একজন খ্রীষ্টিয়ান মা হয়ে উঠবার বিষয়ে বাইবেল কী বলে?

ads20
    মা হতে পারা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় যা প্রভু ঈশ্বর অনেক মহিলাদের দান করতে পছন্দ করেন। খ্রীষ্টিয়ান মা-দের বলা হয়েছে যেন তারা তাদের ছেলেমেয়েদের ভালবাসে (তীত ২:৪-৫ পদ), এক্ষেত্রে সে (মা) তার ব্যক্তি জীবনে প্রভু এবং ত্রাণকর্তা হিসাবে যাঁর নাম বহন করে সেই প্রভু যীশুর উপর কোনরূপ নিন্দা বা তিরস্কার বয়ে আনবে না। 

    ছেলেমেয়েরা হলো প্রভুর কাছ থেকে আসা উপহারস্বরূপ (গীতসংহিতা ১২৭:৩-৫ পদ)। তীত ২:৪ পদে ব্যবহৃত গ্রীক শব্দ ফিলোটেকনোস (Philoteknos)–কে ছেলেমেয়েদের প্রতি মায়ের ভালবাসা বুঝাতে ব্যবহার করতে দেখা যায়। এই শব্দটি একটি বিশেষ ধরনের “মায়ের ভালবাসা”-র কথা তুলে ধরে। এই শব্দ থেকে যে ধারণাটির উদ্ভব হয় তা হলো ছেলেমেয়েদের প্রতি মায়েদের যত্ন-আত্তি, তাদের লালন-পালন করা, স্নেহ-মায়া-মমতায় তাদের জড়িয়ে ধরা, তাদের চাহিদাগুলো পূরণ করা এবং ঈশ্বরের নিকট থেকে পাওয়া এই অদ্বিতীয় ও অতুলনীয় দানের প্রতি কোমল ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা। 

    খ্রীষ্টিয়ান মায়েদের জন্য ঈশ্বরের বাক্যে অর্থাৎ পবিত্র বাইবেলে কতিপয় অবশ্য করণীয় বিষয় আদেশ করা হয়েছে:

    সচরাচর পাওয়া যায় এমন বা সহজ প্রাপ্যতা- সকাল, দুপুর এবং রাতে ঈশ্বর সম্বন্ধে ছেলেমেয়েদের বার বার শিক্ষা দেওয়া (দ্বিতীয় বিবরণ ৬:৬-৭ পদ)।

    জড়িত থাকা- একজন অন্যজনের প্রতি প্রতিক্রিয়া দেখানো, আলাপ-আলোচনা করা, চিন্তা-ভাবনা এবং একত্রে জীবন-যাপন করার কৌশল বা উপায়গুলোর সাথে নিজেদের জড়িত রাখা (ইফিষীয় ৬:৪ পদ)।

    শিক্ষা দেওয়া- পবিত্র শাস্ত্র এবং বাইবেলসম্মত দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে ছেলেমেয়েদের শিক্ষা প্রদান করা (গীতসংহিতা ৭৮:৫-৬; দ্বিতীয় বিবরণ ৪:১০; ইফিষীয় ৬:৪ পদ)।


    প্রশিক্ষণ দেওয়া- ছেলেমেয়েরা যেন তাদের দক্ষতা বা যোগ্যতার উন্নয়ন ঘটাতে পারে সেইজন্য তাদের সাহায্য করা এবং তাদের শক্তি বা সামর্থ্য কতটুকু (হিতোপদেশ ২২:৬ পদ) এবং তাদের মধ্যে কী কী আত্মিক দান বা বর আছে (রোমীয় ১২:৩-৮ বেং হিতোপদেশ ১৩:২৪; ১৯:১৮; ২২:১৫; ২৩:১৩-১৪; ২৯:১৫-১৭ পদ) সেগুলো খুঁজে বের করা। 

    লালন-পালন করা- ছেলেমেয়েদের জন্য একটি দৃঢ় বা স্থির মৌখিক সমর্থনসূচক, গ্রহণীয়, স্নেহ-মায়া-মমতাপূর্ণ এবং শর্তহীন ভালবাসাপূর্ণ একটি পরিবেশের যোগান দেওয়া (তীত ২:৪; ২তীমথিয় ১:৭; ইফিষীয় ৪:২৯-৩২; ৫:১-২; গালাতীয় ৫:২২; ১পিতর ৩:৮-৯ পদ)। 

    ন্যায্যতার নমুনা বা মডেল স্বরূপ- মুখে যা বলা হয় সেভাবে জীবন যাপন করা, এমন একজন অনুকরণীয় ব্যক্তি হওয়া যার কাছ থেকে শিশুরা ঈশ্বরপ্রেমী বা ঐশ্বরিক জীবন যাপন করার বিষয়গুলো শিখতে পারে (দ্বিতীয় বিবরণ ৪:৯,১৫,২৩; হিতোপদেশ ১০:৯; ১১:৩; গীতসংহিতা ৩৭:১৮,৩৭ পদ)। 

    পবিত্র বাইবেল কখনই এই বিবৃতি প্রচার করে না যে, প্রত্যেক মহিলারই মা হওয়া উচিত। যাহোক, বাইবেল
    এটি প্রকাশ করে যে, ঈশ্বর যাদের মা হওয়ার জন্য আশীর্বাদ করেছেন তাদের অবশ্যই এই দায়িত্ব-কর্তব্যগুলো অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে গ্রহণ করা উচিত। ছেলেমেয়েদের জীবনে মায়ের একটি অদ্বিতীয়, অতুলনীয় এবং খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। মাতৃত্ব কোন ছোটখাটো বা অসন্তোষজনক কাজ নয়। গর্ভধাণের সময়ে মা হিসাবে শিশুকে তার জঠরে ধারণ করা এবং শৈশবে একজন মা হিসাবে শিশুকে খাওয়ানো ও তার যত্ন করার মধ্য দিয়ে মা শিশুর সারা জীবনব্যাপী একটি চলমান ভূমিকা পালন করে থাকেন। আবার যখন তারা বয়ঃসন্ধিকালে, কিশোর-কিশোরীতে ও যুবক-যুবতীতে উপনীত হয়, এমনকি তারাও যখন তাদের নিজেদের সন্তান সহ বয়ষ্ক হয়ে ওঠে তখনও মা তাদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। যখন মাতৃত্বের ভূমিকা অবশ্যই পরিবর্তীত ও আরও উন্নত হবে তখনও সন্তানদের প্রতি মায়েদের দেওয়া ভালবাসা, আদর-যত্ন, লালন-পালন ও উৎসাহদান কখনই থেমে যাওয়া উচিত নয়।

    পরিচিতদেরকে জানাতে শেয়ার করুন

    আপনার জন্য আরো কিছু পোস্ট

    RELATED ARTICLES

      ADS