যাত্রাপুস্তক তার ২০:৩ পদে ঈশ্বর ইস্রাইল জাতিকে বলেছেন: “আমার জায়গায় কোন দেবতাকে দাঁড় করাবে না।“ এর অর্থ হল: আপনার জীবনে ঈশ্বরের ধার্মিকতার স্থানে অন্য কোন কিছুর জায়গা হতে পারে না যেঁটা ঈশ্বরের প্রাপ্য:আপনার সম্পূর্ণ ধ্যান এবং ভালবাসা তার জন্য। ঈশ্বরের স্থানে অন্য কিছুকে বসাবেন না যেমন আপনার ঘর, গাড়ি, স্ত্রী অথবা আপানর পেশা। একমাত্র ঈশ্বরই আমাদের সৃষ্টিকর্তা, সৃষ্টির কিছুই সেই জায়গা নিতে পারে না।
আমি এই আদেশটিকে প্রাথমিক হিসেবে ধরছি যা মানুষের হৃদয় সম্বোধন করে।তারা এবং আমরা যেকোনো কিছুকে ঈশ্বর হিসেবে বানাতে পারি না, আমাদের প্রকৃত ঈশ্বরকে বাদ দিয়ে যার সামনে আমরা আরাধনা করব। যিশাইয় তাঁর ৪৪ অধ্যায়ে পরিস্কারভাবে মূর্তিপূজাকে বোকামি বলা হয়েছে যেখানে প্রকৃত ঈশ্বর রয়েছেন। আপনি কিভাবে আশা করেন যে একটা মৃত কাঠের টুকরা আপনাকে রক্ষা করবে? (যিশাইয় ৪৪:১৬, ১৭)। মূর্তি সম্পূর্ণ অর্থহীন। সদাপ্রভু ব্যতিরেকে আর কোন ঈশ্বর নেই যিনি স্বর্গ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং তার মধ্যেকার সমস্ত কিছু তৈরি করেছেন।
১ বংশাবলি ১৬:২৫ অনুসারে: —সদাপ্রভুই মহান এবং সবার উপরে প্রশংসার যোগ্য; সব দেব–দেবতার চেয়ে তিনি বেশী ভয় জাগান।‘ এটার মানে কি ঈশ্বর ছাড়াও আরও ঈশ্বর আছে? পরবর্তী পদটিতে পরিস্কার উত্তর রয়েছে: —বিভিন্ন জাতির দেব–দেবতারা অসার মাত্র, কিন্তু সদাপ্রভু মহাকাশের সৃষ্টিকর্তা‘ (২৬ পদ)। অন্য কথায়, ঈশ্বরই একমাত্র প্রভু যিনি স্বর্গের সৃষ্টিকর্তা; অন্যান্য ঈশ্বরেরা অসার এবং তাদের সৃষ্টি বা রক্ষা করবার ক্ষমতা নেই।
—যাহোক, নতুন নিয়মে সাধু পৌল কথা বলেছেন, আমাদের যুদ্ধ এই দুনিয়ার মন্দ জগত ও অন্ধকার রাজ্যের সব শাসনকর্তা ও ক্ষমতার অধিকারীদের বিরুদ্ধে, অন্ধকার জগতের শক্তিশালী আত্মাদের বিরুদ্ধে, আর আকাশের সমস্ত মন্দ আত্মাদের বিরুদ্ধে‘ (ইফিষীয় ৬:১২)। এটা পরিষ্কার যে এই পৃথিবীতে ঈশ্বর ছাড়াও দৈব উপস্থিতি এবং বাহিনী রয়েছে এবং তাদের কিছু শক্তিও রয়েছে। এই উপস্থিতই শয়তান এবং তার সাহায্যকারীদের বোঝায়, মন্দশক্তি। শয়তানকে যীশু খ্রিস্ট এই —জগতের কর্তা‘ বলে সম্বোধন করেছেন (যোহন ১২:৩১)। —জগতের কর্তা‘ কথাটাই শুধু বলা হয়নি, ৩১ পদের শেষে দেখুন, এখানে কিন্তু তার হাতে কিছু ক্ষমতাও দেওয়া হয়েছে। যারা যীশুকে জানেনা এবং অন্যান্য ধর্ম পালন করে, তারা প্রায়ই শয়তান এবং তার মন্দ শক্তির বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে পরে। এই কারণে পৌল বিশ্বাসীদের এই অদৃশ্য শক্তি এবং ক্ষমতার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ভাল সশস্ত্র হয়ে প্রস্তুত থাকতে বলেছেন। এমনকি এই ‘ক্ষমতাও‘ ঈশ্বর দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল। এ কারণেই তাদের পূজা করা উচিত নয়, কারণ ঈশ্বর আমাদের এমন কোন কিছু পূজা করতে অনুমতি দেন না যা তাঁর দ্বারা সৃষ্ট(যাত্রাপুস্তক ২০: ৪,৫)।
যখন একজন ব্যক্তি যীশু খ্রিস্টকে অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত নেয়, তখন মূর্তিপূজা বিষয়ক তার মানসিকতাকে দূরে ফেলে দিতে হবে। তাদের কাছে যে মূর্তিগুলো আছে সেগুলো মাত্র মৃত বস্তু, কিন্তু তথাপি এই মূর্তিগুলোর দ্বারা মন্দ শক্তির বাহিনী তার মালিকের জীবনে একটা অভ্যাস সৃষ্টি করতে পারে। অনুরূপভাবে,একজনের তাবিজ–কবজ বা মূর্তি নাও থাকে, তবুও তার হৃদয় জুড়ে এমন কিছু থাকতে পারে যা শুধুমাত্র ঈশ্বরকে দখল করা উচিত।
—তোমরা প্রত্যেকে তোমাদের সমস্ত অন্তর, সমস্ত প্রাণ ও সমস্ত শক্তি দিয়ে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভালবাসবে‘ (দ্বিতীয় বিবরণ ৬:৫)।