একটি খ্রিস্টিয় বৈবাহিক জীবন

ads20
     আপনার জন্য প্রশ্নঃ খ্রিস্টিয়ান বিবাহ বলতে কি বোঝায়?
     একটি খ্রিস্টীয় বিবাহ হল সেই বিবাহ যা বাইবেলের নীতি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং কার্যকরী হয়েছে। এই বিবাহ একজন পুরুষ ও একজন মহিলার মধ্যে হয় (আদিপুস্তক ২:২৪, মথি ১৯: ৪,৫)। একটি পরিবারে একাধিক স্বামী বা স্ত্রী বিয়ে করার কোন বিধান নেই। বাইবেলের নীতি অনুযায়ী একজন স্ত্রী দুজন স্বামী বা একজন স্বামী দুজন স্ত্রীলোককে নিয়ে করা উপায় নেই। একটি খ্রিস্টীয় বিবাহ একজন পুরুষ এবং একজন মহিলার সারা জীবনের জন্য একটি চুক্তি।
    ১. একটি খ্রিস্টান বিয়ে একে অপরের প্রতি সারা জীবন বিশ্বস্ত থাকার বিষয়ে প্রথমে ঈশ্বরের সাথে একটি অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে শুরু হয়। মালাখি ২:১৪ পদ বলে যে, —… সদাপ্রভু তোমাদের প্রত্যেক লোকের ও তার যৌবনকালের স্ত্রীর বিয়ের সাক্ষী হয়েছিলেন। হিতোপদেশ ২:১৭ পদে ব্যভিচার সম্পর্কে বলে —সে তার যৌবনকালের স্বামীকে ছেড়ে দিয়েছে আর তার ঈশ্বরের স্থাপন করা ব্যবস্থা অমান্য করেছে’। এখানে চুক্তি শব্দটি দ্বারা তার বিয়ে বোঝানো হয়েছে। এই পদ দেখায় যে বিবাহ ঈশ্বরের সামনে একটি চুক্তি।
    ২.অন্য মানুষদের সামনেও তাদের একটি প্রতিশ্রুতি থাকা প্রয়োজন, যাতে সমাজ বিবাহিত দম্পতি হিসেবে তাদের সমাজে প্রতিষ্ঠা দান করতে পারে। এই ভাবে সেই দম্পতি একে অপরের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হবে এবং সমাজ সাক্ষী হিসেবে ভুমিকা পালন করবে। যিশু যখন শমরিয়াতে সেই স্ত্রীলোকের সঙ্গে কথা বলেছিলেন, তখন তিনি বলেছিলেন: ‘কারণ এর মধ্যেই তোমার পাঁচজন স্বামী হয়ে গেছে, আর এখন যে তোমার সংগে আছে সে তোমার স্বামী নয়।’ (যোহন ৪:১৮)। এই মহিলা একজন পুরুষের সাথে তখন বসবাস করছিলেন, কিন্তু তিনি তার স্বামী ছিলেন না কারণ সেই লোকের সাথে সামাজিকভাবে কোন প্রতিশ্রুতি ছিল না, তাই যীশু খ্রিস্ট তাদেরকে অবিবাহিত হিসেবে দেখেছিলেন।
    ৩. এটি সাধারণত যৌনসম্পর্ক দ্বারা সৃষ্ট হয় (আদিপুস্তক ২:২৪; মথি ১৯: ৪,৫) (যদি না অক্ষমতা বা অন্য কোন পরিস্থিতিতে যৌন সম্পর্ক স্থাপন থেকে দম্পতিকে বাধা দেয়)। যৌন সংসর্গ শুধুমাত্র একটি বিবাহের চুক্তি সম্পাদিত সম্পর্কের মধ্যে সংগঠিত হওয়া উচিত। বিয়ের বাইরে যৌন সম্পর্ক ব্যভিচার এবং অনৈতিক (ইব্রীয় ১৩: ৪)।
    ৪. খ্রিস্ট এবং মণ্ডলীর মধ্যে যে সম্পর্ক একটি খ্রিস্টীয় বিবাহও সেই সম্পর্কের মতো (ইফিষীয় ৫:৩২)। খ্রীষ্ট যেমন মণ্ডলীর জন্য নিজেকে দিয়েছেন; অনুরূপভাবে, স্বামীরা তাদের স্ত্রীদের জন্য নিজেদেরকে দিয়ে দিবে এবং তাদের নিজেদের দেহের মত প্রেম করবে (ইফিষীয় ৫: ২৫-২৯)। তোমরা যারা স্ত্রী, প্রভুর প্রতি বাধ্যতার চিহ্ন হিসাবে তোমরা নিজের নিজের স্বামীর অধীনতা মেনে নাও, কারণ খ্রীষ্ট যেমন মণ্ডলীর, অর্থাৎ তাঁর দেহের মাথা, স্বামীও তেমনি স্ত্রীর মাথা (২২-২৪ পদ)। খ্রিস্টীয় বিয়েতে স্বার্থপরতার কোন জায়গা নেই। সেখানে দম্পতির একে অপরকে সম্মান করতে শিক্ষা দেওয়া হয় (১ পিতর ৩: ২৭)। খ্রিস্টীয় বিয়ে খ্রিস্ট এবং মণ্ডলীর মধ্যে সম্পর্ককে প্রতিফলিত করে। যেখানে পারস্পরিক প্রেম, বিশ্বস্ততা এবং উভয় পক্ষের একটি সেবার মনোভাব বিদ্যমান থাকবে।
    অবশ্যই, আমরা একটি কলষিত বিশ্বে বসবাস করছি এবং খ্রিস্টানরাও প্রায়ই তাদের বিবাহিত জীবনে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করে। কিন্তু সব সমস্যা সত্ত্বেও, একটি খ্রিস্টীয় বিয়েতে দুজন সঙ্গি তাদের সম্পর্কের মধ্যদিয়ে খ্রিস্টের ছবিকে প্রকাশ করে। এর মানে হল যে তারা একে অপরের ক্ষমা করার জন্য প্রস্তুত সাথে সাথে, তারা ঈশ্বরের এবং তাঁর বাক্যের প্রতি আজ্ঞাবহ হতে ইচ্ছুক। যা তাদেরকে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও একে অন্যের প্রতি বিশ্বস্ত থাকার বিষয়ে শিক্ষা দেয়। এর মানে হল যে দম্পতি তাদের সম্পর্কের মধ্য দিয়ে ঈশ্বরকে সম্মান করবে। যখন আমরা তাঁর কাছে চাইব তিনি আমাদের তা করার জন্য দয়া করবেন (ইব্রীয় ৪: ১৪-১৬)।

    পরিচিতদেরকে জানাতে শেয়ার করুন

    আপনার জন্য আরো কিছু পোস্ট

    RELATED ARTICLES

      ADS