছে তাহলে তাকে তারা মেরে ফেলবে৷) কিন্তু পৌল তাকে দেখলেন আর বললেন, “থামুন! নিজেকে আঘাত করবেন না৷ আমরা সকলেই এখানেই রয়েছি৷”
জেল অধিকারী কাঁপতে কাঁপতে পৌল আর সীলের কাছে এলেন আর জিজ্ঞাসা করলেন, “উদ্ধার পেতে আমাকে কি করতে হবে?” পৌল উত্তর দিলেন, “প্রভু যীশুর উপর বিশ্বাস করুন আর আপনি আর আপনার পরিবার উদ্ধার পাবে৷” তারপর জেল অধিকারী পৌল আর সীলকে তার বাড়িতে নিয়ে গেলেন আর তাদের আঘাত ধুলেন৷ পৌল তার পরিবারের সকলকে সুসমাচার শুনালেন৷
তিনি ও তার পরিবারের সকলে বিশ্বাস করলেন ও বাপ্তিস্ম নিলেন৷ তারপর তিনি পৌল আর সীলকে খেতে দিলেন আর একত্র মিলে আনন্দ করলেন৷
পরদিন নগরের নেতারা পৌল আর সীলকে জেল থেকে মুক্ত করল আর ফিলিপীয় ছেড়ে চলে যেতে বলল৷ পৌল আর সীল লুদিয়ার আর অন্য সঙ্গীদের সাথে দেখা করলেন আর তারপর নগর ছেড়ে চলে গেলেন৷ যীশুর সুসমাচার চারিদিকে ছড়াতে লাগলো আর চার্চ বৃদ্ধি পেতে থাকলো৷
পৌল আর অন্যান্য খ্রিস্টান নেতারা বহু শহরে যাত্রা করল আর যীশুর সুসমাচার লোকেদের প্রচার করল আর শেখাল৷ চার্চসমূহের বিশ্বাসীদের উৎসাহ আর শেখাতে নানান চিঠি পত্রও তারা লিখেছিল৷ সেগুলোর কিছু কিছু পরে বাইবেলের কিছু পুস্তক হয়েছে৷
একটি বাইবেল কাহিনী: নেওয়া হয়েছে: প্রেরিতদের কার্য //১৬://১১//-৪০//