স্তিফান ইস্রায়েলের ইতিহাস

ads20

     লোকেরা দলে দলে এসে যীশুর শিষ্যদের কথা শুনতে লাগল। তারা সুস্থ হবার জন্য তাদের অসুস্থ লোকদেরও তাদের কাছে নিয়ে আসতে লাগল। তাদের মধ্যে অনেকেই যীশুকে বিশ্বাস করে খ্রীষ্টান হল। তারা তাদের বিষয়-সম্পত্তি বিক্রি করে এক জায়গায় রাখত এবং সবাই নিজেদের প্রয়োজন অনুসারে তা ব্যবহার করত। সকলে যেন প্রয়োজন অনুসারে ভাগ পায় তা দেখাশুনার কাজটা ছিল তখন খুবই কঠিন।

    তাই যীশুর শিষ্যরা সাতজন লোককে বেছে নিলেন যেন তারা এই বিষয়ে সাহায্য করে। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন স্তিফান। তিনি সত্যি ঈশ্বরের উপরে নির্ভর করতেন। কিন্তু স্তিফানের শত্রুরা লোকদের ঘুষ দিল যেন তার বিরুদ্ধে কঠিন দোষ দিতে পারে। তারা বলল, ‘আমরা তাকে ঈশ্বর ও মোশির বিরুদ্ধে কথা বলতে শুনেছি।’

    স্তিফানকে যিহূদীদের মহাসভার সামনে বিচারের জন্য আনা হল। স্তিফান ইস্রায়েলের ইতিহাস সম্বন্ধে- অব্রাহাম, যাকোব ও যোষেফ সম্বন্ধে কথা বললেন। তিনি মোশির ইতিহাস ও কেমন করে ইস্রায়েলীয়েরা ঈশ্বরের অবাধ্য হয়েছে তা বললেন।

    তিনি বললেন, ‘সেই মরুভূমি থেকে শুরু করে আজও পর্যন্ত আপনারা ঈশ্বরের সুখবর শুনতে অস্বীকার করে আসছেন। আর এখন আপনারা ঈশ্বরের পুত্রকে হত্যা করেছেন।’ স্তিফান উপরের দিকে তাকালেন। তার চোখ দু’টো উজ্জ্বল হল। তিনি বললেন, ‘আমি এখন যীশুকে দেখতে পাচ্ছি, তিনি ঈশ্বরের পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছেন!’

    মহাসভার লোকেরা এই কথা সইতে পারল না। তারা স্তিফানের কাছে দৌড়ে গিয়ে তাকে টেনে-হিঁচড়ে শহরের বাইরে নিয়ে গেল। এরপর তারা তাকে পাথর মারতে লাগল।

    স্তিফান চিৎকার করে বলে উঠলেন, ‘প্রভু যীশু, এদের পাপ ধরো না।’ তারপর তিনি মারা গেলেন।

    সেই সময় পৌল নামে এক যুবক সেখানে দাঁড়িয়ে এসব দেখছিল। সে কোন পাথর ছুড়ে মারে নি কিন্তু লোকেরা যা করছিল সে তাতে সায় দিচ্ছিল। আর যারা খ্রীষ্টের উপর বিশ্বাস করে তাদের সকলকেই এভাবে অত্যাচার করবে বলে তারা সিদ্ধান্ত নিল।

    পৌল ছিল একজন ফরীশী। সে আইন-কানুন নিয়ে বেশ গর্ব করত। যদিও সে অনেক দূর দেশ তর্শীশে জন্মেছিল, কিন্তু সে যিরূশালেমের সবচেয়ে নাম করা শিক্ষকের কাছে পড়া লেখা শিখেছিল।

    স্তিফানের মৃত্যুর পরে পৌল খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের ধরবার জন্য বাড়ী বাড়ী তল্লাশী শুরু করে। তাদের অনেককে ধরে সে জেলে দিল। অন্যেরা তার ভয়ে সেই শহর থেকে পালিয়ে গেল।

    ফিলিপ শমরিয়া এলাকার লোকদেরকে যীশুর কথা বলতে শুরু করলেন। একদিন ঈশ্বর তাকে গাজা গ্রামের একটি রাস্তায় পাঠালেন। সেখানে একটি উটের দল ধীরে ধীরে তার দিকে আসছিল। সেখানে ইথিওপিয়ার রাণীর একজন কর্মচারী সেই উটের পিঠে বসেছিল। সে একটি বই থেকে জোরে জোরে পড়ছিল।

    ঐ লোকটি যা পড়ছিল ফিলিপ তা জানতেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনি যা পড়ছেন তা কি আপনি বুঝতে পারছেন?’ 

    উত্তরে লোকটি বলল, ‘কেউ বুঝিয়ে না দিলে আমি তা কেমন করে বুঝব?’ সে ফিলিপকে তার কাছে নিয়ে বসাল। সে যিশাইয়ের বই থেকে একটি অংশ পড়ছিল। এই অংশ থেকে যীশু অনেক বার তাঁর শিষ্যদের শিক্ষা দিয়েছেন। এই অংশে যীশুর মৃত্যুর বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী লেখা আছে। তাই ফিলিপ সেখানে যীশুর সুখবর তাকে বুঝিয়ে বললেন। সে তখনই যীশুকে বিশ্বাস করে গ্রহণ করল। আর তখনই ফিলিপ তাকে পথের পাশের একটি পুকুরে বাপ্তিস্ম দিলেন। সেখান থেকে সে আবার পথ চলতে লাগল। এখন সে একজন সুখী মানুষ। প্রেরিত ৬-৮


    পরিচিতদেরকে জানাতে শেয়ার করুন

    আপনার জন্য আরো কিছু পোস্ট

    RELATED ARTICLES

      ADS